ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, শেষনাগ: সদয় হলেন অমরনাথ। তবে, পুরোপুরি নন।
গত কয়েকদিনের ঝঞ্ঝাবিধ্বস্ত পরিস্থিতি, জাতীয় সড়কে ধসকে তুচ্ছ করে রবিবার ২৫০ জন পুণ্যার্থী পৌঁছে গেলেন অমরনাথের সামনে। দর্শন মিলল। বরফে ঢাকা এলাকা কাঁপিয়ে উঠল জয়ধ্বনি। উচ্ছ্বাসের সঙ্গে মিলে গেল ইচ্ছাপূরণের উল্লাস। তবে, সামগ্রিক পরিস্থিতি বলছে এবারের যাত্রা সুখকর হবে না। হচ্ছে না। রবিবার সকাল থেকে আকাশ পরিষ্কার ছিল পহেলগাঁওয়ে। পিশুটপ, শেষনাগে বরফ থাকলেও তা পুণ্যার্থীদের মনোবলকে বিশেষ দমাতে পারেনি। শুক্রবার যে হাজার দেড়েক মানুষ প্রথম পহেলগাঁও হয়ে চন্দনওয়ারি দিয়ে ঢুকেছিলেন, তাঁদেরই ২৫০ জনের স্বপ্ন সফল হল রবিবার।
[ অবিরাম তুষারপাত ও বর্ষণ, অমরনাথের যাত্রাপথে আটকে অসংখ্য যাত্রী ]
শনিবার আবহাওয়া আরও খারাপ হয়ে যাওয়ায় গেট বন্ধ রাখা হয়েছিল। আকাশের হাসিমুখ দেখে রবিবার যা খুলে দেওয়া হল এবং তারপরই যে জনস্রোত ঊর্ধ্বশ্বাসে সোজা পিশুটপের দিকে আগুপিছু না ভেবে দৌড় লাগাল তা ঘণ্টা তিনেক পর শিয়ালদহে কোনও শাখার ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢুকলে ঝাঁপিয়ে পড়া ঘর ফেরত যাত্রীদের ছবিটাকে মনে করাল। আগ্নেয়াস্ত্রধারী জওয়ান, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সতর্কতা, সরকারি কর্তাদের চোখরাঙানিকে তুচ্ছ করে হুড়মুড়িয়ে সোজা পাহাড়ি পথের অবিন্যস্ত মিছিল যেন কলকাতার ব্রিগেডমুখী জনতা। পায়ে পায়ে ঠোক্কর খাচ্ছে। কিন্তু হাতের পতাকা উড্ডীয়মান।
জম্মু, কাটরাতে বৃষ্টি হলেও পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ফুঁসতে থাকা লিডার, ঝিলম নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। জারি হয়েছে সতর্কতা। কাশ্মীরের মানুষ ২০১৪ সালের ‘সিঁদুরে মেঘ’ দেখছেন, যেবার প্রাণহানি হয়েছিল বহু। তার উপর চলছে বরফপাত। তবে শেষনাগে যেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছি, সেখানে হাজির হওয়া যাত্রীরা থাকার জায়গা পেয়েছেন। খাবার নিয়ে সমস্যা নেই। কিন্তু দৃশ্যমানতা সেই একই। সামনে কিচ্ছুটি দেখা যাচ্ছেনা। ফলে ধোঁয়াশা কাটছেই না।
[ বৃষ্টিতে স্থগিত অমরনাথ যাত্রা, অস্থায়ী তাঁবুতে জারি কড়া নজরদারি ]
বালতালে সকালে ঘোষণা হয়েছিল যাত্রীদের ছাড়া হবে। সেইমতো অমরনাথগামী কয়েক হাজার মানুষ সেখানে হাজির হয়ে যান। কিন্তু দুর্যোগ নেমে আসায় গেট কিছুক্ষণের মধ্যেই বন্ধ করতে বাধ্য হয় প্রশাসন। ফলে সব মিলিয়ে অমরনাথ নিজেই তাঁর দর্শনের আশা এবং আশঙ্কার দোলাচলে রেখে দিলেন পুণ্যার্থীদের। ব্যতিক্রম ভাগ্যবান আড়াইশো জন।
এছাড়া সোমবার জম্মু থেকে ৫ হাজার ৭৯১ জন তীর্থযাত্রী রওনা হয়েছেন অমরনাথের উদ্দেশ্যে। দু’টি দলে ভাগ হয়ে মোট ২০১টি গাড়িতে রওনা হয়েছেন তাঁরা। প্রথম দলে গিয়েছেন ৪ হাজার ৪৭ জন যাত্রী। দ্বিতীয় দলে ১ হাজার ৭৪৪ জন যাত্রী গিয়েছেন। প্রতিটি গাড়ির জন্য রয়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পুলিশ সূত্রে জানা প্রথম দলটি পহেলগাঁও বেস ক্যাম্পে রওনা হয়েছে। দ্বিতীয় দলটি বালতালের দিকে গিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.