সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের জোট বেধে পথে নামলেন অন্তত ৫০ হাজার কৃষক৷ ঋণমকুবের দাবিতে মহারাষ্ট্রের কৃষকদের ‘লংমার্চে’র পর এবার বুলেট ট্রেনের বিরোধিতায় পথে নামলেন ৬০ গ্রামের অন্তত ৫০ হাজার কৃষক৷ প্রায় এক মাসের ব্যবধানে ফের কৃষক বিদ্রোহে নতুন করে সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে ফড়ণবিস সরকার৷
সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, মুম্বই-আহমেদাবাদ বুলেট ট্রেন ও মুম্বই-ভদোদরা এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের জন্য অন্তত এক হাজার একর জমি অধিগ্রহণ করবে সরকার৷ এই অধিগৃহীত জমির সিংহভাগ চাষের জমি৷ কৃষিজমি অধিগ্রহণের প্রতিবাদ জানিয়ে লাল ঝান্ডা হাতে পথে নামেন থানে ও পালঘর জেলার ৬০টি গ্রামের অন্তত ৫০ হাজার কৃষক৷ এদিনের প্রায় দেড় কিলোমিটার লম্বা এই মিছিল থেকে দাবি ওঠে, বিকল্প ব্যবস্থা ছাড়া কোনওভাবে জমি অধিগ্রহণ হতে দেওয়া যাবে না৷ এদিনের বিশাল মিছিলের পর দাহানু সমুদ্র সৈকতে জনসভাও করা হয়৷ ওই জনসভা থেকে আগামী দিনের আন্দোলনের কর্মসূচি সম্পর্কেও বিস্তারিত জানানো হয়৷
এদিনের এই আন্দোলন কর্মসূচি প্রসঙ্গে সর্বভারতীয় কিষান সভার সম্পাদক অশোক দেওয়াল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘বুলেট ট্রেন চালু হলে এখানকার কৃষকদের কোনও ভাল হবে না৷ বরং চাষের জমি অধিগৃহীত হবে৷ হারাবে অন্য সংস্থানের শেষ সম্বল৷ এর বিরুদ্ধে আজ আমাদের লড়াই চলছে৷ আমরা চাই, কৃষকদের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করুক সরকার৷’’ এর আগেও ঠিক একই ভাবে সংগঠিত আন্দোলন করে গোটা বিশ্বের নজর কেড়েছিল মহারাষ্ট্রের কৃষকদের ‘লং মার্চ’৷ কৃষকদের সম্মিলিত শক্তি এক হলে আজও যে প্রশাসন মাথা ঝোঁকাতে বাধ্য হয়, তার প্রমাণ করে দেখিয়ে দেন মহারাষ্ট্রের কৃষকরা৷ কৃষকদের হাতে ধরা লাল নিশান আর জনসমুদ্রের সামনে নতিস্বীকার করতে তখন বাধ্য হয় ফড়ণবিস সরকার। মেনে নেওয়া হয় সমস্ত দাবি-দাওয়া।
গত মার্চের শুরুর দিকে ধীরে ধীরে সংগঠিত শক্তির শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ দেখে গোটা দেশ। ঋণমকুব থেকে শুরু করে প্রায় কয়েক দফা দাবিতে শুরু হয় মিছিল। তবে তার প্রেক্ষাপটটা আজকের নয়। দীর্ঘদিনের দাবি ও বিচ্ছিন্ন আন্দোলনেও প্রশাসনের টনক নড়েনি। যেটুকু সাহায্য মিলেছিল তাও যৎসামান্য। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটেছে কৃষক আত্মহত্যার ঘটনা। তবু তেমন কোনও উদ্যোগ সরকারের তরফে নেওয়া হয়নি, যার জেরে কৃষকরা ভরসা পেতে পারেন। বাজেটে বহু ঘোষণা হয়েছে ঠিকই কিন্তু কৃষকদের অভিযোগ, প্রতিশ্রুতিই সার। সমস্যার সুরাহা হচ্ছে না। মহারাষ্ট্র থেকে তামিলনাড়ু, একই ছবি। এই প্রেক্ষিতেই সংগঠিত হন কৃষকরা। মারাঠাভূমে হয় কৃষকদের গণ অভ্যুত্থান। সমর্থন জানায় মধ্যবিত্তরাও। অবশেষে সে আন্দোলনেও সার্থকতা পায়৷ কৃষকদের সব দাবি মেনে নেয় মহারাষ্ট্র সরকার৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.