Advertisement
Advertisement

Breaking News

AIIMS

উত্তরকাশীর ৪১ শ্রমিকই সুস্থ, সুখবর দিল AIIMS

স্বাস্থ্য পরীক্ষা হলেই ঘরে ফিরবেন শ্রমিকরা।

AIIMS Doctor Said, All 41 workers in Uttarkashi are healthy | Sangbad Pratidin
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:November 30, 2023 8:53 am
  • Updated:November 30, 2023 10:03 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৪০০ ঘণ্টার অগ্নিপরীক্ষা। টানা ১৭ দিনের সংগ্রাম। শরীরের থেকেও মনের লড়াই ছিল বেশি কঠিন। কিন্তু সেই অসম্ভবকেই সম্ভব করে দেখিয়েছেন ওঁরা। মানে উত্তরকাশীর (Uttarkashi) সিল্কিয়ারা-বারকোট নির্মীয়মাণ সুড়ঙ্গের আঁধারে দু’সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে আটকে থাকার পর অবশেষে মঙ্গল-সন্ধ‌্যায় মুক্তি পাওয়া ৪১ জন শ্রমিক। কার্যত মৃত্যুকে চোখের সামনে দেখেও এক মুহূর্তের জন‌্যও হারাননি ধৈর্য‌্য কিংবা উদ্ধারের আশা। ঠিক কতটা ইস্পাতকঠিন ছিল তাঁদের নার্ভ, তার পরিচয় মিলল উদ্ধার-পরবর্তী মেডিক‌্যাল চেক আপেও। প্রত্যেক শ্রমিক সুস্থ, স্বাভাবিক আছেন বলে বুধবার জানিয়ে দিলেন হৃষিকেশের এইমস-এর (AIIMS) এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মীনু সিং। কারণ মেডিক‌্যাল পরীক্ষার ফল সেটাই বলছে।

মঙ্গলবার উদ্ধারের পরই শ্রমিকদের একে একে পাঠানো হয়েছিল অস্থায়ী মেডিক‌্যাল ক‌্যাম্পে। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সেখান থেকে তাঁদের গ্রিন করিডর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ৩০ কিলোমিটার দূরত্বে চিনিয়ালিসৌরের হাসপাতালে। এর পর শ্রমিকদের চিনুক কপ্টারের মাধ‌্যমে এয়ারলিফট করে নিয়ে যাওয়া হয় হৃষিকেশের অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিক‌্যাল সায়েন্সেস-এ (এইমস)। সেখানে তাঁদের রক্তচাপ, অক্সিজেনেশন, শরীরে জলের ভারসাম‌্য, বুকের এক্স-রে প্রভৃতি আরও অন‌্যান‌্য জরুরি শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার ফল খতিয়ে দেখে এইমস-এর তরফে এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মীনু সিং জানান, পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট প্রকাশ্যে না এলেও শ্রমিকরা প্রত্যেকেই সুস্থ এবং স্থিতিশীল আছেন। তবে এর পর তাঁদের মানসিক স্বাস্থ্যেরও নিরীক্ষণ হবে বলে জানান তিনি।

Advertisement

 

[আরও পড়ুন: কাটল পাক যুবকের মোহ? আচমকা ভারতে ফিরলেন ‘পাকিস্তানি বধূ’ অঞ্জু]

বুধবার উত্তরাখণ্ডের মুখ‌্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি, চিনিয়ালিসৌরের হাসপাতালে শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করেন, তাঁদের শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবরও নেন। মুখ‌্যমন্ত্রী অবশ‌্য আগেই ঘোষণা করেছিলেন, শ্রমিকদের ১ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। পাশাপাশি ১৫ দিনের ছুটিও দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, মুখ‌্যমন্ত্রী ধামি এদিন সুড়ঙ্গে উদ্ধারকাজে নিযুক্ত ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ (আইটিবিপি) কর্মীদের সঙ্গেও দেখা করেন। পরে জানান, উদ্ধারকারীদের প্রত্যেককে ৫০,০০০ টাকা করে দেওয়া হবে।

তাৎপর্যপূর্ণভাবে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যখন চলছিল উত্তরকাশীর টানেলে বন্দি শ্রমিকদের উদ্ধারের একেবারে শেষ পর্যায়ের কাজ, তখন টিভিতে উদ্ধারকাজের সরাসরি সম্প্রচার দেখছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Narendra Modi)। সেই সময় মন্ত্রিসভার জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। বৈঠক চলাকালীনও তিনি বার বার উদ্ধারপর্বের খোঁজ নিচ্ছিলেন। মঙ্গলবার ৪১ জন শ্রমিক উদ্ধার হওয়ার খবর পেতেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন তিনি। এর কিছুক্ষণ পরেই রাতেই তিনি উদ্ধার হওয়া শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেন। শ্রমিকদের সঙ্গে ফোনালাপে প্রধানমন্ত্রী মোদি প্রথমেই তাঁদের অভিনন্দন জানান। তাঁদের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি খুব খুশি। যদি আপনাদের কোনও কিছু হয়ে যেত, তবে মনকে কীভাবে সামলাতাম, জানি না। কেদারনাথ-বদ্রীনাথ বাবার কৃপায় সব ঠিক হয়েছে। আপনারা একে অপরের শক্তি হয়ে উঠেছিলেন এই সতেরো দিনে। আমি নিয়মিত খোঁজ-খবর নিতাম। আপনারা সুস্থভাবে বেরিয়ে এসেছেন, এটাই সন্তুষ্টি।” ফোনের অপর প্রান্ত থেকে শ্রমিকরাও বলেন, “আমরা ১৭ দিন বন্দি ছিলাম সুড়ঙ্গে, তবুও একা মনে হয়নি। কারণ আমরা ৪১ জন ছিলাম, অনেকেই ভিন রাজ্যের। সকলে ভাইয়ের মতো থাকতাম, খাবার ভাগ করে খেতাম। সুড়ঙ্গের ভিতরেই আমরা হাঁটাহাঁটি করতাম, যোগাসন করতাম। উত্তরাখণ্ড সরকার ও মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামিকেও ধন্যবাদ। মুখ‌্যমন্ত্রী নিয়মিত আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। আশ্বাস দিয়েছিলেন, উদ্ধার করা হবেই। ভি কে সিং-ও ছিলেন।”

 

[আরও পড়ুন: দিল্লির আমলাদের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের হাতেই! মুখ্যসচিবের মেয়াদবৃদ্ধিতে সায় সুপ্রিম কোর্টের]

প্রধানমন্ত্রী জবাবে বলেন, “ভি কে সিংয়ের সেনায় যে প্রশিক্ষণ ছিল, সেটাই এক্ষেত্রে কাজে এসেছে।” তাৎপর্যপূর্ণভাবে, সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরও জানিয়েছেন, ‘‘যে মুহূর্তে একে একে সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসছিলেন নির্মাণকর্মীরা, সেই সময় আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন প্রধানমন্ত্রী। প্রথমদিন থেকেই উনি উদ্ধারকাজ সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ নিয়েছেন। নির্বাচনী প্রচারে থাকার সময়ও কখনও উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে, কখনও আবার পিএমও থেকে খবর নিয়েছেন।” অনুরাগের মতে, অতীতেও সংসদভবন, কাশী বিশ্বনাথ মন্দির থেকে শুরু করে কর্তব্যপথ তৈরি করা শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করে তঁাদের পা-ও ধুইয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ঠিক সেই রকমভাবেই উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিককে সুস্থভাবে উদ্ধার করতেও প্রধানমন্ত্রী উদ্বিগ্ন ছিলেন। উদ্ধারকাজ সফল হতে গোটা দেশের মতো তিনিও স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement