সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আশঙ্কাই সত্যি হল। দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকার ধর্মীয় অনুষ্ঠান তবলিঘি জামাত ইজতেমায় যোগ দেওয়া আরও সাতজনের মৃত্যু হল। ছয়জন তেলেঙ্গানার বাসিন্দা। এর আগে শ্রীনগরেও এক ধর্মপ্রচারকের মৃত্যু হয়। রবিবার মুম্বইয়ে এক ফিলিপিন্সের নাগরিকের মৃত্যু হয়। তিনিও দিল্লির মসজিদের তবলিঘি জামাত ইজতেমা অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন। এদিকে যাঁদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ২৪ জনের দেহে জীবাণুর উপস্থিতি মিলেছে। এই পরিসংখ্যান সামনে আসতেই সামাজিক সংক্রমণের আশঙ্কা আরও কয়েকগুন বেড়ে গিয়েছে। আশঙ্কা, এক ধাক্কায় দেশে আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে। দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়তে পারে সংক্রমণও। গোটা ঘটনা অনুষ্ঠানের আয়োজকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দিল্লি সরকার। পাশাপাশি মার্কাজ নিজামুদ্দিনে থাকা ৮০০ জনকে মঙ্গলবার সকালে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁদের দিল্লির বিভিন্ন প্রান্তে আইসোলেশনে রাখা হচ্ছে। সিল করে দেওয়া হয়েছে নিজামুদ্দিনের ওই দপ্তরও।
প্রসঙ্গত, ১৩-১৫ মার্চ দিল্লির নিজামুদ্দিন এলাকার এক মসজিদে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তো বটেই, এমনকী ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া কিরঘিজস্তান-সহ একাধিক সংক্রমিত দেশ থেকে আসা প্রতিনিধিরা যোগ দিয়েছিলেন। এরপর তাঁরা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েন। সবচেয়ে চিন্তার বিষয়, ২০-৩০টি বাসে গাদাগাদি করে তাঁরা বিভিন্ন এলাকায় গিয়েছেন। ফলে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা কয়েকগুন বেড়ে গিয়েছে। ইতিমধ্যএ দেশে আক্রান্তের সংখ্যা ১২০০ পেরিয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ২২৭ জন। এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া দিল্লির ৩০০ জন বাসিন্দার নমুণা পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে। রাখা হয়েছে আইসোলেশনে। এদিকে মসজিদের ভিতরে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৮০০ জন জমায়েত করে রয়েছেন বলে খবর।
ভারতের মূল ভূখণ্ডের বাইরেও ছড়িয়েছে সংক্রমণ। আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ থেকে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা আরও ১০ জনের দেহেও করোনার উপসর্গ মিলেছে। জানা গিয়েছে, অনুষ্ঠান শেষে ইন্দোনেশিয়ার অন্তত ১০ জন নাগরিক তেলেঙ্গানায় গিয়েছিলেন। তাঁরাও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই খবর সামনে আসতেই চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কেসিআরের কপালে। আমজনতার কাছে তিনি আবেদন জানিয়েছেন, যাঁরা দিল্লির তবলিগে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরা যাতে দ্রুত প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এদিকে তেলেঙ্গানায় মৃত্যু হওয়া ছজনের সংস্পর্শে যারা এসেছিলেন তাঁদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। তাঁদের খোঁজ মিললেই পাঠানো হচ্ছে আইসোলেশনে পাঠানো হচ্ছে।
নিজামুদ্দিন এলাকায় বিশাল জমায়েতের খবর পেয়ে রবিবার রাতেই পুলিশের শীর্ষকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। আপাতত গোটা এলাকা কার্যত সিল করে রাখা হয়েছে। চলছে কড়া নজরদাড়ি। এদিকে, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে। দেশজুড়ে যেখানে জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। লকডাউন চলছে। বাড়ির বাইরে বের হলেই জুটছে পুলিশের লাঠির বাড়ি। আর সেই সময় একটি মসজিদের ভিতরে কীভাবে এতজন একসঙ্গে রয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। সরকারি নজরদারিতেও গাফিলতি ছিল বলে অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.