ইয়াদি রেড্ডি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা মন্দিরগুলিতে প্রায় প্রতিদিন অনুদান দেন ভক্তরা। মন্দিরে ভগবান দর্শন করতে গিয়ে প্রণামী দেন না এরকম লোকের সংখ্যা প্রায় হাতেগোনা! বরং বেশিরভাগ জায়গাতেই ভক্তদের দানের ফলে ফুঁলে ফেঁপে ওঠে মন্দির কমিটিগুলি। তবে একজন মানুষ ভিক্ষে করে সংগ্রহ করা আট লাখ টাকা মন্দিরে দান করছেন এই ঘটনা খুবই বিরল! শুনতে অবাক লাগলেও এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ায় (Vijayawada)। সেখানে অবস্থিত একটি সাঁইবাবা মন্দিরে আট লক্ষ টাকা দান করে নজির গড়েছেন ইয়াদি রেড্ডি (৭৩) নামে এক বৃদ্ধ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়ওয়াড়ার বাসিন্দা ইয়াদি রেড্ডি নামে ওই বৃদ্ধ আগে রিকশা চালাতেন। ৪০ বছর ধরে টানা রিকশা চালানোর পর তাঁর দুটি হাঁটুতেই সমস্যা দেখা যায়। এর ফলে বাধ্য হয়ে সাত বছর আগে ভিক্ষে করতে শুরু করেন তিনি। এর জন্য বিজয়ওয়াড়ার বিভিন্ন মন্দিরে সামনেও বসতে হয়েছে তাঁকে। এর মাঝে একদিন মনে হয়, ভিক্ষে করে যা সংগ্রহ করেছেন তার থেকে কিছু টাকা মন্দিরে দান করলে কেমন হয়! এই চিন্তা মাথায় আসতেই আচমকা বদলে যায় জীবনটা। ভিক্ষের অর্থ থেকে নিজের প্রয়োজন মিটিয়ে বাকি টাকা দান করতে শুরু করেন বিজয়ওয়াড়ার একটি সাঁইবাবা মন্দিরে। এইভাবে গত সাতবছরে ওই মন্দিরে মোট আট লক্ষ টাকা দান করেছেন তিনি। যার কথা শুনে ধন্য ধন্য করছেন সবাই।
যদিও এই প্রশংসা অহংকারী করে তোলেনি ৭৩ বছরের ওই বৃদ্ধকে। বরং অত্যন্ত বিনয়ী হয়ে তিনি বলছেন, ৪০ বছর ধরে রিকশা চালিয়েছি। তখন সাঁইবাবা মন্দিরে একলক্ষ টাকা দান করেছিলাম। পরে শরীর খারাপ হওয়ার কারণে ভিক্ষে করতে শুরু করি। তা থেকে যা রোজগার হত তাতে নিজের প্রয়োজন মিটিয়েও কিছু টাকা থাকত। প্রতিদিন সেই টাকা মন্দিরে দান করতে শুরু করি। আর অদ্ভুতভাবে তারপর থেকে আমার রোজগারও বাড়তে শুরু করে। মন্দিরে দানের পরিমাণ যত বাড়িয়েছি, ততই বেড়েছে আমার রোজগার। এখন আবার মন্দিরে দানের কথা শুনে অনেকেই সম্মান জানাচ্ছেন আমাকে। তাই নিজের প্রয়োজনের অতিরিক্ত টাকা সবটাই দান করতে চাই সাঁইবাবার মন্দিরে।
মন্দির কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানানো হয়েছে, ইয়াদি রেড্ডির ওই টাকা দিয়ে একটি গোশালা খোলা হয়েছে। এমনিতে তাদের তরফে কারও থেকে অনুদান চাওয়া হয় না। কিন্তু, ওই বৃদ্ধের মতো অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.