সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জিএসটি (GST) ঘাটতি নিয়ে কেন্দ্রের ধারের প্রস্তাব মেনে নিল ১৩ রাজ্য। ফলে বিরোধীদের অবস্থান আরও কিছুটা কঠিন হয়ে গেল। শুধু বিজেপি শাসিত রাজ্যই নয়, ধারের প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ওড়িশার মতো দু,একটি অবিজেপি শাসিত রাজ্যও। এখনও বিরোধিতায় অনড় পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, কেরল ও ঝাড়খণ্ড।
গত মাসের শেষ দিকে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠকে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের (Nirmala Sitharaman) বক্তব্য ছিল, করোনা আবহে জিএসটি আদায় কম হয়েছে। এই অবস্থায় রাজ্যগুলিকে ধার করে সেই ঘাটতি পূরণের পথে হাঁটার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। তাতেই তীব্র আপত্তি ছিল বিরোধী রাজ্যগুলির। সবচেয়ে বেশি সরব হন জিএসটি কাউন্সিলের অন্যতম পরামর্শদাতা, পশ্চিমবঙ্গের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। কেন্দ্রের প্রস্তাবিত পথ আসলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী বলে অভিযোগ তোলেন। কারণ, দেশে অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর লাগু করার সময় কেন্দ্রের চুক্তি অনুযায়ী, প্রথম ৫ বছর রাজ্যগুলির যে ঘাটতি হবে, তা পূরণ করবে কেন্দ্র। কিন্তু তা না করে উলটে রাজ্যগুলিকেই ধারের প্রস্তাব কেন? এই প্রশ্ন তুলে অমিত মিত্রর পালটা প্রস্তাব ছিল, প্রয়োজনে কেন্দ্র ঋণ নিয়ে রাজ্যগুলির ঘাটতি মেটাক। এ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য আরেকপ্রস্ত চাপানউতোর চলে।
তবে বিরোধী রাজ্যগুলোকে চাপে ফেলে জিএসটি ঘাটতি মেটাতে ১৩টি রাজ্য কেন্দ্রের এই ধারের প্রস্তাবে সম্মতি জানাল। এর মধ্যে ১১টি রাজ্যেরই ক্ষমতায় বিজেপি অথবা এনডিএ’র কোনও জোটসঙ্গী। বিরোধীদের মধ্যে রয়েছে ওড়িশা। গোয়া, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, হিমাচল প্রদেশ-সহ আরও ৬টি রাজ্যও রাজি। তবে এখনও তারা আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের মতামত জানায়নি। অর্থাৎ জিএসটি ঘাটতি মেটাতে তারা বাজার থেকে ঋণগ্রহণের পথেই হাঁটবে।
এতে পশ্চিমবঙ্গের মতো কট্টর বিরোধী রাজ্যগুলির চাপ বাড়ল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহলের একটা বড় অংশ। জিএসটি ইস্যুতে ফের কেন্দ্রবিরোধী যে আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টায় সবে সলতে পাকানো হচ্ছিল, তা শুরুতেই ভেঙে গেল। তবে ঋণের প্রস্তাবে রাজি হওয়া বাংলার পক্ষে সম্ভব নয়। করোনা, আমফান পরিস্থিতিতে এমনিতেই রাজ্যের কোষাগারে চাপ পড়ছে। কেন্দ্রকে মাসে মাসে মোটা অঙ্কের সুদ মেটাতে হচ্ছে। ঋণের বোঝা এমনিই বেশি। তারউপর জিএসটি ঘাটতি পূরণে মোটেই ঋণের পথে হাঁটতে চায় না রাজ্য। এই পরিস্থিতিতে সবটা সামলানো নিঃসন্দেহে চাপ মমতা সরকারের কাছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.