সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কালো টাকা এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। বাতিল নোট কতটা রিজার্ভ ব্যাঙ্কে ফিরল? দীর্ঘ দিন এই নিয়ে চুপ থাকার ঝেড়ে কাশল কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। তাদের বার্ষিক রিপোর্ট বলছে প্রায় ৯৯ শতাংশ বাতিল ১০০০ টাকার নোট ফিরেছে। ৫০০ টাকার নোট ফিরেছে ৯৭ শতাংশ। মোট জমা নোটের ০.২২% জাল এবং অধিকাংশ কালো টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে। বাকি টাকা কোথায় গেল তা অবশ্য জানাতে পারেনি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এতবড় সিদ্ধান্ত নিয়ে তাহলে কী হল তা নিয়ে কেন্দ্রর সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন এটি বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির ইঙ্গিত। নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ফ্লপ হয়েছে।
Is not the RBI’s revelation on #DeMonetisation pointing to a big scam? I feel it was totally a flop show https://t.co/2GMc6ThFNB
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) August 30, 2017
[আধার সংযুক্তিকরণের সময়সীমা বাড়াল কেন্দ্র]
RBI ‘gained’ Rs 16000 crore, but ‘lost’ Rs 21000 crore in printing new notes! The economists deserve Nobel Prize.
— P. Chidambaram (@PChidambaram_IN) August 30, 2017
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট বলছে, ৮৯০০ কোটি তাদের কাছে ফেরত আসেনি। নতুন নোট ছাপার খরচ দ্বিগুণ বেড়েছে। তার ফলে নোট ছাপতে ২১ হাজার কোটি টাকা বাড়তি খরচ হয়েছে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্টে স্পষ্ট কালো টাকা আটকানোর উদ্দেশে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, তার অধিকাংশই ব্যাঙ্কে জমা পড়েছে। এমনকী নজরদারির ফাঁক গলে জাল নোটও জমা পড়েছে ভালমতো। নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত ঘোষণার সময় ১৫ লক্ষ ৪৪ হাজার কোটি বাজারে ছিল। আরবিআইয়ের বার্ষিক রিপোর্ট জানাচ্ছে ১৫ লক্ষ ২৮ হাজার কোটি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ঘরে ফিরে এসেছে। কেন্দ্র আশা করেছিল ৩ লক্ষ কোটি টাকা আর ফিরবে না। তা আর হচ্ছে না।
বিপুল বাতিল নোট নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কী করবে সেটাও এখন প্রশ্ন। কারণ এত টাকা রক্ষণাবেক্ষণ করতে গেলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওপর চাপ আরও বাড়বে। বিরোধী দলগুলি এবং অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, কালো টাকা আটকানোর যুক্তি খাটল না। কারণ ৯৯ শতাংশ টাকা ফেরত এসেছে মানে বোঝা যাচ্ছে দেশে কোনও কালো বা জাল টাকা নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরু থেকে এবং ধারাবাহিকভাবে নোট বাতিলের বিরোধিতা করে এসেছেন। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর তাঁর ক্ষোভ সোশ্যাল মিডিয়ায় আছড়ে পড়েছে। নোট বাতিলের জন্য দেশে ৩ লক্ষ কোটি টাকার জিডিপির ক্ষতি হয়েছে। শতাধিক মানুষ ব্যাঙ্কের লাইনে দাঁড়িয়ে মারা গেছেন। সম্ভবত কালো টাকা সাদা করতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সরকারের গোপন অ্যাজেন্ডা মানুষ জানতে চায় বলে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। এই রিপোর্ট নিয়ে কেন্দ্রকে তুলোধনা করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম। টুইটারে তাঁর বক্তব্য, নোট বাতিলের জন্যই কালো টাকার কারবারিরা তাদের অর্থ সাদা করে নিলেন। ৯৯ শতাংশ নোট আইনি হয়ে গেল। তাঁর বিদ্রুপ, এই অর্থনীতিবিদরা নোবেল পাওয়ার যোগ্য। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এই নিয়ে কেন্দ্রর ভূমিকায় সরব হয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, নোট বাতিল ছিল রাজনৈতিক তামাশা। এর জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে শতাধিক মানুষ প্রাণ হারান। ১৫ লক্ষ মানুষের চাকরি যায়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.