সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ১০ দিন আগেই প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারকে (Shraddha Walkar) খুন করবে বলে ঠিক করেছিল অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালা (Aftab Amin Poonawala)। আবেগপ্রবণ শ্রদ্ধাকে দেখেই পরিকল্পনা বাতিল করেছিল সে। শেষ পর্যন্ত ১৮ মে প্রেমিকাকে গলা টিপে খুন করে। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল। কিন্তু ঠিক কোন কারণে শ্রদ্ধাকে আরও দশ দিন বাঁচতে দিয়েছিল আফতাব?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জেরায় আফতাব জানিয়েছে, যেদিন সে শ্রদ্ধাকে খুন করে তার অন্তত ১০ দিন আগে খুনের ছক কষেছিল। কিন্তু উভয়ই একে অপরের প্রতি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তাই সেদিন আর প্রেমিকাকে খুন করে উঠতে পারেনি আফতাব। ৮ মে আফতাব ও শ্রদ্ধার মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। সে দিনই প্রেমিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করবে বলে ঠিক করেছিল আফতাব। কিন্তু ঝগড়ার মধ্যেই শ্রদ্ধা হঠাৎ কাঁদতে শুরু করেন। পুলিশের কাছে আফতাব দাবি করেছে, প্রেমিকাকে কাঁদতে দেখে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে সে। এবং সেদিনের মতো খুনের পরিকল্পনা বাতিল করে।
যদিও দিন দশেক বাদে মরতে হয় শ্রদ্ধা ওয়াকরকে। খুনের পর দেহের ৩৫টি টুকরো করে আফতাব। এরপর দিল্লি শহরের বিভিন্ন জায়গায় তা ফেলতে থাকে। শ্রদ্ধার অপরাধ ছিল প্রেমিককে বিয়ের জন্য চাপ দেওয়া। অথচ আফতাবকে ভালবেসেই পরিবার, চাকরি, শহর ছেড়ে চলে এসেছিল দিল্লিতে। পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, গত মে মাসে শ্রদ্ধাকে খুনের পর তাঁর দেহাংশ নতুন কেনা ফ্রিজের ভিতরে রাখা ছিল। সেই সময় ওই ঘরে একাধিক বান্ধবীর সঙ্গে যৌনতায় মেতেছিল আফতাব।
আফতাবের এই নৃশংস চেহারা অবশ্য আড়ালে ছিল। সমাজমাধ্যমে একাধিক পোস্টে নিজেকে ‘উদার’ ও ‘নারীবাদী’ হিসেবে তুলে ধরত সে। বস্তুত প্রেমিকাকে নৃশংস হত্যার পরেই মুখোশ খুলে গেল ২৮ বছরের যুবকের। সব মিলিয়ে আফতাবের ব্যক্তিত্ব নিয়ে ধন্দ বেড়েই চলেছে। সে কি মানসিক ভাবে অসুস্থ? উত্তর পেতে এবার অভিযুক্তের নার্কো টেস্টের পরিকল্পনা করেছে দিল্লি পুলিশ। এবিষয়ে আদালতের অনুমতিও মিলেছে।
এদিকে মঙ্গলবার মেয়ের হত্যাকাণ্ড নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে সরাসরি ‘লাভ জিহাদ’-এর (Love Jihad) প্রসঙ্গ তোলেন শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ ওয়াকার। বলেন, এই খুনের নেপথ্যে লাভ জিহাদ থাকতে পারে। দিল্লি শহরের এই হত্যাকাণ্ডের (Delhi Murder Case) বর্বরতায় গোটা দেশে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। সকলেই নৃশংস খুনির চরম শাস্তির দাবি করেছেন। শ্রদ্ধার বাবাও আফতাবের মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.