গৌতম ব্রহ্ম: আর এক মিনিট দেরি হলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তেন মুমূর্ষু রোগী। ডাক্তারের উপস্থিত বুদ্ধির জেরে প্রাণে বাঁচলেন ওই রোগী। এমনকী ওই রোগীকে বাঁচাতে নিজের প্রাণের ঝুঁকি নিতেও পিছপা হননি ওই ডাক্তার। ভূস্বর্গের ওই ডাক্তারের ভূমিকার প্রশংসায় পঞ্চমুখ দেশবাসী। তাঁদের কথায়, ডাক্তারই ঈশ্বর, তা প্রমাণ করে দিলেন ওই ডাক্তার।
জানা গিয়েছে, আইসিইউতে স্থানান্তরিত করার সময় কোভিড পজিটিভ রোগীর নাক-মুখের নল খুলে গিয়েছিল। যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় বলে ‘accidental extubation’। তা বুঝতে পেরেই নলটি লাগানোর চেষ্টা করেন অ্যাম্বুল্যান্সে থাকা ডাক্তারবাবু। কিন্তু হেড শিল্ড ও গগলসের মধ্য দিয়ে পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছিলেন না তিনি। এদিকে হাতে সময় কম। তাই সাতপাঁচ না ভেবে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই হেড শিল্ড এবং গগলস খুলে ফেলেন ডাক্তারবাবু। এবং রোগীকে নিরাপদে পৌঁছে দেন এইমস ট্রমা সেন্টারে। যা সম্প্রতি কোভিড হাসপাতালে রূপান্তরিত হয়েছে। শুক্রবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে দিল্লিতে।
ডাক্তার বাবুর নাম জাহিদ আবদুল মাজিদ। জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগের এই যুবক সিনিয়র রেসিডেন্ট ডক্টর হিসাবে এইমসে কর্মরত জাহিদকে ঘটনার পরই কোয়ারান্টিনে পাঠানো হয়েছে। এইমসের রেসিডেন্ট ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন (আরডিএ)-র সাধারণ সম্পাদক শ্রীনিবাস রাজকুমার টি জানান, “এই ঘটনা কোভিড যুদ্ধে কর্মরত সব সৈনিককে অনুপ্রেরণা যোগাবে। আমরা আশা রাখব, সিনিয়র চিকিৎসকরাও এই উদাহরণটি মাথায় রাখবেন।” রাজকুমার আরও জানান, “ইচ্ছে করলেই জাহিদ ট্রমা কেয়ার সেন্টার পর্যন্ত রোগীকে রি-ইনটিউবেট না করেই নিয়ে যেতে পারতেন। সেক্ষেত্রে বিপন্ন হত না জাহিদের জীবন। কিন্তু রোগীর জীবন বিপন্ন হত। একজন ডাক্তার হওয়ার সুবাদে জাহিদ ভালোভাবেই জানেন, কোভিড রোগীকে ইনটিউবেট করাটা সবথেকে ঝুঁকির। কারণ ওই সময়ই ডাক্তার ও রোগীর মধ্যে অ্যারোসল ভাইরাল লোড সবচেয়ে বেশি থাকে্। যা ডাক্তারবাবুকে সংক্রমিত করতে পারে।” তবে সেই সময় এসব ভাবনার সময় ছিল না। একজন ডাক্তারের কাছে রোগীকে বাঁচানোই যে শেষ কথা, তা বুঝিয়ে দিলেন জাহিদ। নিসন্দেহে এই ঘটনা দেশের কোভিডযোদ্ধাদের সাহস জোগাবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.