সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিছুদিন আগেই ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রকোপে তছনছ হয়ে গিয়েছিল ওড়িশা। উপকূলবর্তী জেলার পাশাপাশি গোটা ওড়িশাই কার্যত তছনছ হয়ে গিয়েছিল ভয়ংকর ঘূর্ণিঝড়ে। সময় পেরিয়েছে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়েছে কলিঙ্গ দেশের জনজীবন। কেন্দ্র তথা রাজ্য সরকারের উদ্যোগে আর্থিক সাহায্য পেয়েছেন আম নাগরিক। কিন্তু, এই ফণী প্রকৃতির যে অপূরণীয় ক্ষতি করে ফেলেছে তার কী হবে?
পরিসংখ্যান বলছে, ফণীর জেরে ওড়িশাজুড়ে অন্তত ২২ লক্ষ গাছ উপড়ে গিয়েছে। এর মধ্যে ১৪ লক্ষই নারকেল গাছ। প্রায় ৮ হাজার হেক্টর নারকেল বাগান নষ্ট হয়ে গিয়েছে ঘূর্ণির প্রকোপে। এর জেরে প্রকৃতির ভারসাম্য যে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হতে পারে তা বলাই বাহুল্য। সন্তোষের কথা হল, এই মারাত্মক ক্ষতির পরিমাণটা আন্দাজ করতে পেরেছে ওড়িশা সরকার। তাই, তাঁরা নিজেদের মতো করে উদ্যোগ নিয়েছে বৃক্ষরোপণের। নবীন পট্টনায়েক সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, ফণীর কবলে যে ২২ লক্ষ গাছ নষ্ট হয়েছে, তার পরিবর্তে সরকার অন্তত ৬ কোটি চারাগাছ রোপণের উদ্যোগ নিয়েছে। শুধু তাই নয়, আরও ৪ কোটি চারাগাছ সরকার বিলিয়ে দেবে আম নাগরিকের মধ্যে। তাঁদের উৎসাহিত করা হবে বৃক্ষরোপণে।
মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক জানিয়েছেন, ওড়িশার বনদপ্তর ৬ কোটি গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এই বর্ষার মধ্যেই আরও ৪ কোটি চারাগাছ দেওয়া হবে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং সাধারণ মানুষকে। তিন বড় শহর ভুবনেশ্বর, পুরী এবং কটকেই লাগানো হবে ৫ লক্ষ গাছ। যে এলাকাগুলি ফণীতে সবথেকে বেশি বিধ্বস্ত, সেই এলাকাগুলিতে লাগানো হবে ৮০ লক্ষ গাছ। প্রত্যেক স্কুলছাত্রকে অনুরোধ করা হয়েছে, অন্তত একটি করে চারাগাছ লাগাতে এবং তার যত্ন নিতে।
দেশের একপ্রান্তে খরার প্রকোপ। অন্যপ্রান্ত বন্যার জেরে বহু মানুষের প্রাণসংশয়। একদিকে, জলের অভাবে মাইলের পর মাইল ছুটছেন বাসিন্দারা। অন্যদিকে জলের তোড়ে ভেসে যাচ্ছে শ’য়ে শ’য়ে বাড়ি। মুম্বই এবং চেন্নাই দুই শহরের এই ছবি। কিন্তু, কেন এমন হচ্ছে? প্রশাসনের তরফে তো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলেই দাবি করা হচ্ছে। আসলে, এর পিছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক কারণ। বিজ্ঞান বলে, বন্য বা খরার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে দায়ী বৃক্ষছেদন। গাছের পরিমাণ কমে যাওয়ার ফলেই। এই পরিস্থিতিতে ওড়িশা সরকারের এই বৃক্ষরোপণ অভিযান নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.