ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিছুতেই থামছে না করোনার মৃত্যুমিছিল। ভারতে অতিমারীর প্রকোপে রীতিমতো বেসামাল রাজধানী দিল্লি। এহেন সংকটকালে করোনা ভাইরাস নিয়ে রাজধানীতে সিরো সার্ভে (Sero survey) করা হয়েছিল৷ দিল্লি সরকার ও ‘National Center for Disease Control’-এর এই সমীক্ষার ফল সামনে আসতেই আঁতকে উঠেছে চিকিৎসক মহল ও প্রশাসন। এই রিপোর্ট অনুযায়ী গত ৬ মাসে দিল্লির ২৩.৮৪ শতাংশ মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন৷ অথচ তাঁদের মধ্যে সংক্রমণের কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি৷ অর্থাৎ রাজধানীর ২ কোটি মানুষের মধ্যে করোনা আক্রান্ত প্রায় ৪৭ লক্ষ। অর্থাৎ জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই প্রতি চারজন দিল্লিবাসীর মধ্যে একজনের শরীরে প্রবেশ করেছে করোনা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বিবৃতি মতে, মানুষের মধ্যে যে পরিমাণ দ্রুততার সঙ্গে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে সেটা মাথায় রেখেই সিরো সার্ভে করানো হয়েছিল৷ দিল্লির ১১ টি জেলাতেই চালানো হয় সমীক্ষা৷ পরীক্ষা করা হয় ২১,৩৮৭টি স্যাম্পল। জুলাই মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত চলা এই সার্ভের সময় লোকের বাড়ি বাড়ি গিয়ে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়৷ সেই নমুনা ল্যাবরেটরিতে টেস্ট করাতেই মাথায় হাত৷ তাঁদের মতে ২৩.৪৮ শতাংশ মানুষের রক্তে করোনা ভাইরাসের অ্যান্টিবডি (IgG antibodies) তৈরি হয়ে গিয়েছে৷ এই সার্ভে প্রমাণ করল একটা বড় অংশের মানুষের ইতিমধ্যেই করোনা সংক্রমণ হয়ে গিয়েছে এবং অজান্তেই তাঁরা অ্যাসিম্পটম্যাটিক অর্থাৎ উপসর্গহীন থাকা অবস্থায় সেরে গিয়েছেন৷ এই বিষয়ে ভাইরোলজিস্ট শাহিদ জামিল জানিয়েছেন, এপর্যন্ত দিল্লিতে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজার ৬৬৩ জনের। ফলে এখানে মৃত্যুর হার ০.০৮ শতাংশ, যা দেশজুড়ে আইসিএমআর-এর চালানো সেরো সার্ভের কাছাকাছি। এরত ফলে তিনটি জিনিস স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে–দ্রুত গতিতে সংক্রমণ বাড়ছে, মৃত্যুর হার এখনও কমেনি ও হার্ড ইমিউনিটি থেকে আমরা অনেক দূরে।
এদিকে, মঙ্গলবার সেরো সার্ভের রিপোর্ট প্রকাশ পেতে রীতিমতো চমকে উঠেছে দিল্লি প্রশাসন ও স্বাস্থ্যমন্ত্রক। যদিও মন্ত্রকের দাবি, লকডাউনের জেরে অনেকটাই সংক্রমণ ঠেকানো গিয়েছে। দিল্লির মতো জায়গায় করোনা ছড়িয়ে পড়া খুব সহজ কারণ এখানে জনঘনত্ব অত্যন্ত বেশি৷ দিল্লি সরকারের কড়া পদক্ষেপে তাও সংক্রমণ খানিকটা হলেও কমেছে৷ এই সার্ভেতে প্রমাণিত হয়েছে ফেস শিল্ড, মাস্কের ব্যবহার করলে এই মারণ রোগের সংক্রমণ অনেকটা কমানো যায় ৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.