সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা হিসেবে প্রথম ভাষণে অনেকের মন জয় করেছিলেন অধীররঞ্জন চৌধুরি। প্রথমদিনের ভাষণে শাসক-বিরোধী সমন্বয় নিয়ে অনেক কথাই বলেছিলেন অধীর। কিন্তু, সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের জবাবি ভাষণে সেই সুর দেখা গেল না। বরং এদিন মোদি তথা বিজেপির উদ্দেশে তিনি কটাক্ষ করলেন বেশ চড়া সুরেই।
কংগ্রেস দলনেতার বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভোটের আগে অনেক কথাই বলেছিলেন। কিন্তু, এখন দেখা যাচ্ছে, তিনি শুধু ইউপিএ জমানার প্রকল্পগুলির নাম বদলে নিজেদের নামে চালাচ্ছেন। এদিন সংসদে বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে জাতীয় পুরস্কার দেওয়ারও দাবি তোলেন অধীর। সেই সঙ্গে অভিনন্দনের ‘মুচ’ কে জাতীয় ‘মুচ’ ঘোষণারও দাবি জানান তিনি।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের পর ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে গিয়ে এদিন বিজেপি সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রতাপ সারেঙ্গি বলেন, “বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কখনওই প্রশংসা করে না। অথচ মোদি সরকার আসার আগে দেশে কোনও উন্নয়নই হয়নি।” সারেঙ্গির এই ভাষণের জবাব দিতে গিয়ে রীতিমতো ক্ষোভে ফেটে পড়েন বহরমপুরের সাংসদ। তিনি বললেন,”বিজেপি সাংসদরা ভাবেন সব কিছুতেই মোদি বাবা পার করেগা। যেন মোদির পুজো করলেই সব হয়। এই করতে গিয়ে মানুষের কথা বলতে ভুলে যাচ্ছেন বিজেপি সাংসদরা। দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে খরা পরিস্থিতি৷ অথচ, সেসব নিয়ে কিছু বলছেন না বিজেপি সাংসদরা।” এদিন, অধীর চৌধুরি বলেন, “কংগ্রেস সংসদে পিছিয়ে পড়া সাধারণ মানুষের কথাই বলবে। কংগ্রেস দুর্বল হয়েছে। কিন্তু ছোট হয়ে যায়নি।”
এরপর প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষে বেঁধেন অধীর। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান জানিয়েও বলছি, ইউপিএ আমলের বহু প্রকল্পের নাম বদলে নিজের নামে চালাচ্ছেন মোদি। গঙ্গা আর নোংরা নালার মধ্যে কোনও তুলনা চলে না।” অধীরের এই নোংরা নালা মন্তব্য নিয়ে অবশ্য বিস্তর বিতর্কও শুরু হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, এই মন্তব্য করে আসলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অসম্মান করেছেন অধীর। যদিও কংগ্রেসের দাবি, অধীরের মন্তব্যকে ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে।
এরপরই কার্যত মোদি-অমিত শাহকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা। বলেন, “ক্ষমতায় আসার আগে তো অনেক কথাই বলতেন। পেরেছেন টুজি বা কয়লা কেলেঙ্কারির কোনও অভিযুক্তকে ধরতে? সোনিয়াজি বা রাহুলজিকে গরাদের পিছনে ঢোকাতে পেরেছেন? ওদের চোর বলেই তো আপনারা ক্ষমতায় এসেছিলেন। ওঁরা তো দিব্যি সংসদে বসে রয়েছেন।” তাৎপর্যপূর্ণভাবে অধীরের বক্তব্যের পরই কক্ষ ছাড়েন নরেন্দ্র মোদি ও অমিত শাহ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.