সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) ফের অক্সিজেন (Oxygen) সরবরাহের অভাবে মারা গেলেন ৮ জন কোভিড রোগী। আগ্রার (Agra) এক হাসপাতালে মর্মান্তিক মৃত্যু হল তাঁদের। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath) যদিও দাবি করেছেন, তাঁর রাজ্যে অক্সিজেন সরবরাহ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই, বাস্তব ছবি সেকথা বলছে না। বরং উদ্বেগ বাড়ছে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার করুণ দশা ঘিরে। মনে করা হচ্ছে, দিল্লির পরে দেশের পরবর্তী কোভিড হটস্পট হতে চলেছে যোগীরাজ্যই।
আগ্রার পরশ হাসপাতালের এক কর্মী জানিয়েছেন, অক্সিজেন যে ফুরিয়ে এসেছে তা জেলা প্রসাসনকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও লাভ নেই। অক্সিজেনের সরবরাহের অভাবে বাঁচানো যায়নি ৮ জনের প্রাণ। এপ্রসঙ্গে আগ্রার জেলা প্রশাসক প্রভু সিং অবশ্য দাবি করেছেন, এই অভাব সাময়িক। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তা সমাধান করে ফেলবেন তাঁরা। তাঁর মতে, যেভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে সংক্রমণ বেড়েছে তার ফলে আচমকাই অক্সিজেনের চাহিদাও বেড়ে গিয়েছে। তবে এবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে।
#UttarPradesh is slated to report more than 1.19 lakh #COVID19 cases, as per projections. The most populous state is soon to become the next #coronavirus hotspot. My detailed story coming soon. @IndiaToday pic.twitter.com/Aif0kdmcbg
— Milan Sharma (@Milan_reports) April 27, 2021
কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এমন আশ্বাসবাণীতে নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না। আগ্রার আরেক কোভিড হাসপাতাল প্রভা হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, এখনও শতাধিক রোগী রয়েছেন যাঁদের অক্সিজেন প্রয়োজন। অথচ যেটুকু অক্সিজেন রয়েছে, তা দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়ার পথে। স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বেগ বাড়ছে।
গোটা রাজ্যেই ক্রমশ ভয়াবহ হচ্ছে করোনার ছোবল। গতকালই বিরোধী নেতা সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘উত্তরপ্রদেশ এখন করোনা প্রদেশ।’’ সত্যিই রাজ্যের পরিস্থিতি যেন সেদিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে। সাধারণত রাতের বেলায় দেহ দাহ করা হয় না উত্তরপ্রদেশের শ্মশানে। কিন্তু সেই সব নিয়ম এখন আর মানা সম্ভব নয়। কেননা যত সময় বাড়ছে, ততই মৃতদেহের ভিড় বেড়ে যাচ্ছে। পরিস্থিতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দিন-রাত জ্বলছে কোভিডে মৃত মানুষদের চিতা। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় বৈকুণ্ঠ ধাম শ্মশানের কথা। সেখানে কেবল কোভিডে মৃতদেরই সৎকার হচ্ছে। তাও পাল্লা দিয়ে উঠতে পারছেন না শ্মশানকর্মীরা! মৃতদেহের সারি ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে।
এমনই ছবি গোটা রাজ্য জুড়ে। অথচ মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেছেন, তাঁর রাজ্যে বেড, অক্সিজেন বা অন্যান্য মেডিক্যাল সামগ্রীর কোনও ঘাটতি নেই। যোগী সরকারের এক মন্ত্রী সুরেশ খান্নার দাবি, অক্সিজেন সরবরাহের অভাবে একজনও মারা যাননি রাজ্যে! এই ধরনের দাবির বিরোধিতা করছে বিরোধী দলগুলি। তবে এর মধ্যে সামান্য আশা জাগিয়ে আইআইটি কানপুরের এক অধ্যাপক মণীন্দ্র আগরওয়াল জানিয়েছেন, হয়তো মে মাসের প্রথম সপ্তাহের পরে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা কিছুটা কমবে। যার ফলে দৈনিক সংক্রমণের গ্রাফ নিম্নমুখী হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.