সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Modi) ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) উদ্যোগ। সন্ত্রাস-বিরোধী সম্মেলনে আন্তর্জাতিক মহলে সেভাবে সাড়া মিলল না। ফিফা বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে নিজ নিজ দেশে নির্বাচন– বিভিন্ন অজুহাতে অন্তত ১৪টি দেশ জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের উদ্যোগে আয়োজিত ‘সন্ত্রাসের জন্য অর্থ নয়’ শীর্ষক তৃতীয় মন্ত্রী পর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মলনে তারা যোগ দিতে পারছে না।
রাজনৈতিক মহলের মতে, গুজরাট ভোটের আগে মোদি-শাহকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ‘বড় নেতা’ বা ভারতের নেতৃত্বে ‘সাফল্য’ হিসাবে তুলে ধরার পরিকল্পনা করেছিল কেন্দ্র সরকার। তাদের আরও দাবি, ১৪টি দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের তাতে যোগ দিতে না চাওয়ার কারণ মোটেই ফুটবল বিশ্বকাপ বা অভ্যন্তরীণ নির্বাচন নয়। এই দুই মাসে গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সমস্ত কর্মসূচিতেই দেশগুলির প্রতিনিধিত্ব থাকে। কিন্তু ভারতের উদ্যোগকে দেশগুলি সেই গুরুত্ব দেয়নি। একে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিদেশ নীতি ও কূটনৈতিক ক্ষেত্রে বড় ব্যর্থতা হিসাবেই দেখছে রাজনৈতিক ওয়াকিবহাল মহল।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১৮ নভেম্বর থেকে শুরু হতে চলেছে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দু’দিনের আন্তর্জাতিক বৈঠক। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় অর্থের জোগান কীভাবে বন্ধ করা যায়-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা। উদীয়মান প্রযুক্তির অপব্যবহার এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থের জোগানের মতো বিপদগুলির মোকাবিলায় চ্যালেঞ্জ এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মতো বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে দু’দিনের এই বৈঠকে। সামনেই কাতার বিশ্বকাপ আর সেই কারণে ১৪টি দেশ দু’দিনের এই বৈঠকে অংশ নিতে পারবে না।
এ ব্যাপারে ইতিমধ্যেই তারা সেকথা জানিয়েছে। ভারত ৮৭টি দেশ এবং ২৬টি আন্তর্জাতিক সংস্থাকে এই সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। বেশ কিছু দেশ এখনও বৈঠকে তাদের অংশগ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করছে, আবার কিছু দেশ এই সম্মেলনে অংশ নিতে পারবে না বলেও জানিয়েছে। প্রায় ৫০টি দেশ এখনও পর্যন্ত বৈঠকে অংশ নেবে বলে জানিয়েছে এবং তাদের মধ্যে কয়েকটি দেশ প্রতিনিধি দল পাঠানোরও আশ্বাস দিয়েছে।
প্রায় ১৪টি দেশ বৈধ কারণ উল্লেখ করে অংশগ্রহণে শামিল থাকতে পারবে না বলে জানিয়েছে। ২০ নভেম্বর থেকে ফিফা বিশ্বকাপ শুরু হচ্ছে। বেশ কয়েকটি দেশ জানিয়েছে, সেই কারণে তারা সম্মেলনে যোগ দিতে পারবে না। মালয়েশিয়া অক্টোবরে সংসদ ভেঙে দেওয়ার পরে সাধারণ নির্বাচনের উল্লেখ করে জানিয়েছে, তারা এই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবে না। ইরাক জানিয়েছে যে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন থাকায় তারাও এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করতে পারবে না। বস্তুত, এই বিষয়ে প্রথম সম্মেলন ২০১৮ সালে প্যারিসে এবং দ্বিতীয়টি ২০১৯ সালে মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সূচি অনুযায়ী ভারত ২০২০ সালে এই বৈঠকের আয়োজন করবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু কোভিড মহামারীর কারণে পরিকল্পনা পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন সেই সম্মেলন দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.