সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মায়ানমারে তুঙ্গে গৃহযুদ্ধ। শুরুর দিকে জুন্টার পাল্লা ভারী থাকলেও ক্রমে শক্তিবৃদ্ধি করছে বিদ্রোহীরা। পড়শি দেশে লাগাতার চলা এই রক্তক্ষয়ী সংঘাতের আঁচ পড়ছে ভারতেও। মিজোরামে নেমেছে শরণার্থীর ঢল। উদ্বিগ্ন মণিপুরও। শুধু তাই নয়, বিদ্রোহীদের মারে কোণঠাসা বার্মিজ সেনার জওয়ানরাও আশ্রয় নিচ্ছেন মিজোরামে।
দীর্ঘদিন ধরেই মায়ানমারে গণতন্ত্রকামী বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সঙ্গে বার্মিজ সেনা তথা ‘টাটমাদাও’-য়ের লড়াই চলছে। ক্রমশ কোণঠাসা হচ্ছে দেশটির সামরিক বা জুন্টা সরকার। রবিবার প্রতিবেশী দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস’ (পিডিএফ) মায়ানামার সেনার দুটি ঘাঁটি দখল করে ফেলে। মিজ়োরামের চাম্পেই জেলা লাগোয়া সীমান্তের অদূরে মায়ানমার সেনার রিখাওদর এবং খাওমাওয়ি ছাউনি দুটি বিদ্রোহী বাহিনী দখল করেছে বলে খবর। প্রাণ বাঁচাতে সীমান্ত পেরিয়ে মিজোরামে ঢুকে পড়েন মায়ানমার সেনার জওয়ানরা। সোমবার বিকালে মিজোরাম পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেন ৩৯ জন জওয়ান বলে খবর। একই সঙ্গে নেমেছে শরণার্থীর ঢল। মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা এই কুকি-চিন গোষ্ঠীর মানুষরা মণিপুরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত করে তুলতে পারেন বলে আশঙ্কা। এদের হাতিয়ার করতে পারে কুকি জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো বলেও মনে করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার এই বিষয়ে মিজোরাম পুলিশের আইজিপি লালবিয়াকথাঙ্গা খিয়াংতে জানিয়েছেন, “মায়ানমার সীমান্তের দুই সেনা ঘাঁটিতে হামলা চালায় পিডিএফ। দখল করে নেওয়া হয় ওই ঘাঁটিগুলো। যার জেরে মায়ানমারের সেনা জওয়ানরা মিজোরামে আশ্রয় নিতে শুরু করেন। গতকাল বিকেলে তাদের মধ্যে ৩৯ জন জওয়ান মিজোরাম পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। আমরা সকলকে নিরাপত্তাবাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছি। মিজোরাম পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করা মোট বার্মিজ সেনা আধিকারিকের সংখ্যা ৪২। একই সঙ্গে মায়ানমারের প্রায় ৫ হাজারের উপর নাগরিক সীমান্তবর্তী দুই গ্রামে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ২০জন আহত ছিলেন। আহতদের আইজলে পাঠানো হয়েছে চিকিৎসার জন্য। গতকাল রাত থেকে সীমান্তে আর কোনও সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি। তবে আমরা জানি না মায়ানমারের সেনা আকাশপথে হামলা চালাবে কিনা। সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারছি না।”
#WATCH | Aizawl, Mizoram | IGP (Headquarters), Lalbiakthanga Khiangte says, “On Sunday evening, PDF of Myanmar attacked Myanmar Army post along the Myanmar border. Yesterday evening, two Myanmar posts were captured by the PDF. As a result, the Myanmar Army started taking shelter… https://t.co/FdXVFlAZzk pic.twitter.com/MyFyaTpQcf
— ANI (@ANI) November 14, 2023
উল্লেখ্য, গণতন্ত্রের দাবিতে উত্তাল মায়ানমার (Myanmar)। মায়ানমারের উত্তর-পশ্চিমে সাগাইং প্রদেশে সরকারি বাহিনী ও পিডিএফের মধ্যে এই সংঘর্ষ বহুদিনের। পালটা ফৌজের নিপীড়নে প্রাণ হারিয়েছেন কয়েক হাজার গণতন্ত্রকামী। সেনাশাসন শেষ করতে তীব্র যুদ্ধ চালাচ্ছে বিদ্রোহী বাহিনী। প্রাণ বাঁচাতে বহু মানুষ ভারতে পালিয়ে আসছেন। মিজোরাম ও মণিপুরে আশ্রয় নিচ্ছে পালিয়ে আসা কুকি-চিন গোষ্ঠীর মানুষ। আশঙ্কা করা হচ্ছে মায়ানমার থেকে আসা এই শরণার্থীরাও আশ্রয় নিতে পারে মণিপুরে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.