সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রের দেওয়া সম্মান ফিরিয়ে দিলেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এ কে সিকরি। কমনওয়েলথ গোষ্ঠীভুক্ত দেশের সেক্রেটারিয়েট আরবিট্রাল ট্রাইবুনালের সদস্য এবং সম্ভাব্য সভাপতি হিসাবে নিযুক্ত করার জন্য বিচারপতি সিকরিকে মনোনীত করে পাঠায় কেন্দ্র। লন্ডনভিত্তিক ওই সংস্থায় কেন্দ্রের পক্ষ থেকে তাঁর নাম সুপারিশ করা হয়।
৬ মার্চ বিচারপতি পদ থেকে অবসর নেওয়ার পরই তাঁর ওই আন্তর্জাতিক বিচারসংস্থার শীর্ষ পদে নিয়োগ করার বিষয়টি প্রায় চূড়ান্ত হয়েছিল। কিন্তু স্বয়ং সিকরিই তাঁর এ ব্যাপারে সরকারকে সম্মতি জানাতে অস্বীকার করেছেন। তিনি প্রথমে কেন্দ্রের এই প্রস্তাব পত্রপাঠ ফিরিয়ে দেন। সিবিআইয়ের ডিরেক্টর পদ থেকে অলোক ভার্মাকে সরাতে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন। সুপ্রিম কোর্ট অলোক ভার্মাকে সিবিআই প্রধান পদে পুনর্বহাল করেছিল। পরে তিন সদস্যের সিলেক্ট প্যানেল সিবিআই প্রধান অলোক ভার্মার কাজের ভাগ্য নির্ধারণ করে। সেখানে অলোক ভার্মাকে বহাল রাখার পক্ষে মত দেন বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সাংসদ মল্লিকার্জুন খাড়গে। বিরোধিতা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু অলোক ভার্মার অপসারণের পক্ষে মত দিয়ে নির্ণায়ক ভোটটি দেন সিলেক্ট প্যানেলের তৃতীয় সদস্য বিচারপতি এ কে সিকরি।
তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সহমত হয়ে ভার্মাকে সরাতে সায় দেন। ফলে বিরোধীদের নৈতিক পরাজয় হয়। কারণ, ভার্মাকে সরানোর ইস্যুটি ছিল সরকার পক্ষ তথা শাসক দল বিজেপির কাছে প্রেস্টিজ ফাইট। ভার্মাকে সরিয়ে সিবিআইয়ের অন্দরমহলের নিয়ন্ত্রণ হাতে নেয় সরকার। এই কাজে সরকারকে সাহায্য করে বিচারপতির সিকরির সিদ্ধান্ত। এই লড়াইয়ে সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে সায় দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্ণায়ক ভূমিকা নেন তিনি। ফলে সিকরিকে কমনওয়েলথের এই সম্মানজনক পদে মনোনয়ন দিয়ে তাঁর ‘কাজের’ পুরস্কার দিল সরকার। আসলে সরকারের প্রতি আনুগত্যের পুরস্কার পেলেন তিনি। কিন্তু বিতর্ক শুরু হতে দ্রুত পিছু হটেন বিচারপতি সিকরি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সরকারের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। মনে করা হচ্ছে, ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতে এবং বিতর্ক এড়াতেই তিনি সরকারের প্রস্তাব সবিনয়ে প্রত্যাখ্যান করলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.