সন্দীপ চক্রবর্তী, ত্রিপুরা: হাজারও বাধা, হামলার মধ্যেও ত্রিপুরার (Tripura) মাটিতে তৃণমূলের আধিপত্য বিস্তারের প্রচেষ্টাকে কিছুতেই দমিয়ে রাখা যাচ্ছে না। শনিবার সোনামুড়ায় যোগদান কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়ার পথে যুব নেতা সুদীপ রাহা, জয়া দত্তদের উপর হামলা চলে। আঘাত পান দু’জনই। কিন্তু তারপরও সোনামুড়ায় সফলভাবেই যোগদান কর্মসূচি হয়ে গেল। তৃণমূলের (TMC) প্রাক্তন বিধায়ক সমীর চক্রবর্তীর হাত ধরে ৩০০ জন যোগ দিলেন সেখানে। আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘টিম ত্রিপুরা’র সদস্য হিসেবে প্রথম কর্মসূচি সফলভাবেই সামলে নিলেন সমীর চক্রবর্তী। তিনি এবং দলের আরও চার নেতা, মন্ত্রীর উপর ত্রিপুরা অভিযানের দায়িত্ব দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ত্রিপুরা জয়ের লক্ষ্যে ব্লু প্রিন্ট ছকে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বিজেপি শাসিত বিপ্লব দেবের রাজ্যজয়ের জন্য তাঁর প্রধান সেনাপতি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর নেতৃ্ত্বে কাজ করার জন্য ‘পঞ্চপাণ্ডবে’র উপর ভার দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রী ব্রাত্য বসু, বিধায়ক মলয় ঘটক, দলের রাজ্য নেতা কুণাল ঘোষ, শ্রমিক নেতা ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় এবং প্রাক্তন বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী – এই পাঁচজন পালা করে ত্রিপুরায় নজর রাখবেন। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একজন করে নেতা ত্রিপুরা সফরে যাবেন, সেখানকার সংগঠনকে চাঙ্গা করতে। আর অভিষেক নিজেও প্রতি মাসে যাবেন উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে। এছাড়া রয়েছেন তৃণমূলের তিন যুব নেতা – দেবাংশু ভট্টাচার্য, জয়া দত্ত, সুদীপ রাহা। রাজ্যের ৮টি জোনের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে তিনজনকে। ত্রিপুরার শাসকদলের শত বাধা সত্ত্বেও তাঁরা মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন এবং থাকবেনও। দলের নির্দেশ তেমনই।
অভিষেকের ত্রিপুরা সফর শুরুর আগে সেখানে গিয়েছিলেন ব্রাত্য বসু, মলয় ঘটক, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়রা। এই সপ্তাহে অভিষেক আগরতলা যাওয়ার পর কম বাধা দেওয়া হয়নি। আর তারপরই সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হুঁশিয়ারির সুরে বলেছিলেন, ”প্রতি মাসে ৪ বার করে আসব, পারলে আটকান।” এতেই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তৃণমূলের পাখির চোখ ত্রিপুরা। এত সহজে নতুন লড়াইয়ে মাটি ছেড়ে আসবে না দল। অভিষেক ফেরার পর সেখানে যান দলের নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি ত্রিপুরার রাজা প্রদ্যোৎ বিক্রম মানিক্য দেববর্মার সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেন। তা নিয়ে বিস্তর জল্পনাও তৈরি হয় রাজনৈতিক মহলে। ফলে চার নেতারই ত্রিপুরায় কর্মসূচিতে হাতে খড়ি হয়ে গিয়েছিল। বাকি ছিল সমীর চক্রবর্তীর কাজ। তিনি শনিবার ত্রিপুরা গিয়ে ৩০০ জনকে তৃণমূলে যোগদান করিয়ে বুঝিয়ে দিলেন, পঞ্চপাণ্ডবের কাজ শুরু হয়ে গেল সাফল্যের সঙ্গেই।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.