স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: ঘোরতর রাজনৈতিক সংকট রাজস্থানে। মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে দলের মধ্যেই অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে কংগ্রেস সরকার পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। দলের এক ব্যক্তি এক পদ নীতি অনুসারে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হলে ছাড়তে হবে মুখ্যমন্ত্রী পদ। সেই নিয়ে আলোচনা করতে রবিবার পরিষদীয় কমিটির বৈঠক বসে। সেখানে গেহলটপন্থীরা তাঁর মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়ার প্রস্তাবে বেঁকে বসেন। এরপরেই প্রায় ৮২ জন গেহলটপন্থী বিধায়ক বাসে করে বিধানসভার স্পিকারের কাছে যান। সূত্রের খবর, তাঁরা বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। ৮২ কংগ্রেস বিধায়ক ইস্তফা দেওয়ার অর্থ সরকার পড়ে যাওয়া।
যেদিন থেকে গেহলটের নাম কংগ্রেস (Congress) সভাপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে সামনে এসেছে, সেদিন থেকেই উঠেছে প্রশ্ন, কে হবেন রাজস্থানের নতুন মুখ্যমন্ত্রী। উদয়পুরে মে মাসে হওয়া চিন্তন শিবিরে সিদ্ধান্ত হয়েছিল এক ব্যক্তি থাকতে পারবেন একটিমাত্র পদে। যদিও শুরুর দিকে গেহলটের দাবি ছিল অনায়াসে তিনি দুই দায়িত্ব সামলাতে পারবেন। তবে গত সপ্তাহে কেরলে রাহুলের সঙ্গে যখন তিনি দেখা করেন, তখন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি স্পষ্ট বলে দেন, মেনে চলতে হবে উদয়পুরের সিদ্ধান্ত। তারপর থেকেই সুরে বদল আসতে থাকে গেহলটের। এদিন তিনি বলেন, “আমি চাই যুব কারও হাতে রাজস্থানের দায়িত্ব তুলে দিতে।” এই কথা শুনে শচীন ঘনিষ্ঠরা প্রফুল্লিত হলেও গেহলটপন্থীদের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী যুব কাউকে চেয়েছেন ঠিকই, তবে শচীনের কথা বলেননি। সূত্রের খবর, কংগ্রেস নেতা কে সি বেণুগোপালকে ফোন গেহলট বলেছেন, “বিধায়করা ক্ষুব্ধ। এখন আমার হাতে কিছু নেই।”
এদিন সন্ধ্যায় ছিল রাজস্থানের (Rajasthan) কংগ্রেসের পরিষদীয় দলের বৈঠক। তার আগে হাইকমান্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে ও অজয় মাকেনের সঙ্গে দেখা করতে যান গেহলট। সেখান থেকে বেরিয়ে বলেন, “কংগ্রেসের প্রথা হল যখনই মুখ্যমন্ত্রী বাছাই করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসে পরিষদীয় দল, তখন সভাপতিকেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার দেওয়া হয়। এবারও সম্ভবত সেই ধরনের কিছুই হবে।” এখন, গেহলটপন্থীদের একটি মহল বলতে শুরু করেছে, আগে সভাপতি নির্বাচন হোক, কে নতুন সভাপতি হন তা দেখা যাক, তারপর না হয় অশোকজি মুখ্যমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব ছাড়বেন। আপাতত তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়বেন না। যা হবে সভাপতি নির্বাচনের পর। তর্কের খাতিরে যদি ধরা নেওয়া হয় গেহলট হারছেন, তাহলে তিনিই থেকে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী পদে। জিতে গেলে তখন ঠিক হবে নতুন মুখ্যমন্ত্রী। সেক্ষেত্রে পরিষদীয় দলের দেওয়া দায়িত্ব অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ের সিদ্ধান্ত নেবেন নতুন সভাপতি অর্থাৎ তিনি নিজে। তখন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী পদে যে পাইলট পছন্দের ব্যক্তি হবেন না, তা বলা বাহুল্য।
গেহলট ও তাঁকে কেন্দ্র করে একদিকে যখন ক্রমশ ঘোলা হচ্ছে জল, তখন নিজের মনোনয়ন দাখিল ও প্রচার পর্বের পরিকল্পনা নিয়ে জোরকদমে কাজ করে যাচ্ছেন শশী থারুর। ৩০ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন করতে পারেন তিরুবনন্তপুরম সাংসদ, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। তিনি মনোনয়নের পাঁচটি ফর্ম তুলেছেন। সেগুলি জমা দিতে তাঁর অন্তত ৫০ জনের সমর্থন প্রয়োজন। এই লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা ন’ হাজারের বেশি প্রদেশ ডেলিগেটদের কাছে প্রচারে যেতে পারেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.