প্রতীকী ছবি।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জামিনে ছাড়া পেয়েছিল ধর্ষণে অভিযুক্ত। তারপর এক বছর ধরে নির্যাতিতাকে খুনের পরিকল্পনা করে সে। ডিসেম্বর মাসের শুরুতে নির্যাতিতাকে খুনের পর দেহ টুকরো টুকরো করে নদীতে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তার বিরুদ্ধে। হাড়হিম করা ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশায়। অভিযুক্তকে ফের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্তের নাম কুনু কিষাণ। গত বছর আগস্ট মাসে ওড়িশার সুন্দরগড় জেলায় এক নাবালিকাকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তারা একে অপরকে দীর্ঘদিন ধরে চিনত বলে জানা গিয়েছিল। ধারুয়াডিহি থানায় অভিযোগ দায়ের করে নির্যাতিতার পরিবার। গ্রেপ্তার করা হয় কুনুকে। তারপর থেকে জেল হেফাজতে ছিল অভিযুক্ত। তবে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে জামিনে মুক্তি পায় সে। মামলা চলছিল মামলার মতো।
এই আবহে সুন্দরগড় ছেড়ে ঝারসুগুড়া তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকছিল নির্যাতিতা। সেখানেই নির্যাতিতার সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযুক্ত। এরপর বাড়ি থেকে হঠাৎ নিখোঁজ হয়ে যায় নির্যাতিতা। ঝাড়সুগুদা থানায় অভিযোগ জানায় পরিবার। তদন্তে নেমে পুলিশ এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। ফুটেজে অভিযুক্তের সঙ্গে শেষবার দেখা যায় নির্যাতিতাকে। তারা বাইকে ছিল, মাথায় হেলমেট ছিল। সঙ্গে ছিলেন আরও এক ব্যক্তি। পুলিশ জানিয়েছে, মাথায় হেলমেট থাকায় তাদের প্রাথমিকভাবে চেনা যায়নি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নিয়ে তাদের শনাক্ত করা হয়।
ঝারসুগুড়া পুলিশ সুপার পারমার স্মিত পরষোত্তমদাস বলেন, “প্রযুক্তির সাহায্যে আমরা সুন্দরগড় থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করি। জেরার সে নির্যাতিতাকে খুনের কথা স্বীকার করে জানিয়েছে, দেহ টুকরো টুকরো করে অংশ ব্রাহ্মণী নদীতে ফেলেছে।”
তদন্তে আরও জানা গিয়েছে, গত বছর ডিসেম্বর মাসে জেল থেকে জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর অভিযুক্ত নির্যাতিতাকে খুন করার ছক কষে। সেই মতো নিজের মটরবাইকের রেজিস্ট্রেশন নম্বরও বদলে ফেলে কুনু। এরপর ফের নাবালিকার সঙ্গে যোগাযোগ করে সে। তার আস্থা অর্জন করে তাকে বাইকে করে আত্মীয়ের বাড়ি থেকে নিয়ে যায়। সঙ্গে ছিলেন অভিযুক্তের এক বন্ধু। পুলিশকে অভিযুক্ত জানিয়েছে, রাউরকেল্লা ও দেওগড়ের মাঝে ১৪৩ নম্বর জাতীয় সড়কে নির্যাতিতার গলার নলি কেটে খুন করে সে। পরে দেহ দুটি টুকরো করে ব্রাহ্মণী নদীতে ফেলে দেয়।
অভিযুক্তের বয়ান অনুসারে, ওড়িশা ডিজাস্টার র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্সের সাহায্য নিয়ে ব্রাহ্মণী নদীর নির্দিষ্ট অংশে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তল্লাশিতে মৃতার মাথা ও অন্যান্য দেহাংশ উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযুক্ত ও তার সঙ্গীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিন্তু কেন খুন? পুলিশ জানিয়েছে, নির্যাতিতা আদালতে বয়ানে ধর্ষণের কথা বললে অভিযুক্তের সাজা হতে পারত, সেই আশঙ্কায় তাকে খুন করেছে কুনু। ঘটনার পরবর্তী তদন্ত করছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.