সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ব্রিকস সম্মেলনের ফাঁকে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর উপর জোর দিচ্ছেন। অন্যদিকে, জাপানের সঙ্গে সামরিক সমঝোতাকে আরও দৃঢ় করতে ঝাঁপাল সাউথ ব্লক। জাপানের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক বরাবরই আদায় কাঁচকলায়। তাই চিনকে চাপে রাখতে বেজিংয়ের চিরশত্রু টোকিওর সঙ্গে আরও ‘বিশেষ সামরিক ও পারস্পরিক’ সম্পর্ক বাড়ানোর উপর গুরুত্ব দিচ্ছে নয়াদিল্লি।
দুই দেশের সামরিক সম্পর্ককে নয়া উচ্চতায় নিয়ে যেতে সম্প্রতি অরুণ জেটলি জাপান সফরে যান। নির্মলা সীতারমণের হাতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের ভার তুলে দেওয়ার আগে সেটাই ছিল জেটলির শেষ বিদেশ সফর। জাপানে নৌসেনা ঘাঁটি পরিদর্শনে যান জেটলি। খতিয়ে দেখেন জাপ যুদ্ধবিমানচালকদের প্রশিক্ষণ পদ্ধতি। আর তারপরেই দুই দেশ প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়, সন্ত্রাসদমনে আগামী বছর ব্যাপক যৌথ সামরিক মহড়া চালানো হবে। এমনটা বাস্তবে হলে, সেটাই হবে ভারত ও জাপানের মধ্যে প্রথম যৌথ সামরিক মহড়া। এর আগে ‘মালাবার ন্যাভাল এক্সারসাইজ’-এর সময় বঙ্গোপসাগরে আমেরিকা, জাপানের সঙ্গে ভারত নৌমহড়া চালালেও শুধু জাপানের সঙ্গে কখনও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মহড়ায় দেখা যায়নি ভারতীয় সেনাকে। এবার সেটাই ঘটতে চলেছে।
টোকিও চায়, জাপ নৌসেনার সর্বাধুনিক পি-১ অ্যান্টি সাবমেরিন ওয়ারফেয়ার এয়ারক্রাফট পরিচালনার প্রশিক্ষণ নিক ভারতীয় নৌসেনা। যাতে জলপথে যে কোনও বিদেশি শত্রুকে শুধু রুখে নয়, একেবারে নিকেশ করতে পারে নৌসেনা। জাপান চায়, দুই দেশই একসঙ্গে অ্যান্টি-সাবমেরিন ও অ্যান্টি-মিনি ওয়ারফেয়ারের মহড়ার প্রশিক্ষণ চালাক। এই সুযোগে ভারতের পি-৮ অ্যান্টি সাবমেরিন ( আমেরিকায় তৈরি) জেট জাপ বন্দরে ঘাঁটি গাড়তে পারে। এর পিছনে জাপানের স্বার্থও রয়েছে। চিনের তরফে ক্রমশ চাপ বাড়ছে জাপানের উপর। জাপানও চিনের নৌসেনার সঙ্গে পাল্লা দিতে ভারতের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। আন্তর্জাতিক আইন মেনে দুই দেশই চায় দক্ষিণ চিন সাগরে চিনের দাদাগিরি খর্ব হোক।
ভারত ও জাপানের এই উদ্দেশ্যে শামিল হয়েছে আমেরিকাও। চিনা নৌসেনার ব্যাপক প্রস্তুতিকে ‘হুমকি’ হিসাবে দেখছে তিন দেশই। আফ্রিকার জিবুতি বন্দরে নয়া ঘাঁটি গড়েছে বেজিং। চিনের এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ ভাল চোখে দেখছে না পেন্টাগন। ওদিকে, ডোকলাম সীমান্তে বেজিংয়ের গা জোয়ারি মানবে না বলে সাফ জানিয়েছে ভারতও। চিনকে পালটা দিতে জাপানের কাছ থেকে ইউএস-২ উভচর এয়ারক্রাফটও কিনছে ভারত। প্রথম দফায় ১৮টি ওইরকম এয়ারক্রাফট কেনা হবে। যা বঙ্গোপসাগর ও আরবসাগরে ভারতের একান্ত বাণিজ্যিক এলাকাকে সুরক্ষিত রাখতে ব্যবহৃত হবে। ওই জলপথে অন্তত ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ব্যবসা হয়। সবমিলিয়ে, চিনকে ঠান্ডা করতে নরমে-গরমে সবরকম পথই খোলা রাখছে সাউথ ব্লক।
Minister @arunjaitley laid wreath on arrival @ Japanese Ministry of Defence for Annual Ministerial Defence Meeting with Mr.Itsunori Onodera. pic.twitter.com/CmrCeTeBeL
— Sujan Chinoy (@SujanChinoy) September 5, 2017
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.