সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কুকি-মেতেই জাতি দাঙ্গার উত্তাপ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। প্রাণ বাঁচাতে অনেক মেতেই সম্প্রদায়ের মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন পড়শি রাজ্য মিজোরামে। কিন্তু সেখানেও প্রশ্ন উঠেছে তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে। প্রাক্তন সন্ত্রাসবাদীদের কাছ থেকে আইজল ছেড়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি পেয়েছিলেন তাঁরা। যদিও তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করেছিল মিজোরামের সরকার। এবার নিজেদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আইজল ছাড়লেন ৪১জন। আশ্রয় নিলেন অসমে।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, মিজোরামে শরণার্থী হিসাবে থাকা মেতেইদের মধ্যে ৪১জন অসমে চলে গিয়েছেন। সেখানকার কাছার জেলার পুলিশ সুপার নুমল মাহাত্তা জানিয়েছেন, “শনিবার রাতে ওঁরা শিলচরে এসে পৌঁছেছেন। যারা এসেছেন তাঁরা সকলেই সচ্ছ্বল পরিবারের এবং নিজেদের গাড়িতেই এখানে এসেছেন। ওনাদের মধ্যে কেউ কেউ কলেজের প্রফেসর, কেউ কেউ সরকারি উচ্চপদস্থ আধিকারিক। তাঁরা জানিয়েছেন, মিজোরামে এখনও পর্যন্ত তাঁদের উপর কোনও আক্রমণ হয়নি। সেখানকার প্রশাসন তাঁদের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দিয়েছে। কিন্তু তাঁরা নিজেরাই নিজেদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এখানে চলে এসেছেন। যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে ততদিন তাঁরা এখানেই থাকবেন।” তিনি আরও জানিয়েছেন, ” শরণার্থীদের বিন্নাকান্দি এলাকার লখিপুর ডেভেলপমেন্ট ব্লকের একটি আবাসনে রাখা হয়েছে। অসম পুলিশ-প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁদের সমস্ত নিরাপত্তা দেওয়া হবে।”
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার এক বিবৃতি জারি করেছিল সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসা মিজো জঙ্গিদের সংগঠন ‘পিস অ্যাকর্ড এমএনএফ রিটার্নিস অ্যাসোসিয়েশন (PAMRA)’। সেখানে বলা হয়, আইজল থেকে মেতেইরা যেন দ্রুত রাজ্য ছেড়ে চলে যায়। মণিপুরে কুকি-জো-দের উপর চলা অত্যাচারে মিজোরামের মানুষ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। কোনও হামলা হলে সেই দায় মেতেই শরণার্থীদেরই।
ওই হুমকির পর মেতেইদের নিরাপত্তার নিয়ে মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী এন বিরেন সিংকে আশ্বস্ত করেছিলেন মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী জোরামথাঙ্গা। তিনি জানিয়েছিলেন, “মেতেইরা মিজোরামে নিরাপদে থাকবেন।” সেইমতো এই মেতেই শরণার্থীদের সমস্ত নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শরণার্থীদের একাংশ কোনও ঝুঁকি নিতে চাননি। তাঁরা অসমে চলে এসেছেন।
উল্লেখ্য, মণিপুরে তিনমাস ধরে চলতে থাকা জাতি দাঙ্গায় এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৫০ জন। রাজ্যে হিংসা থামাতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। ঘরছাড়া লক্ষাধিক মানুষ। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে অসম, মিজোরামের মতো পড়শি রাজ্যে চলে গিয়েছেন অনেকেই। এই হিংসার আঁচ পড়েছে উত্তর-পূর্বের অন্যান্য রাজ্যগুলিতেও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.