সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সেদিনের সকালটা আর পাঁচটা দিনের মতোই ছিল। দিল্লির মেট্রো স্টেশনে ভিড় ছিল রোজকার মতোই। তবে নজর ঘোরালে একটা ছবি চোখে পড়তই। কিন্তু চোখ খাকতেও সেদিন দেখতে চায়নি দিল্লি। ওই ভিড়ে এক মহিলা ছিলেন, সঙ্গে কোলে তাঁর সন্তান। আপাতদৃষ্টিতে এপর্যন্ত সবই স্বাভাবিক, তাই তো? কিন্তু, আসলে স্বাভাবিক ছিল না কিছুই।
[পাকিস্তানে সেনাঘাঁটি বানাচ্ছে চিন, পেন্টাগনের রিপোর্টে উদ্বেগ ]
নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, মে মাসের ২৯ তারিখ মধ্যরাতে গুরগাঁওয়ের মানেসরে চলন্ত অটোতে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন ওই মহিলা। স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে মাঝরাতেই খান্দসা রোডে নিজের বাপের বাড়ি চলে যেতে চেয়েছিলেন তিনি, সঙ্গে ছিল তাঁর ন’মাসের শিশু কন্যা। মানেসরের বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় একটি অটোকে দাঁড় করান। অটোয় আগেই তিনটি লোক বসে ছিল বলে তাঁর দাবি। অটোতে উঠতেই ওই তিন ব্যক্তি তাঁর শ্লীলতাহানি করতে শুরু করেন বলে এফআইআরে উল্লেখ করেছেন নির্যাতিতা। তাঁর সন্তানকে চুপ করাতে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়। শিশুটি ঘটনাস্থলেই মারা যায়। এই খবর সংবাদ শিরোনামে আসতেই ঘটনার ভয়াবহতায় কেঁপে উঠেছিল পুলিশ। কোনওরকমে সন্তানকে নিয়ে গুরগাঁওতে নিজের আত্মীয়ের বাড়িতে পৌঁছতে পেরেছিলেন তিনি। স্থানীয় চিকিৎসক শিশুটিকে পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে মানতে চাননি মা। মৃত শিশুকে কোলে নিয়েই তুঘলকাবাদে ফের অন্য চিকিৎসকের কাছে পৌঁছন তিনি। তিনিও শিশুটিকে পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এরপর হয়তো বিশ্বাস হয় মায়ের। গুরগাঁওতে ফের ফেরত আসেন তিনি। এবার পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে।
[শুধু পরকীয়া নয়, অনুপম খুনের নেপথ্যে অন্য স্বার্থ ছিল মনুয়ার ]
ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত অটো চালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর নির্যাতিতা বাড়ি থেকে বেরোনোর পরেই তাঁকে নিশানা করে সে। পরে দুই বন্রধুর সাথে মিলে এই নৃশংস কাজ করে। অটো চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি দুই অভিযুক্তের খোঁজ মিলবে বলে আশাবাদী পুলিশ। নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী তিনজনেরই স্কেচ প্রকাশ করা হয় এরআগে।
পুলিশ পরিবারটির পাশে আছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন এমজি রোড থানার তদন্তকারী আধিকারিক। কিন্তু ক্ষতে প্রলেপ পড়েনি, পড়ে না হয়তো। মেয়েকে হারিয়ে, নিজের সর্বস্ব খুইয়ে কোনও আশ্বাসেই আর আস্থা নেই ১৯ বছরের নির্যাতিতার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.