সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গৌতম আদানি গোষ্ঠীর (Adani Group) অন্যতম সংস্থা আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের (এজিইএল) এক উপদেষ্টা ঠাঁই পেয়েছেন কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের একটি কমিটিতে। যার জেরে ‘স্বার্থের সংঘাত’ নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। শুরু হয়েছে বিতর্ক, রাজনৈতিক তরজাও। কেন্দ্রের সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব। এথিক্স কমিটির তাঁকে লোকসভা থেকে বহিষ্কারের সুপারিশ করলেও এ বিষয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
উল্লেখ্য, এজিইএল-এর অন্যতম প্রধান উপদেষ্টা জনার্দন চৌধুরিকে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের একটি কমিটির সাত ‘নন ইনস্টিটিউশনাল’ সদস্যের মধ্যে একজন হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছে। সেপ্টেম্বরে জলবিদ্যুৎ এবং নদী উপত্যকা প্রকল্পের জন্য বিশেষজ্ঞ মূল্যায়ন কমিটি পুনর্গঠন করার সময় এই পদক্ষেপ করা হয়। গত ১৭-১৮ অক্টোবর কমিটির বৈঠকে মূল্যায়ন করা হয় এজিইএল-এর ১,৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন তারালি পাম্পিং স্টোরেজ প্রকল্পটি। যেটি মহারাষ্ট্রের সাতারায় তৈরি হচ্ছে।
পরিবেশ মন্ত্রকের পোর্টালে বৈঠকের আলোচ্যসূচি থেকেই বিষয়টি জানা গিয়েছে। যদিও জনার্দন চৌধুরির দাবি, বৈঠকে থাকলেও এজিইএল-এর প্রকল্প নিয়ে আলোচনায় তিনি অংশ নেওয়া থেকে বিরত ছিলেন। তাঁর আরও দাবি, তিনি এজিইএল-এর উপদেষ্টা। সংস্থার বেতনভুক কর্মী নন। প্রসঙ্গত, এনএইচপিসি-তে ৩৬ বছর কর্মরত থাকার পর ২০২০-র মার্চে তিনি অবসর নেন। ২০২২-এর এপ্রিলে তিনি এজিইএল-এর উপদেষ্টা হন। কমিটিতে যোগ দেওয়ার আগে তিনি তাঁর ভূমিকা পরিবেশ মন্ত্রককে জানিয়েছিলেন বলেও চৌধুরির দাবি।
পরিবেশ মন্ত্রকের (Environment Ministry) এই কমিটির প্রাথমিক কাজ, প্রকল্পগুলির সম্ভাব্য ভালো-মন্দের প্রভাব মূল্যায়ন করে সে বিষয়ে মন্ত্রকের কাছে সুপারিশ করা। যার উপর ভিত্তি করে মন্ত্রক প্রকল্প খারিজ করবে কি না বা ক্ষতিকর প্রভাব প্রশমিত করার জন্য বা ক্ষতিপূরণের জন্য নির্দিষ্ট শর্ত দিয়ে ছাড়পত্র দেবে কি না, তার সিদ্ধান্ত নেয়। ফলে এই কমিটির ভূমিকা অতীব গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাভাবিকভাবেই চৌধুরির নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। মহুয়া মৈত্র টুইট করেন, ‘মোদিজির পরিবেশমন্ত্রক আদানির কর্মচারী জনার্দন চৌধুরিকে ইএসি-র সদস্য হিসাবে নিযুক্ত করেছে। যে কমিটির অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে মোট ১০,৩০০ মেগাওয়াট বিশিষ্ট আদানির ছটি প্রকল্প!’
কেরল কংগ্রেস টুইট করেছে, ‘আদানির প্রধান সেবক আদানির কর্মচারী জনার্দন চৌধুরিকে পরিবেশ মন্ত্রকের অধীনে ইএসি-এর সদস্য হিসাবে নিযুক্ত করেছেন। কমিটি আদানিদের ছটি প্রকল্প মূল্যায়ন করবে!’ শিবসেনা (ইউবিটি) নেত্রী প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদীর তোপ, “স্বার্থের সংঘাত, এই সমস্ত বিষয়ে প্রশ্ন করবেন না। সেগুলো অন্যদের জন্য। যেখানে বন্ধুর লাভ জড়িত, সেখানে এসব দেখা হয় না। কাউকে ই-মেল শেয়ার করলে এথিক্স কমিটি নির্বাচিত সাংসদের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা, স্বার্থের সংঘাতের অভিযোগ তোলে। কমিটিতে ওই বেসরকারি সংস্থার কর্মীকে কে, কেন, কীভাবে জায়গা করে দিল, তা নিয়ে তদন্ত হবে না?”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.