সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জেলে বসেই ফোনের মাধ্যমে কাশ্মীরে অশান্তি ছড়াচ্ছে বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা এবং জঙ্গিরা। বারামুল্লা জেল থেকে ১৬টি ফোন উদ্ধারের পর এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন। সূত্র মারফত খবর পেয়ে গোটা জেলে তল্লাশি চালানোর পরেই ফোনগুলির হদিশ পায় পুলিশ।
পুলিশের অনুমান, এই ফোনগুলির সাহায্যেই জেলে বসে পাকিস্তানে নিজেদের শাগরেদদের ফোন করত জঙ্গিরা। খবর সরবরাহ করা হত। এমনকী কাশ্মীরে অশান্তি বাধানোর নির্দেশও দেওয়া হত। ওই ফোনগুলি থেকে হোয়াটসঅ্যাপের সাহায্যে পাকিস্তানেও ফোন করা হয়েছে। সেই সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্যও হাতে এসেছে পুলিশের। সেগুলিই এখন খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার প্রসঙ্গে বারামুল্লা পুলিশের এক আধিকারিক ইমতিয়াজ হুসেইন বলেন, ‘জেলে বেশ কিছু জঙ্গির কাছ থেকে ফোন উদ্ধার হয়েছে। ওরা জেলে বসে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করত। আর সেখানে বেশ কিছু পাকিস্তানি নম্বরও ছিল। তাদের কথোপকথনের প্রমাণও রয়েছে। এখন সেগুলিই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
এদিন পুলিশি তল্লাশিতে কট্টর বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা মাসারাত আলমের কাছ থেকেও দু’টি ফোন উদ্ধার হয়েছে। ২০১০ সালে কাশ্মীরে অশান্তির সময় জনগণকে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এছাড়া পাকিস্তানের সমর্থনে শ্রীনগর মিছিলও আয়োজন করেছিল মাসারাত। প্রথমে তাকে গ্রেপ্তার করা হলেও, ২০১৫ সালে কাশ্মীরে তৎকালীন ক্ষমতাসীন পিডিপি সরকার তাকে মুক্তি দিয়েছিল। পরে কেন্দ্রের চাপের কাছে নতিস্বীকার করে ফের গ্রেপ্তার করা হয় মাসারাতকে। তার কাছ ফোন উদ্ধারের প্রসঙ্গে ইমতিয়াজ হুসেইন বলেন, ‘মাসারাতের কাছ থেকে অনেককিছুই পাওয়া গিয়েছে। আমরা সেগুলি খতিয়ে দেখছি। এরপর যা যা করণীয়, তাই করবে পুলিশ।’
কয়েকদিন আগেই কাশ্মীরের এক কারা আধিকারিকের বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল জঙ্গিরা। বারামুল্লা জেলে বন্দি জঙ্গিদের উপর পুলিশ যেন কোন অত্যাচার না করে, এই মর্মে ওই কারা আধিকারিকের বাড়ির লোকজনকে হুমকিও দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, যাওয়ার সময় জঙ্গিরা নাকি তাঁর গাড়িতেও আগুন লাগিয়ে দেয়। আর এই ঘটনার জেরেই এক সপ্তাহের মধ্যে বারামুল্লা জেলে তল্লাশি চালানোর সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ। এর আগে গত মার্চ মাসে স্পানেও একই ধরনের ঘটনা ঘটে। এক পুলিশ অফিসারের বাড়িতে ঢুকে পরিবারের লোকজনদের বন্দি করে লুঠপাঠ চালায়। পাশাপাশি হুমকি দেয়, জঙ্গিদের পরিবার বা তাদের যারা সাহায্য করছে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিলে জঙ্গিরাও ছেড়ে কথা বলবে না। ওই সময় পুলিশ অফিসার বাড়িতে ছিলেন না। এছাড়া দক্ষিণ কাশ্মীরের সোফিয়ান জেলাতেও গত ২৭ মার্চ একই ঘটনা ঘটেছিল। বাড়ির দুই ছেলে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশে কর্তব্যরত। আর তাই তাঁদের বাড়িতে ঢুকে পরিবারের লোকজনকে হুমকি দেয় জঙ্গিরা। এমনকী যাওয়ার সময় শূন্যে গুলিও ছোড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সেই কারণেও পুলিশের এইধরনের অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। যাতে জেলে বসে নিজেদের সঙ্গীদের কোনও নির্দেশ আর না দিতে পারে জঙ্গিরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.