সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সংসার, সন্তানের মায়া কাটিয়ে অমৃতলোকের পথে পাড়ি জমিয়েছেন মা। কিন্তু অবোধ শিশু তা বোঝেনি। সে ভেবেছিল পথের ক্লান্তি মেটাতে মা হয়তো বিশ্রাম নিচ্ছেন। তাই তো মায়ের গায়ে থাকা কাপড় ধরে টেনেই চলেছে খুদে। এমনই মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী বিহারের মুজফ্ফরপুর স্টেশন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবি দেখে চোখে জল এসেছে নেটিজেনদের।
বিহারের মুজফ্ফরপুরে বাড়ি। সন্তানকে নিয়ে সাজানো সংসার। কিন্তু সন্তানের মুখে অন্ন জোগানোর ক্ষমতা না থাকলে কি আর মা শান্তি পান? তাই তো পেটের দায়ে ছুটে গিয়েছিলেন গুজরাট। প্রথম কয়েকমাস আয় যে হয়নি তা নয়। দিব্যি কোলের সন্তানকে নিয়ে খেয়ে পরে কাটছিল দিন। কিন্তু লকডাউন যে সব বদলে দেবে তা শুরুতেই আঁচ করেছিলেন ওই মহিলা। কাজ বন্ধ। তার ফলে আয় হচ্ছিল না কিছুই। হাতে যা ছিল তা দিয়ে প্রথম কয়েকদিন খাবার জুটেছিল।
কিন্তু কতদিনই বা সঞ্চিত টাকায় সন্তানকে খাওয়াতে পারেন ভিনরাজ্যে কাজ করা শ্রমিক মা। তাই নিজে তো দূর, সন্তানকে খাওয়াতে পারেননি তিনি। না খেয়েই কেটেছে দিনের পর দিন, রাতের পর রাত। সন্তানের মুখ চেয়ে দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন মহিলা। ভেবেছিলেন বাড়ি ফিরতে পারলে কিছু না কিছু ব্যবস্থা হবেই। তাই গুজরাট থেকে বিহারে ফেরা শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে ছেলেকে নিয়ে চড়ে বসেন। অভিযোগ, সেখানেও মেলেনি খাবার, জল। আবার তার উপর তীব্র গরম। সব মিলিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। শেষরক্ষা হল না। মুজফ্ফরপুর স্টেশনে পৌঁছনোর আগেই মারা যান তিনি।
ট্রেন থামার পর তাঁর দেহ কাপড় চাপা দিয়ে মুজফ্ফরপুর স্টেশনে নামিয়ে দেওয়া হয়। ট্রেনের সহযাত্রীদের ভিড়ে ঠাসা স্টেশনে ছোট্ট সন্তানের আপন বলতে কেউ নেই। তাই তো মাকে মাটি থেকে টেনে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করে সে। কারণ, অবোধ শিশু তখনও বোঝেনি মা মারা গিয়েছেন। সে ভেবেছিল মা হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছেন। তাই মাকে জাগিয়ে তুলে হয়তো খাবার বা বাড়ি ফেরার আবেদন জানানোর চেষ্টা করছিল একরত্তি। শিশুর কাণ্ডকারখানাই ভাইরাল হয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ছবিটি যে দেখছেন তাঁরই চোখে জল আসছে। রাজনৈতিক মহলে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনা চলছে যথেষ্ট। তবে পরিযায়ী শ্রমিকরা যে মোটেও ভাল নেই, অসহায় শিশুর মৃত মাকে জাগানোর আপ্রাণ চেষ্টাতেই যেন আরও একবার তা স্পষ্ট হল।
बिहार के मुजफ्फरपुर का ये वीडियो हैं जहां एक बच्चा रेलवे स्टेशन पर मां से खेल रहा, उसे जगा रहा
उसे नही पता उसकी मां हमेशा के लिए सो चुकी है, भीषण गर्मी में चार दिन से ट्रेन में भूखी प्यासी मां की मौत हो गयी pic.twitter.com/xQCRby2q5P— Kavish (@azizkavish) May 26, 2020
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.