সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সময়মতো জুটল না অ্যাম্বুল্যান্স। যার জেরে রাস্তাতেই প্রাণ হারাল দু’বছরের শিশু। বিহারের জেহানাবাদ জেলার এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকের ছায়া পরিবারে।
শনিবার হঠাৎই অসুস্থ হয়ে পড়ে সুনীল মাঝি নামে ব্যক্তির বছর দুয়েকের সন্তান। ছেলেকে নিয়ে স্থানীয় সদর হাসপাতালে যান দম্পতি। কিন্তু শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে শুরু করলে চিকিৎসকরা তাকে পাটনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। মৃত শিশুর পরিবারের অভিযোগ, পাটনার হাসপাতালে স্থানান্তর করার জন্য সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে অ্যাম্বুল্যান্স দিতে অনুরোধ জানান তাঁরা। কিন্তু হাসপাতালের তরফে শুধু একটি ফোন নম্বর ধরিয়ে দেওয়া হয়। অথচ সে সময় ছেলেকে নিয়ে দিশেহারা অবস্থা মা-বাবার। তাই সময় খরচ না করে তাঁরা ঠিক করেন মোটরবাইকে চাপিয়েই পাটনা হাসপাতালে নিয়ে যাবেন ছেলেকে। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। মোটরবাইকেই ৫০ কিলোমিটারের যাত্রা শুরু করেন তাঁরা। কিন্তু গন্তব্যে পৌঁছনোর আগেই সব শেষ। জেলাশাসকের অফিসের কাছেই মারা যায় দুধের শিশু।
সন্তানকে হারিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন দম্পতি। জেলাশাসকের অফিসের দেওয়ালেই নিজের মাথা ঠুঁকতে শুরু করেন সুনীল মাঝি। স্ত্রী তখন রাস্তার মাঝে বসে বুক চাপড়ে কাঁদছেন। শিশুমৃত্যুর খবর জানাজানি হতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। ছুটে আসেন প্রশাসনের আধিকারিকরাও। দ্রুত তাঁদের জন্য একটি অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় মাঝি পরিবারের জন্য।
যদিও সদর হাসপাতালের তরফে এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করা হয়েছে। উলটে তাদের দাবি, মাঝি পরিবারই অ্যাম্বুল্যান্সে নেবে না বলে জানিয়ে দেয়। হাসপাতালের তরফে ডা. বিজয় কুমার সিনহা বলেন, “শিশুকে নিয়ে আসার পরই ওর যথাযথ চিকিৎসা শুরু হয়। কোনও সমস্যাও হচ্ছিল না। তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় আমরা শিশুটিকে পাটনা মেডিক্যালে নিয়ে যেতে বলি। হাসপাতাল অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করলেও তা নিতে অস্বীকার করেন ওই দম্পতি। বলেন, আগে বাড়ি যাবেন। পরে শুনলাম মোটরবাইকে যাওয়ার সময়ই নাকি তাঁদের সন্তান মারা গিয়েছে।” দিনকয়েক আগে প্রায় একই ঘটনা ঘটেছিল এই হাসপাতালে। অ্যাম্বুল্যান্স না পাওয়ায় তিন বছরের মৃত ছেলেকে কোলে নিয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরতে হয়েছিল এক দম্পতিকে। ফের এমন ঘটনায় হাসপাতালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয়দের।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.