সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঝাড়খণ্ডের লাতেহার জেলার উচওয়াওয়াল গ্রাম থেকে এই প্রথম কেউ ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করল। তাঁর নাম অনু কুমারী। ঝাড়খণ্ড অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের পরীক্ষায় তিনি পাশ করেছেন।
উচওয়াওয়াল গ্রামে পাহাড়িয়া উপজাতির বাস। রাজ্যের ১২টি উপজাতির মধ্যে এরা অন্যতম। রাঁচি থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে এই গ্রামটি। এখানেই থাকেন বছর আঠারোর অনু। বাবা চালিতর পাহাড়িয়ার বয়স ৪২ বছর। মেয়েকে তিনিই উৎসাহ দিয়েছিলেন। যেখানে কম বয়সেই মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায়, সেখানে নিজের মেয়েকে পড়াশোনা শিখিয়ে প্রথম পা তিনিই ফেলেছিলেন। তারপর সেই রাস্তায় পা বাড়ান মেয়ে। সফলও হন।
[ মমতা দিল্লি যেতেই নাটকীয় মোড় রাজনীতিতে, তৃণমূল নেত্রীর পাশে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী ]
এর আগে এই গ্রাম থেকে কেউ ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় পাশ করেনি। পাশ করা তো দূরের কথা। পরীক্ষাতেই বসেনি কোনও মেয়ে। ছেলেরা অবশ্য চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বারবার অকৃতকার্য হয়েছে তারা। তাই অনু প্রথম মেয়ে হিসেবে তো বটেই, সবার মধ্যে প্রথম হয়েই গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করলেন।
পাহাড়িয়ারা মূলত জঙ্গলে থাকে। জঙ্গলের সম্পদ থেকেই তারা জীবিকা নির্বাহ করে। জেলা পরিষদের প্রাক্তন সদস্য ও উপজাতির প্রাক্তন প্রধান রঘুপাল যাদব জানিয়েছেন, সরকার অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করছিল। কিন্ত তা সত্ত্বেও এই সম্প্রদায়ের তেমন উন্নতি হয়নি। অনু খুব দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে এসেছে। তার যখন দু’মাস বয়স, তখন তার মা মারা যান। গ্রামের অন্য ছেলেমেয়েরা স্কুলে যায় না। কিন্তু অনু সেই ধাতের গড়াই নয়। তাঁর বাবা মেয়েকে পড়াশোনা শেখাতে উদ্যোগী ছিলেন। বাবার চেষ্টার অবমাননা করেননি অনু। তবে এক্ষেত্রে প্যারা-টিচার কৃষ্ণকুমার রাম তাঁকে খুব সাহায্য করেছিলেন বলে জানিয়েছেন অনু।
[ দিল্লির সমস্যা মেটাতে দরবার মমতার, সাক্ষাৎ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ]
অনুর বাবা জানিয়েছেন, তিনি প্রশাসনিক অফিসার হতে চেয়েছিলেন। কিন্তু হতে পারেননি। তাই মেয়েকে পড়াশোনা শিখিয়েছেন। তাঁর আশা মেয়ে অনেক উপরে যাবে। কৃষ্ণ কুমার রাম জানিয়েছেন, অনুকে স্থানীয় স্কুলে ভরতি করানোর জন্য তাঁকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল। গ্রামের অন্য ছেলেমেয়েদের মতো পড়াশোনা করতে চাননি অনুও। তাঁকে রাজি করাতে হয়েছিল। কিন্তু যখন রাজি হলেন, তারপর মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.