Advertisement
Advertisement

Breaking News

দেশে ফিরেই অগ্নিপরীক্ষার মুখে অভিনন্দন

আগামী কয়েকদিন দফায় দফায় জেরা করা হবে ভারতের উইং কমান্ডারকে।

Abhinandan Varthaman returns home
Published by: Sayani Sen
  • Posted:March 2, 2019 8:49 am
  • Updated:March 2, 2019 9:10 am  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ৫৮ ঘণ্টা পর উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান দেশে ফিরলেন। কিন্তু এবার কী? পড়শি মুলুকে বন্দি ভারতীয় পাইলট মুক্তি পেয়েছেন। অগ্নিপরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সসম্মানে ফিরে এসেছেন স্বদেশে। তাঁকে ঘিরে গোটা দেশে রীতিমতো উৎসবের আবহ। কিন্তু মাতৃভূমিতে প্রত্যাবর্তনের পর তাঁর জন্য ঠিক কী পরিস্থিতি অপেক্ষা করে রয়েছে? পাকিস্তান থেকে ভারতে পা রাখার পরই কি সুস্থ, স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন ভারতীয় বায়ুসেনার পাইলট অভিনন্দন বর্তমান? ফিরতে পারবেন তাঁর খুব চেনা সেই ছকে বাঁধা সেনানী-জীবনে?  উত্তর ‘না’। আরও স্পষ্ট করে বললে, এখনই ‘না’।

[পাকিস্তান থেকে দেশে ফিরলেন বায়ুসেনার বীর পাইলট অভিনন্দন, আপ্লুত দেশবাসী]

পাক সেনার হেফাজত থেকে মুক্তি পেয়ে সবেমাত্র দেশে ফিরেছেন অভিনন্দন। নিয়ম অনুযায়ী তাই, আগামী কিছু দিন দফায় দফায় জেরার মধ্য দিয়ে যেতে হবে তাঁকে। হবে বেশ কিছু ধরনের জরুরি পরীক্ষা-নিরীক্ষাও। সব মিলিয়ে যাকে অগ্নিপরীক্ষাও বলা যায়! কিন্তু সেগুলো ঠিক কী? বায়ুসেনা আধিকারিকদের ইঙ্গিত-প্রথমত, ওয়াঘা সীমান্ত থেকেই সরাসরি বাড়িমুখো হতে পারবেন না অভিনন্দন। উলটে সেখান থেকে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে বায়ুসেনার গোয়েন্দাদের কাছে। দ্বিতীয়ত, অভিনন্দনের ডাক্তারি পরীক্ষা হবে। তিনি শারীরিকভাবে সুস্থ কি না, দেখা হবে তা-ও। তৃতীয়ত, বন্দিদের শরীরে অনেক সময় ‘মাইক্রোচিপ’ ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যার মাধ্যমে এক মুলুকের গোপন তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে বিরোধী পক্ষ। এই ধরনের কোনও চিপ অভিনন্দনের শরীরে বসানো হয়েছে কি না, ‘বডিস্ক্যান’ করে দেখা হবে তা। চতুর্থত, এর পর এই বীর পাইলটকে নিয়ে যাওয়া হতে পারে মনোবিদের কাছে। পাকিস্তানের সেনার হাতে বন্দি থাকাকালীন, তাঁর উপর কোনওরকম অত্যাচার করা হয়েছে কি না, বা সেখানে তাঁর কী কী অভিজ্ঞতা হয়েছে-সব রকম তথ্যই পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জানার চেষ্টা করা হবে। পঞ্চমত, অভিনন্দনকে বিশদ জেরা করতে ইনটেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) এবং রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইং (র)-এর আধিকারিকদের ডেকে আনা হতে পারে। তবে আপাতত এটি সম্ভাবনার স্তরেই থাকছে। কারণ, সচরাচর আইবি এবং র’এর হাতে বায়ুসেনার পাইলটদের তদন্তভার ন্যস্ত করা হয় না। ষষ্ঠত, আকাশসীমা পেরিয়ে পাকিস্তানের মাটিতে অবতরণ করার পর থেকে যতটুকু সময় এই ভারতীয় পাইলট সেখানে কাটিয়েছেন, তার প্রতি মুহূর্তের বর্ণনা তাঁকে দিতে হবে গোয়েন্দাদের। বন্দি থাকা অবস্থায় পাক সেনা অফিসাররা তাঁর কাছে কী কী জানতে চেয়েছেন, বলতে হবে তা-ও। সপ্তমত, বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত অভিনন্দন যা যা করেছেন, গোটা ঘটনার পুনর্নির্মাণ করবেন গোয়েন্দারা। অষ্টমত, যে মিগ বিমানে তিনি ছিলেন, তাকে নিশানা করতে পাক সেনা কী অস্ত্র ব্যবহার করেছিল, চেষ্টা করা হবে তা জানারও। অভিনন্দন পাক সেনার হেফাজতে থাকাকালীন কী কী জরুরি নথি নষ্ট করতে সক্ষম হয়েছিলেন আর কী কী পারেননি, তারও তালিকা তৈরি করা হবে। এতেই শেষ নয়। আইএএফের এই নির্ভীক পাইলটকে যেতে হবে গোয়েন্দাদের ‘ডিব্রিফিং’ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়েও। এর অর্থ, যেহেতু অভিনন্দন বন্দি ছিলেন পড়শি দেশের সেনাবাহিনীর হাতে, তাই তাঁকে সেখানে আপস করার কোনও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল কি না কিংবা তাঁকে ব্যবহার করে কোনও চক্রান্ত করা হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত হতে গোয়েন্দারা সবরকম প্রচেষ্টা চালাবেন। একেই ‘ডিব্রিফিং’ বলে।

Advertisement

[অভিনন্দন দেশে ফেরার আগে একাধিক জায়গায় গুলির লড়াই, শহিদ অন্তত ৫]

কিন্তু যদি অভিনন্দন এই সব পরীক্ষায় সফল না হন? যদি গোয়েন্দাদের জেরা এবং ডাক্তারি পরীক্ষায় নিজেকে মানসিক তথা শারীরিকভাবে ‘ফিট’ প্রমাণ করতে না পারেন, তাহলে সম্ভবত আর কখনওই যুদ্ধবিমানে সওয়ার হতে পারবেন না এই বীর পাইলট। বিকল্প পথে হেঁটে তখন অভিনন্দনকে ‘ডেস্ক’-এর কাজে বসিয়ে দেওয়া হতে পারে। কিন্তু কোনওভাবেই তাঁকে অসম্মান করা হবে না। করা হবে না কোনও রকম বৈষম্যমূলক আচরণও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement