ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাবালিকাকে ধর্ষণ। অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর বসে খাপ পঞ্চায়েত। মাতব্বরদের নির্দেশে অভিযুক্তের সঙ্গে ওই নাবালিকার বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে বিয়ের দিনই ঘটল অঘটন। বিয়ের পিঁড়িতে বসা নাবালিকার গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগাল অভিযুক্তের মা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু নাবালিকার। পকসো আইনে অভিযুক্ত ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করল পুলিশ।
কিশোরীর মায়ের দাবি, মাসতিনেক আগে তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়। অভিষেক নামে এলাকারই এক যুবক ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। তবে সেই সময় কিশোরী ভয়ে কাউকেই কিছু জানায়নি। তাই পরিবারের লোকজনের কাছে ধর্ষণের ঘটনা অজানাই ছিল। সম্প্রতি কিশোরী বাড়িতে জানায় তাঁর শরীর ভাল না। পেটে অসহ্য যন্ত্রণাও হতে শুরু করে। এরপর তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় কিশোরীর। তাতেই জানা যায় অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে সে।
কিশোরী শারীরিক ও মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। অভিষেক নামে এলাকারই এক যুবক যে তাকে ধর্ষণ করেছে তা বাবা-মাকে জানায়। এরপর বিচার চেয়ে এলাকার মাতব্বরদের কাছে যান নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন। খাপ পঞ্চায়েত বসে। ডেকে পাঠানো হয় অভিযুক্ত অভিষেককেও। দু’পক্ষের কথোপকথন শেষে মাতব্বররা অভিযুক্ত এবং নির্যাতিতার বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন।
সেই অনুযায়ী গত ৬ অক্টোবর বসে বিয়ের আসর। অভিযোগ, অভিযুক্তের মা কিশোরীকে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। একটি বন্ধ ঘরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় অন্তঃসত্ত্বা কিশোরীকে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয় কিশোরীর মা। মেয়ে অনেকক্ষণ বাড়ি না ফেরায় খোঁজখবর নেন কিশোরীর মা। ততক্ষণে প্রায় গোটা শরীরই আগুন ঝলসে গিয়েছে কিশোরীর। তড়িঘডি তাকে স্থানীয় জেলা হাসপাতালে ভরতি করা হয়। শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় অন্য একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিতও করা হয় তাকে। তবে শেষরক্ষা হয়নি। হাসপাতালেই মৃত্যু হয় কিশোরীর। পুলিশ অভিযুক্ত এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে পকসো আইন এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৭, ৩৭৬ নম্বর ধারায় মামলা রুজু করে। তবে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। পুলিশ অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.