সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বয়স যখন মাত্র আট, তখন থেকেই পেটের টানে পথে নেমেছে মেয়ে৷ উদ্দেশ্য হল একটা কাজের সন্ধান৷ পাওয়া গেল কাজ৷ ছোট্ট মাথায় ইটের বোঝা চাপল৷ কিন্তু এরপরও ছোট্ট মীরার দু’চোখে বেঁচে রইল স্বপ্ন৷ আট বছর ধরে সংসারের খাতিরে ইট বয়ে চলা মেয়েটি অবশেষে রাঁচির নির্মলা কলেজ ফর গার্লস-এ পড়ার সুযোগ পেল৷ এই নির্মলা কলেজ ফর গার্লস রাঁচির অন্যতম ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির একটি৷
১৬ বছরের মীরা খোয়া গত আট বছর ধরে ইট বয়ে গেলেও বর্তমানে জীবনের কঠিন পরিস্থিতি অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে৷ মাত্র ১২ বছর বয়সেই বাবাকে হারিয়েছিল সে৷ এরপরই গোটা পরিবার চরম অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে পড়ে৷ সমস্যা মেটাতে কাজে নামে মীরার মা, দাদা এবং মীরা৷ শুরু হয় জীবনযুদ্ধ৷
কিন্তু এতকিছুর পরেও স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দেয়নি ছোট্ট মেয়েটি৷ অতি কষ্টের মধ্যেও লেখাপড়া চালিয়ে গিয়েছে৷ দশম শ্রেণির পরীক্ষায় ভাল ফল করার পরেও ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় কাটছিল না খোয়া পরিবারের এই কিশোরীর৷ কিন্তু এরপর কিছু দয়ালু ব্যক্তির আর্থিক সহায়তায় লেখাপড়া চালিয়ে যেতে সক্ষম হয় মীরা৷ আর তারই ফল হিসেবে রাঁচির অন্যতম ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজের জায়গা পাকা করে নিল সে৷
তার এই সাফল্যে স্বভাবতই খুশি তার পরিবার৷ পাশাপাশি মীরার কলেজের প্রধানশিক্ষিকা জ্যোতি কিসপোট্টা জানিয়েছেন, ‘মীরার এই সাফল্যে খুব খুশি৷ আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গর্বিত যে মীরা আমাদের কলেজে পড়ছে| খুব খুশি হব যদি ও আগামী দিনেও খুব ভাল ফলাফল করে এবং নিজের স্বপ্নকে সত্যি করে৷”
ইট বয়ে দিনযাপন করা মেয়েটি আজ রাঁচির অন্যতম সফল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রী৷ তার কেমন লাগছে? জানতে চাওয়া হলে মীরা জানায় ‘আমি খুব খুশি৷ সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই যাঁরা কঠিন সময়ে আমার পাশে ছিলেন৷ আমায় সাহায্য করেছিলেন৷’
ভবিষ্যতে পুলিশ হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এখন সামনে এগোচ্ছে কিশোরী!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.