সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাদ্রাসার অন্দরে নির্মম অত্যাচারের নিদর্শন প্রকাশ্যে। ১০ বছরের নাবালককে একেবারে শিকল দিয়ে বেঁধে, তালা লাগিয়ে দিনের পর দিন আটকে রাখার অভিযোগ তুললেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থল, মধ্যপ্রদেশের ভোপাল। স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করতে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মাদ্রাসাটির বৈধ রেজিস্ট্রেশন নেই। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে তা চলে।
রবিবার সকালে ভোপালের এই মাদ্রাসার আশেপাশের মানুষজনের হঠাৎ চোখ পড়ে এর অন্দরে। তাঁরা দেখতে পান, একটি ছেলের পা বাঁধা টিনের বাক্সের সঙ্গে। শিকল দিয়ে বাঁধার পর তাতে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার সামনে আরেকটি ছোট ছেলে ঘুমিয়ে রয়েছে। তার হাতে,পায়ে অবশ্য কোনও বাঁধন নেই। তাঁরা এও বুঝতে পারেন, ওই নাবালক বারবার শিকল খুলে বেরোতে চাইছে। এসব দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা খবর দেন পুলিশে। সকাল ১০টা নাগাদ ভোপাল থানার পুলিশ অভিযোগ পেয়ে পৌঁছায় ওই মাদ্রাসায়।স্থানীয় বাসিন্দাদের সাহায্যে গ্যাস কাটার দিয়ে শিকল কেটে মুক্ত করা হয় ওই নাবালককে।
মাদ্রাসার মালিককে জেরা করে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরক তথ্য পেয়েছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, অবৈধ মাদ্রাসাটিতে অন্তত ২২ জন ছাত্র পড়াশোনা করে। তাদের মধ্যে ২ জনকে মাদ্রাসায় রেখে পড়ানো হয়। গত দু মাস ধরে মাদ্রাসাতেই থাকে। তাদের বয়স যথাক্রমে ১০ বছর এবং ৭ বছর। মালিকের দাবি, ১০ বছরের ছেলেটি প্রায়ই মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যেত। তাই তার অভিভাবকদের অনুমতি নিয়েই শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। যাতে সে এদিক-ওদিক না যেতে পারে। স্থানীয় থানার ওসি উমেশ যাদবের কথায়, ‘মাদ্রাসার ম্যানেজারকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। তার বিরুদ্ধে জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট মেনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেইসঙ্গে যোগ হয়েছে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৪২ ধারাও।’
এই ঘটনা জানাজানি হতেই শিশু অধিকার রক্ষা কমিটির সদস্যরা সোচ্চার হয়েছেন। মাদ্রাসার আড়ালে শিশুদের এমন অত্যাচারের নিদর্শন দেখে ক্ষুব্ধ তাঁরা। মাদ্রাসাটি একেই অবৈধ, তারউপর নাবালককে এমন মধ্যযুগীয় উপায়ে বেঁধে রাখায় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের যথাযথ শাস্তির দাবি তুলেছেন কমিটির সদস্যরা। ঘটনার বিস্তারিত জানতে তাঁরা নাবালকের পরিবারের সঙ্গেও কথা বলতে চাইছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.