ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একই দিনে একাধিক টিকিট কেটেও তা ব্যবহার করা হয়নি। অথচ এর জন্য রেলমন্ত্রককে বিশাল টাকা দিতে হল রাজ্যসভার সচিবালয়কে। যার জেরে বেজায় ক্ষুব্ধ রাজ্যসভার চেয়ারম্যান বেঙ্কাইয়া নায়ডু। সদস্যদের সতর্ক করে বার্তাও দিয়েছেন ইতিমধ্যে। এই ধরনের ঘটনা যে রাজ্যসভায় ঘটে, এই কথা স্বীকারও করেছেন কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন রাজ্যসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক সুখেন্দু শেখর রায় এবং বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত।
২০১৯ ক্যালেন্ডার বর্ষে রাজ্যসভা সচিবালয়ে প্রায় আট কোটি টাকার বিল পাঠায় রেল। যা অন্যান্যবারের তুলনায় অনেক বেশি। এর কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়েই সামনে চলে আসে ভয়ঙ্কর এক তথ্য। দেখা গিয়েছে, বেশকিছু সাংসদ একই দিনে একই রুটে একাধিক ট্রেনের টিকিট কেটেছেন। কখনও তার একটিতে ভ্রমণ করে বাকিগুলি বাতিল করেননি। কখনও আবার তাঁদের কোনও চেনা লোক ভ্রমণ করেছেন সেই টিকিটে। কখনও আবার সব আসনই থেকে যায় ফাঁকা।
এই ধরনের ঘটনা যে ঘটে থাকে, তা মেনে নিয়েছেন কংগ্রেসের রাজ্যসভা সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “বেশ কিছু রাজ্যের সাংসদ এই কাজ করে থাকেন। নিজের বদলে পরিচিতদের ফার্স্ট ক্লাসে ট্রাভেল করান। কখনও আবার দুইয়ের বদলে তার বেশি মানুষও এইভাবে যাতায়াত করে। এই অন্যায় বন্ধ হওয়া উচিত।” তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় এই ঘটনায় পূর্ণ সহমত প্রকাশ করেছেন বেঙ্কাইয়া নাইডুর সিদ্ধান্তে। তিনি বলেছেন, “উনি যা করেছেন তা একদম ন্যায্য কাজ। যে বা যাঁরা নিজেদের সুবিধার অন্যায় ব্যবহার করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আরও কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।” বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তের বক্তব্য, “বিমানে কিছু শর্ত থাকলেও রেলে আমাদের যাত্রা একেবারে ফ্রি। তারপরও যদি কেউ এমন করে থাকে, তাহলে তা লজ্জার। যাঁরা পকেটের টাকা খরচ করে যাত্রা করছে, তাঁদের প্রতি অন্যায়। ফ্লাইটের ক্ষেত্রে যেমন নিয়ম আছে নির্দিষ্ট সময়ের পরে এলে আর বিমানে উঠতে দেওয়া হয় না, এই ধরনের কোনও নিয়মও করা যেতে পারে।”
সাধারণ মানুষের টাকার এই অপপ্রয়োগে বেজায় ক্ষুব্ধ নায়ডু। রাজ্যসভার সেক্রেটারি জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছেন সব সদস্যদের এই বিষয় জানিয়ে সতর্ক করে দিতে। ভবিষ্যতে যদি দেখা যায় কোনও সাংসদের কাটা টিকিটে কেউ ভ্রমণ করেনি অথবা তাঁর বদলে অন্য কেউ ভ্রমণ করেছেন, তবে সেই টাকা কাটা হবে সংশ্লিষ্ট সাংসদের বেতন থেকে।এই বিষয়ে বেশ কিছু বক্তব্য উঠে এসেছে। বলা হচ্ছে, বেশ কিছু সাংসদ নিজেদের প্রাপ্য সুবিধার অপপ্রয়োগ করছেন। আবার এমনটাও বলা হচ্ছে যে টিকিট বাতিল না করায় বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। একদিকে যেমন করদাতাদের টাকা নষ্ট হচ্ছে। তেমনই ওয়েটিং লিস্টে থাকা অন্য যাত্রীরাও তাঁদের প্রাপ্য অধিকার হারাচ্ছেন। এর সঙ্গে রেলকর্মীদের অনৈতিকভাবে সেই সিট বিক্রি করে রোজগারের বিষয়টিও থেকে যাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.