স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি : ফের মাথা চাড়া দিচ্ছে খলিস্তানি (Khalistan) আন্দোলন। সোমবার অপারেশন ব্লু স্টার-এর ৩৮তম বার্ষিকীতে অমৃতসরের স্বর্ণমন্দিরের বাইরে উঠল খলিস্তানি স্লোগান। খলিস্তানি নেতা জার্নেল ভিন্দ্রানওয়ালের ছবি তুলে ধরে চলল বিক্ষোভ। উঠল শিখ বন্দিদের মুক্তির দাবিও। এদিকে, সেখানেই অকাল তখত-এর প্রধান জিয়ানি হরপীত সিং শিখদের অস্ত্র প্রশিক্ষণের ডাক দিয়ে বিতর্ক বাধিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, নিজেদের নিরাপত্তার জন্যই শিখদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রয়োজন। সম্প্রতি পাঞ্জাবে শিখ পপস্টার সিধু মুসেওয়ালা (Sidhu Musewala) হত্যাকাণ্ডের প্রেক্ষিতে তাঁর এই মন্তব্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। স্বর্ণমন্দিরের (Golden Temple) প্রবেশদ্বার দরবার সাহিবের সামনে ওই বিক্ষোভ অনুষ্ঠানে প্রাক্তন সাংসদ সিমরনজিৎ সিং মানের নেতৃত্বে শিরোমনি অকালি দল (অমৃতসর)-এর সমর্থকরাও খলিস্তান-পন্থী স্লোগান তোলে।
গতমাসেই রাতের অন্ধকারে হিমাচলপ্রদেশের বিধানসভা ভবনের বাইরে খলিস্তানি পোস্টার ও পতাকা ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায়। এরমধ্যেই সাম্প্রতিককালে পাঞ্জাবে (Punjab) কয়েকটি নাশকতার ঘটাতেও খলিস্তানিদের নাম জড়িয়েছে। এরমধ্যেই অপারেশন ব্লু স্টারের বর্ষপূর্তিতে অকাল তখত প্রধানের অস্ত্র প্রশিক্ষণের আহ্বান কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশভাগের সময় শিখ সম্প্রদায়ের একাংশ পৃথক রাজ্য খালিস্তানের দাবি তোলে। সার্বভৌম রাষ্ট্রের দাবিতে আন্দোলন হয়। তৎকালীন সরকার শিখদের দাবিকে মান্যতা দেয়নি। কিন্তু এরপর জার্নেল ভিন্দ্রাওয়ালের নেতৃত্বে আন্দোলন সংগঠিত হয়। ১৯৮৪ সালের ১ থেকে ১০ জুন ভিন্দ্রানওয়াল এবং তাঁর সঙ্গীদের নির্মূল করতে স্বর্ণমন্দিরে ভারতীয় সেনা অভিযান চালায়। মৃত্যু হয় ভিন্দ্রানওয়ালের। সেই অভিযানের নাম ছিল অপারেশ ব্লু স্টার (Operation Blue Star)। তবে এবারই প্রথম নয়, গতবছরও স্বর্ণমন্দিরে সেনা অভিযানের ৩৭তম বর্ষপূর্তিতেও স্বর্ণমন্দিরের বাইরে খলিস্তানি স্লোগান দেওয়া হয়। উড়েছিল খলিস্তানি পতাকা।
পাঞ্জাবের দরবার সাহিবে অকাল তখতের সদর দফতর। যে পাঁচ আসন শিখ সম্প্রদায়ের অভিভাবক বলে মনে করা হয়, তার অন্যতম হল অকাল তখত। এদিন অকাল তখতের নেতা শুধু শিখদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ নেওয়ার কথা বলেই তিনি থামেননি। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন শিখদের উচিত অস্ত্র চালানো প্রশিক্ষণ দেয়ার স্কুল খোলার। তাঁর বক্তব্য, “কোনওদিনই শিখরা কোনও স্বাধীনতা পায়নি। তাঁদের সব সময় দমিয়ে রাখা হয়েছে। শিখদের রাজনৈতিক ভাবে, সামাজিক ভাবে এবং অর্থনৈতিক ভাবে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। সে কারণেই ধর্মীয় ভাবে শিখদের শক্তিশালী হওয়া জরুরি।”
শিখদের উপর অপরাধ বাড়ছে দাবি করে তিনি বলেন, সব ধর্মেই বলা হয়েছে তাদের সম্প্রদায়ে মানুষকে রক্ষা করার। কাজেই শিখদের উচিত অস্ত্রপ্রশিক্ষণ নোওয়া। উল্লেখ্য কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক অকাল তখতের প্রধানকে ‘জেড’ ক্যাটাগোরির নিরাপত্তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। কিন্তু তিনি কেন্দ্রের সেই নিরাপত্তা নেননি। অপারেশন ব্লু স্টারের ৩৮ তম বার্ষিকীতে ভিন্দ্রাওয়ালের ছবি হাতে বিক্ষোভ বুঝিয়ে দিল খলিস্তানিরা এখনও সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.