ছবি: প্রণব সরকার।
প্রণব সরকার, ত্রিপুরা: ফের হিংসার আগুনে জ্বলে উঠল ত্রিপুরা। আগরতলার কাছেই রানিবাজার এলাকায় এক কালীমন্দিরে মূর্তি ভাঙার ঘটনাকে কেন্দ্র করে অশান্তির চরম আকার নিয়েছে। এই ঘটনার পর এলাকার অন্তত ১২টি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অসংখ্য গাড়ি। গোটা ঘটনায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে ওই এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি স্থানীয় এক কালীমন্দিরে হামলা চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। এর পর রবিবার রাতে রানিবাজারে অন্তত ১২টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। একাধিক মোটরবাইক ও পিকআপ ভ্যানে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। যদিও এই হামলায় হতাহতের কোনও ঘটনা ঘটেনি। তবে আতঙ্ক চরম আকার নিয়েছে। রাজ্য পুলিশের ডিজি অমিতাভ রঞ্জন জানিয়েছেন, ‘অশান্তি এড়াতে গোটা এলাকায় বিপুল সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। পুলিশের তরফে একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করা হয়েছে। কারা এই হামলা চালাল তার তদন্ত চলছে।’
এদিকে ঘটনার পর এলাকায় শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন তিপ্রো মোথার প্রধান প্রদ্যোৎ কিশোর মাণিক্য দেববর্মা। সোশাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, ‘রানিবাজারে যে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা ঘটেছে তা যথেষ্ট উদবেগজনক। এলাকার সকল মানুষের কাছে অনুরোধ এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখুন’। তিনি আরও লেখেন, বর্তমানে আমাদের রাজ্য প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে লড়াই করছে। এই পরিস্থিতির মাঝে কিছু মানুষ চাইছেন ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে। যাতে পরিস্থিতি থেকে নজর ঘোরানো যায়। যে ধর্মের মানুষ হোন না কেন দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াই করুন। এই কঠিন সময়ে একতাই পারে শান্তি বজায় রাখতে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে ভয়াবহ বন্যার দিশাহারা অবস্থা ত্রিপুরাবাসীর। গত ১৯ আগস্ট থেকে এখনও পর্যন্ত ত্রিপুরায় ভয়াবহ বন্যায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন। প্রায় ১.১৭ লক্ষ মানুষ গৃহহারা হয়েছেন। এই পরিস্থিতির মাঝে সাম্প্রদায়িক হিংসা মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে প্রশাসনের কাছে। রীতিমতো আতঙ্কিত এলাকাবাসী। তাঁদের আশঙ্কা যে কোনও সময় পরিস্থিতি খারাপ আকার নিতে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.