বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: এক মাসও বাকি নেই নির্বাচনের। অথচ দলের অন্দরের অসন্তোষে প্রতিনিয়ত ক্ষতবিক্ষত হতে হচ্ছে কর্ণাটকের শাসক বিজেপিকে। বিধানসভা নির্বাচনের জন্য বিজেপির দু’দফার প্রার্থীতালিকা প্রকাশ হতেই একের পর এক বিধায়ক থেকে শুরু করে প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রীদের দল ছাড়ার হিড়িক পড়েছে। বিজেপি থেকে কংগ্রেসের দিকে পা বাড়ানোর প্রবণতাই বেশি দেখা গিয়েছে। এবার সে রাজ্যের পরিচিত মুখ বিজেপির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তথা কর্ণাটক বিধান পরিষদের সদস্য লক্ষ্মণ সাভাদি শুক্রবার কংগ্রেসে যোগদান করেছেন।
এদিকে সাভাদির কংগ্রেসে যোগদান নিয়ে মন্তব্য করেছেন খোদ কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী। একটি আঞ্চলিক সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সোনিয়া (Sonia Gandhi) বলেছেন, “২০২৩ সালে বিজেপিকে আমরা অনেক ধাক্কা দেব, এটা তার মধ্যে একটা।” যদিও কংগ্রেসের বাড়া ভাতে ছাই দিতে পারে শরদ পওয়ারের ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টি (এনসিপি)। সূত্রের খবর, কর্ণাটকে ৪০-৪৫টি আসনে আলাদা লড়ার কথা ভাবছে পওয়ারের (Sharad Pawar) দল। সেক্ষেত্রে বিরোধী ভোটের সমীকরণ বদলে যাবে। আবার বিজেপি-কংগ্রেস থেকে অনেক নেতা তাঁদের দলে যোগ দিতে পারেন বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, জেডি (এস) নেতা এইচ ডি কুমারস্বামী।
টিকিট না পেয়ে আগেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন সাভাদি। তাঁকে বোঝাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশী-সহ অনেকেই কথা বলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাতে পাত্তা না দিয়ে শুক্রবারই বিধান পরিষদের সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ডিকে শিবকুমার ও বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সিদ্দারামাইয়ার সঙ্গে দেখা করেন তিনি। পরে আনুষ্ঠানিকভাবে কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেছেন, “আমি মারা যাওয়ার পরেও যেন আমার দেহ বিজেপির দপ্তরের সামনে দিয়ে নিয়ে যাওয়া না হয়।”
সাভাদি যে তাঁর পছন্দের আসন আথানি থেকে কংগ্রেসের টিকিটে লড়বেন, তা জানিয়ে দিয়েছেন সিদ্দারামাইয়া। লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের একটি অংশের নেতা সাভাদি। রাজ্য রাজনীতিতে লিঙ্গায়েত ভোটের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। একদিকে যেমন সাভাদির যোগদান কংগ্রেসের জন্য সুখবর বয়ে এনেছে, তেমনই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এনসিপি। শোনা যাচ্ছে, আসন্ন কর্ণাটক ভোটে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনসিপি। কর্ণাটকে প্রচুর মারাঠি বসবাস করেন। স্বাভাবিকভাবেই এনসিপি সেখানে প্রার্থী দিলে কংগ্রেসের ভোট ভাগ হয়ে যেতে পারে। চতুর্মুখী লড়াইয়ে কংগ্রেসের কর্ণাটকে ক্ষমতায় ফেরার স্বপ্ন ধাক্কা খাবে। যার প্রভাব পড়বে জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী বৃহত্তর জোটেও।
গত সপ্তাহেই আদানি প্রসঙ্গেও এনসিপির সঙ্গে কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধীদের মতভেদ প্রকাশ্যে চলে আসে। বিরোধীরা যখন যৌথ সংসদীয় কমিটি গঠন করে আদানি কাণ্ডের তদন্তের দাবিতে অনড়, পওয়ার দাবি করেন, আদালতের নজরদারিতে তদন্তে আস্থা রাখা হোক। সেই সময় বিরোধী ঐক্যে ফাটল দেখা গিয়েছিল। কর্ণাটকে লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে সেই বিরোধী-দ্বন্দ্বের জল্পনা উসকে দিলেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.