সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধৃতদের অনেকের বিরুদ্ধেই প্রমাণ নেই। উলটে যারা গ্রেপ্তার করেছিল, অধিকাংশ প্রমাণ সেই পুলিশের বিরুদ্ধেই। CAA বিরোধী আন্দোলনে গত ডিসেম্বর থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা উত্তরপ্রদেশে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে ধৃত অর্ধেককেই প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস করে দিল বিজনৌরের আদালত। ধৃত ৮৩ জনের মধ্যে ৪৮ জনই মুক্তি পেলেন।
উত্তরপ্রদেশের কানপুর, বিজনৌর, লখনউ-সহ একাধিক জেলা গত বছরের শেষ থেকে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে। সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভে শামিল হন। বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। পরিস্থিতি দমনে কড়া পদক্ষেপ নেয় পুলিশ। লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস, গুলিতে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পিছপা হননি আইনরক্ষকরা। সংঘর্ষে জড়িয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটেছে। সেই মৃত্যুর তদন্তে নেমে বিজনৌরের পুলিশ ৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। এফআইআরে বলা হয়, একদল উন্মত্ত জনতা বিক্ষোভের নামে তাণ্ডব চালিয়েছে। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, পুলিশের দিকে পাথর, গুলি ছোঁড়ার মতো গুরুতর অপরাধে জড়িত তারা।
দিন দুই আগে বিজনৌরের আদালতে ধৃতদের তোলা হলে বিচারক বলেন, “পুলিশের এফআইআরে বলা হয়েছিল যে উত্তেজিত জনতা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়েছে। কিন্তু আদালতে পেশ করা প্রমাণের মধ্যে জনতার কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া কোনও অস্ত্র নেই। সরকারি আইনজীবী এরকম কোনও প্রমাণ পেশ করতে ব্যর্থ।” তিনি আরও বলেন, “এফআইআরে এও বলা হয়েছিল, জনতা সরকারি ও বেসরকারি গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে। অথচ কোনও বেসরকারি গাড়ি সংস্থার তরফে কোনও অভিযোগই দায়ের হয়নি। যে ১৩ জন পুলিশকর্মী ‘গুরুতর জখম’ হয়েছেন বলে দাবি করেছেন, পরবর্তী সময়ে শারীরিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে তাঁদের আঘাত অত্যন্ত সামান্য।” অর্থাৎ প্রতি পদেই পুলিশের অভিযোগের সঙ্গে পেশ করা প্রমাণের ফারাক বিস্তর। তাই অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়নি আদালতের কাছে।
এক ধৃতের আইনজীবীর মতে, আদালতের রায়ই প্রমাণ করে যে পুলিশের অভিযোগের সবটাই সাজানো ছিল। অনেক জায়গায় পুলিশ নিজেই হিংসায় ইন্ধন যুগিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। বিজনৌরের আদালতের বিচারকের বক্তব্যও সেই অভিমুখেই। সবমিলিয়ে, যোগী রাজ্যে CAA বিরোধিতায় পুলিশের পদক্ষেপ বেশ সমালোচনার মুখে পড়ল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.