অবশ্যই পড়ুন এই প্রতিবেদন৷
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আজ ৪৭তম নৌবাহিনী দিবস৷ এই বিশেষ দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে এদিন দেশজুড়ে একাধিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ভারতীয় নৌসেনা ও কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক৷ ভারতীয় নৌসেনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং, চিফ অ্যাডমিরাল সুনীল লাম্বা-সহ একাধিক ব্যক্তিত্ব৷ টুইট করে নৌবাহিনীর সমস্ত অফিসার, নাবিক ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ জানিয়েছেন, যেকোনও প্রতিকূল সময়ে দেশের নিরাপত্তায় যেমন ভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে ভারতীয় নৌবাহিনী, তার জন্য কৃতজ্ঞ দেশ৷ ভারতীয় নৌবাহিনীর কাজে সমগ্র দেশ গর্বিত বলে জানান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ৷
Navy Day greetings to all valorous personnel of the Indian Navy and their families. India is grateful to our Navy for protecting the nation and the commendable role the Navy plays during disaster relief.
— Narendra Modi (@narendramodi) December 4, 2018
ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রাথমিক দায়িত্ব দেশের সামুদ্রিক সীমা সুরক্ষিত রাখা। এছাড়াও যৌথ মহড়া, বন্দর পরিদর্শন এবং বিপর্যয়ের সময় ত্রাণকাজের মতো জনকল্যাণকর কাজে নৌবাহিনীকে ব্যবহার করা হয়৷ তথ্য বলছে, জওয়ান, আধিকারিক ও সবধরনের কর্মচারী মিলিয়ে বর্তমানে ভারতীয় নৌবাহিনীতে কর্মরত রয়েছেন ৬৭,২২৮ জন৷ নৌসেনার অস্ত্রাগারে মজুত রয়েছে, একটি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার, আটটি ল্যান্ডিং শিপ ট্যাংক, ১১টি ডেস্ট্রয়ার, একটি পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন, একটি ব্যালেস্টিক মিসাইল সাবমেরিন, ১৪টি সাধারণ সাবমেরিন ও একটি মাইন প্রতিরোধী ভেসেল৷ ৪৭-তম নৌসেনা দিবস উপলক্ষে এই বিশেষ প্রতিবেদনে রইল ভারতীয় নৌবাহিনী নিয়ে বেশ কিছু তথ্য, যেগুলি পড়লে আপনি অবাক হবেন৷
[একই গান বারবার শোনানোর অনুরোধ, রাগে দুই যুবককে গুলি করাল ডিজে]
On Navy Day, my good wishes to all men and women of the Indian Navy. Nation is proud of your commitment to protecting our maritime frontiers, securing our trade routes, and providing assistance in times of humanitarian emergencies #PresidentKovind
— President of India (@rashtrapatibhvn) December 4, 2018
১. ১৬১২ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সশস্ত্র বাহিনীর সর্বোচ্চ নৌশাখা ‘রয়্যাল ইন্ডিয়ান নেভি’ গঠন করে৷ স্বাধীনতার পর, ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি সেই বাহিনীর নাম পালটে রাখা হয় ভারতীয় নৌবাহিনী৷
২. উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ভারতীয় নৌবাহিনী যেদিন গঠিত হয়, সেই দিনটিকে কিন্তু নৌবাহিনী দিবস হিসাবে পালন করা হয় না৷ ১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর পাকিস্তানের করাচিতে পাক নৌসেনার সদর দপ্তরে হামলা চালায় ভারতীয় নৌসেনা বাহিনী৷ ১০০ শতাংশ সাফল্য পায় ‘অপারেশন ট্রাইডেন্ট’৷ ওই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতেই নৌবাহিনী দিবস পালন করার প্রথা শুরু হয়৷
৩. একাত্তরের যুদ্ধে, ভারতীয় নৌবাহিনী বেছে বেছে পাকিস্তানের তেলের খনি, ট্যাঙ্কারগুলিকে ধ্বংস করে৷ এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার বা রণতরী থেকে মিসাইল ছুঁড়ে, অ্যান্টি-শিপ ক্রুজ মিসাইল ব্যবহার করে ওই যুদ্ধে পাকিস্তানকে ধরাশায়ী করেছিল ভারত৷ সে সময় ওরকম ‘অল-আউট অ্যাটাক’-এর পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা মুখের কথা ছিল না৷ কিন্তু সেই অসাধ্য সাধন করতে পেরেছিলেন নৌসেনা বাহিনীর সদস্যরা৷
[বুলন্দশহর কাণ্ডে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত, তদন্ত রিপোর্ট চাইলেন যোগী]
৪. ভারতীয় নৌসেনায় বর্তমানে ৫৮ হাজার জন কর্মরত সদস্য রয়েছেন৷ সামরিক হাতিয়ারের দিকে নজর দিলে, ভারতের কাছে রয়েছে দু’টি এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার সমৃদ্ধ দৈত্যাকৃতির সামরিক নৌবহর, এক উভচর পরিবহণ বন্দর, ১৯টি ল্যান্ডিং শিপ ট্যাঙ্ক, ১০টি ডেস্ট্রয়ার, ১৫টি রণতরী, একটি পারমাণবিক সাবমেরিন, ১৪টি সাবমেরিন, ২৫টি করভেটস, ৪৭টি পেট্রল ভেসেল, ৪টি দ্রুতগামী ট্যাঙ্কার, একটি মিসাইল সাবমেরিন-সহ অন্যান্য সামরিক সরঞ্জাম৷
৫. বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার আইএনএস বিরাট হল ভারতের প্রথম রণতরী৷ ভারতীয় নৌবাহিনীর দ্বিতীয় রণতরীর নাম আইএনএস বিক্রমাদিত্য৷ আইএনএস বিক্রান্ত এ দেশে তৈরি প্রথম এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার৷
৬. ভারতীয় রণতরীগুলিকে নেতৃত্ব দেয় ৬ হাজার টনের নিউক্লিয়ার পাওয়ার্ড ব্যালিস্টিক মিসাইল সাবমেরিন আইএনএস অরিহন্ত৷ রাষ্ট্রসংঘের পাঁচ স্থায়ী সদস্য দেশ ব্যতীত একমাত্র ভারতের কাছেই এরকম একটি ডুবোজাহাজ রয়েছে৷
৭. ভারতের মেরিন কমান্ডো বাহিনীর নাম ‘মার্কোস’৷ যার প্রত্যেক সদস্যকে বলা হয় সমুদ্রের সিংহ৷ অনেকে আবার মার্কোস কমান্ডোদের ‘কুমির’ বলেও ডাকেন৷ কারণ, জলের তলায় বা বাইরে, এই কমান্ডোদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শত্রুদের পক্ষে বেঁচে ফেরা সম্ভব নয়৷ জঙ্গিরা এই বাহিনীকে ডাকে ‘দাড়িওয়ালা ফৌজ’ বলে৷ কারণ, স্পর্শকাতর অঞ্চলে এই কমান্ডোরা ছদ্মবেশে থাকতে নকল লম্বা দাড়ি ব্যবহার করতেন৷ ২০০৮-এর অভিশপ্ত মুম্বই হামলায় পণবন্দীদের উদ্ধার অভিযানে এই ‘কুমিরবাহিনী’ চূড়ান্ত সাফল্য পেয়েছিল৷ মজার বিষয়, এই কমান্ডোরা কে, কোথায় থাকেন, সেটা প্রতিরক্ষা বাহিনীর হাতেগোনা কয়েকজন আধিকারিক ছাড়া অন্য কেউ জানেন না৷ এতটাই সযত্নে তাঁদের পরিচয় গোপন রাখা হয়৷
[‘জিও কাজ করছে না’, দীপবীরের রিসেপশনে বিদ্রুপের মুখে আম্বানি]
৮. গোটা বিশ্বের মাত্র তিনটি দেশের নৌবাহিনীর ‘ন্যাভাল এরোব্যাটিক টিম’ রয়েছে৷ ভারতীয় নৌবাহিনীর ‘সাগর পবন’ তাদের মধ্যে একটি৷
৯. ভারতীয় নৌবাহিনীর সদস্যরা উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু অভিযান সাফল্যের সঙ্গে সম্পন্ন করেছেন৷ ২০০৮-এর ৯ এপ্রিল ভারতীয় নৌবাহিনীর দশ সদস্যের একটি দল উত্তর মেরু অভিযানে সফল পেতেই তৈরি হয় নয়া ইতিহাস৷ বিশ্বের গুটিকয়েক দেশের নৌবাহিনীর সদস্যরাই উত্তর, দক্ষিণ ও মাউন্ট এভারেস্ট জয় করে ‘থ্রি পোলস অ্যাডভেঞ্চার চ্যালেঞ্জ’-এ উত্তীর্ণ হতে পেরেছেন৷ ভারতীয় নৌসেনার মুকুটে রয়েছে সেই পালকও৷
১০. ভারতই একমাত্র দেশ, যেখান থেকে একজন ডুবোজাহাজে কর্মরত সদস্য মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানে গিয়েছেন৷ ২০০৪ সালের ১৮ মে সার্জেন্ট লিউটেন্যান্ট ভাইকিং ভানু, একজন নেভি ডাক্তার, মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট রাকেশ কুমার ও বিকাশ কুমারকে নিয়ে তৈরি ভারতীয় নৌসেনার একটি টিম মাউন্ট এভারেস্ট জয় করে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.