স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: দিল্লির (Delhi) জাহাঙ্গিরপুরী এলাকায় হনুমান জয়ন্তীর (Hanuman Jayanti) শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে হিংসা ছড়ানোর ঘটনায় কড়া পদক্ষেপ সরকারের। মূল অভিযুক্ত পাঁচজনের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে মামলা রুজু করা হল। এই পাঁচ অভিযুক্তের নাম আনসার, সালিম, ইমাম শেখ, দিলসাদ ও আহির। এই হিংসার ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি হিংসায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। এখনও পর্যন্ত মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সন্ত্রাসবাদী যোগের তদন্ত করতে এনআইএ-কে দায়িত্ব দেওয়ার আবেদন করেছে বিজেপি।
ইতিমধ্য়েই মূল অভিযুক্ত মহম্মদ আনসারকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। আনসার পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার ডোকারের বাসিন্দা। এছাড়াও ওই ঘটনায় বাংলার আরও কয়েকজনকে এদিন গ্রেপ্তার ও আটক করেছে পুলিশ। যার মধ্যে রয়েছে আসলাম নামে এক ব্যক্তি, একই পরিবারের এক নাবালক-সহ ছ’জন। সুখেন সরকার, সুরেশ সরকার, তাঁদের জামাই সুজিত ও এক নাবালক-সহ সুখেনের তিন ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে আনসারের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে ভারতীয় জনতা পার্টি ও আম আদমি পার্টির মধ্যে চাপানউতোর চরমে উঠেছে। বিজেপি সাংসদ মনোজ তিওয়ারির দাবি, আনসার আপ-এর কর্মী। পালটা আপ নেতৃত্বের বক্তব্য, আনসার বিজেপি সদস্য। পাঁচ বছর আগে উত্তর দিল্লি পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বিজেপি প্রার্থী সঙ্গীতা বাজাজের প্রচারে তাকে দেখা গিয়েছিল। আনসারকে ঘটনার ‘মাস্টারমাইন্ড’ বলে চিহ্নিত করেছে দিল্লি পুলিশ। ২০২০ সালে দিল্লিতে সিএএ বিরোধী আন্দোলনেও আনসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। এতজন বাঙালির যোগ মেলায় তদন্তে এবার পশ্চিমবঙ্গে যেতে পারে দিল্লি পুলিশ।
ধৃত সুখেনের স্ত্রী দুর্গা ষড়যন্ত্রের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “বেছে বেছে আমাদের পরিবারের লোককেই গ্রেপ্তার করা হল। ওখানে তো অন্য আরও অনেক পরিবার ছিল। আমাদের কেউ কোনও অশান্তি করেনি।” কিন্তু দিল্লি পুলিশ তা মানতে নারাজ। এদিন দিল্লির পুলিশ কমিশনার রাকেশ আস্থানা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে তদন্তের রিপোর্ট জানিয়েছেন।
পুরনো কিছু ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে তাঁর বক্তব্য, ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত। খতিয়ে দেখা হচ্ছে মূল অভিযুক্তের মোবাইল ও তার কল ডিটেলস। বিনা অনুমতিতে মিছিল বের করায় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, বজরং দল ও তাদের সদস্যদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। বিজেপি বিধায়ক নন্দ কিশোর গুর্জর আবার এই ঘটনায় পাক যোগের দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের মদতে হয়েছে এই অশান্তি।” তবে শুধু পাকিস্তানেই থেমে থাকেনি বিতর্ক। একটি সূত্রের দাবি, এই ঘটনায় বাংলাদেশি যোগও ঘুরছে তদন্তকারীদের মাথায়। দীর্ঘদিন থেকেই নাকি ওই এলাকায় অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের থাকার অভিযোগ ছিল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.