সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যাত্রী নিরাপত্তার থেকে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যে বেশি গুরুত্ব! মোদি জমানায় রেল কি গোড়াতেই গলদ করে ফেলছে! বালেশ্বরের দুর্ঘটনার পর জোরালো হচ্ছে এই প্রশ্ন। কেন?
২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর রেলে যাত্রী সুরক্ষায় বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া শুরু হয়। অন্তত বিজেপি তেমনটাই দাবি করে আসছে। কিন্তু পরে দেখা গেল সুরক্ষার থেকে স্বাচ্ছন্দ্যই যেন বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। বুলেট ট্রেন, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো সুপারফাস্ট ট্রেন নিয়ে কেন্দ্রের মোদি সরকার যখন বুক বাজাচ্ছে, ঠিক সেখানেই প্রদীপের নিচের অন্ধকারের মতো ঘটে গিয়েছে একের পর এক ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) এই ৯ বছরে বার তিনেক রেলমন্ত্রী বদলে ফেলেছেন। কিন্তু বদলায়নি রেলের স্বাস্থ্য, কমেনি দুর্ঘটনা।
নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর প্রথম রেলমন্ত্রী হন সদানন্দ গৌড়া। সিনিয়র এই নেতার সঙ্গে মতের মিল না হওয়ায় তাঁকে বেশিদিন রাখেননি প্রধানমন্ত্রী। এবার রেলমন্ত্রী করা হয় সুরেশ প্রভুকে। তিনি রেলে বিপ্লব আনার চেষ্টা করেন সোশ্যাল মিডিয়াকে সক্রিয় করে। সুরেশ প্রভুরও (Suresh Prabhu) মূল ফোকাস ছিল যাত্রী পরিষেবা এবং যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য। কিন্তু প্রভুর আমলে তিনটি বড় ট্রেন দুর্ঘটনা হয়। ৩ বছর বাদে তাঁকে সরে যেতে হয়। তাঁর জায়গায় আসেন পীযুষ গোয়েল (Piyush Goyal)। পীযুষের আমলে বড় কোনও রেল দুর্ঘটনা না হলেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় ২০২১ সালে। তারপর দায়িত্ব নেন বৈষ্ণব। কিন্তু তাঁর আমলে দুর্ঘটনা যেন বেড়েই চলেছে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪-১৫ সাল থেকে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষ পর্যন্ত ছোটবড় মোট ৬৩৮টি রেল দুর্ঘটনা হয়েছে। এর মধ্যে ২০১৬ সালে পাটনায় রেল দুর্ঘটনায় দেড়শোর বেশি মানুষ মারা যান। ২০১৪ সালে উত্তরপ্রদেশে গোরক্ষধামে দুর্ঘটনা, ২০১৭ সালে পুরী-হরিদ্বার উৎকল এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনার ক্ষত এখনও টাটকা আমনাগরিকের মনে। রেল সূত্র বলছে, ক্রমবর্ধমান এই দুর্ঘটনার সংখ্যার নেপথ্যে রয়েছে রেলের শূন্যপদ পূরণ না হওয়াটাও। হিসাব বলছে দক্ষিণ পূর্ব এবং দক্ষিণ রেলে প্রচুর লোকো পাইলট পদে কর্মী নেই। এই দুই রেল মিলিয়েই সাতশোর বেশি লোকো পাইলটয় নিয়োগ করা দরকার। অথচ সরকার সেদিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। সেভাবে গুরুত্ব পাচ্ছে না কবচও। প্রায় ৬ মাস আগে এই প্রযুক্তি ছাড়পত্র পাওয়া সত্ত্বেও দেশের প্রায় ৯৮ শতাংশ রুটে এখনও কবচ নেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.