সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের বন্যার জেরে বিপর্যস্ত অসম। চলতি বছরে এই নিয়ে দুবার বানভাসী হল ভারতের উত্তর-পূর্বের এই রাজ্য। ব্রহ্মপুত্র (Brahmaputra) নদ-সহ বাকি নদীগুলিতে জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ।
কথায় বলে উনিশ-কুড়ির ফারাক। শুনে খুব সামান্য মনে হলেও এই দুইয়ের মাঝে রয়েছে বিস্তর ফাঁক। গতবছরই মৌসুমী বায়ুর খামখেয়ালিপনায় সঠিক সময়ে বৃষ্টির দেখা মেলেনি। আর এই বিশে কাটায় কাটায় আবহাওয়া দপ্তরের কথা মত বর্ষা প্রবেশ করেছে ভারতে। আর তাতেই নাস্তানাবুদ অবস্থা অসমে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরে নাগাড়ে বৃষ্টি চলছে ভারতের উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে। জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত বন্যায় মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। ব্রহ্মপুত্র নদ-সহ বাকি শাখানদী ও উপনদীগুলিতে জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। সম্প্রতি শিবসাগর (Sivasagar) জেলার নাজিরা (Nazira) এলাকায় জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছেন একজন।
ইতিমধ্যেই অসমের বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর জানায়, অসমের জোরহাট জেলার নিয়ামতিঘাটের কাছে বিপদ সীমার উপর সিয়ে বইছে ব্রহ্মপুত্র নদের জল। এছাড়াও শিবসাগর জেলার কাছে দিখই নদীর জলস্তরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানেও বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে নদী। এছাড়াও বর্ষার জলে ফুলে ফেঁপে উঠেছে গোলাঘাট জেলার ধানসিঁড়ি নদী, সোনিতপুর জেলার জিয়া ভরলি নদী। অসমের এই দ্বিতীয় দফা বন্যায় সবথেকে খারাপ দশা ধীমাজি, শিবসাগর, জোরহাট এবং ডিব্রুগড় জেলার। এই চার জেলার প্রায় ৩০ হাজার মানুষ এখন জলবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। অন্তত ৩৬০০ হেক্টর চাষের জমি পুরোপুরি জলের তলায় ডুবে গিয়েছে। ফলে মাথায় হাত পড়েছে চাষীদের।
গত মাসেই অসমের বন্যা ও হড়পা বানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল অসমে। বন্যার জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছিল অসংখ্য ঘরবাড়ি। জলের তলায় ডুবেছিল চাষের জমি, রাস্তা। মারা গিয়েছিল একাধিক গবাদি পশুও। সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই ফের দ্বিতীয় দফা বন্যা হল অসমে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যেই বিপদ সংকুল জেলাগুলিতে পৌছে গিয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। গত ২৪ ঘণ্টায় শিবসাগর, ধীমাজি জেলার বন্যা কবলিত এলাকাগুলি থেকে অন্তত ৩০০ লোককে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শিবসাগর জেলায় ৩৩টি গ্রামে বন্যার ফলে জলবন্দি হয়েছেন প্রায় ১২ হাজার মানুষ। নদীর পাড়ে থাকা নীচু স্থানগুলি থেকে গ্রামের এই মানুষদের সরিয়ে উঁচু নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.