সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দু’বছর আগে জুটেছিল ‘বিদেশি’ তকমা। খাটতে হয়েছিল জেলও। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) আশা জাগিয়েছিল এবার মিলবে ভারতীয় নাগরিকত্ব। কিন্তু সে আশা পূর্ণ হল না। ‘বিদেশি’ হয়েই মারা গেলেন হলেন অসমের (Assam) ১০৪ বছরের বৃদ্ধ চন্দ্রধর দাস। বয়সজনিত অসুখে ভুগে রবিবার রাতে নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
দু’বছর আগে অসমের নাগরিকত্বের তালিকা (NRC) থেকে বাদ পড়েছিলেন। পরে শিলচরের জেলেও পাঠানো হয় চন্দ্রধরকে। যদিও তা নিয়ে জনরোষ তৈরি হওয়ায় তিন মাসের মধ্যেই ছেড়েও দেওয়া হয় শতবর্ষীয় প্রবীণ মানুষটিকে। কিন্তু নিজেকে ‘ভারতীয়’ হিসেবে আর প্রমাণ করা হল না তাঁর। প্রশাসনের কাছে বারবার আরজি জানিয়েও লাভ হয়নি।
কিন্তু এই দুর্ভোগ একেবারেই প্রাপ্য ছিল না তাঁর। ১৯৫৫ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে এদেশে আসেন চন্দ্রধর। যেহেতু ১৯৭১ সালের আগেই এদেশে এসেছেন, তাই তাঁকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে মেনে না নেওয়ার কোনও কারণ ছিল না। কিন্তু ত্রিপুরায় পাওয়া শরণার্থী সার্টিফিকেটটি সেই সময়ের কর্তৃপক্ষকে দিয়ে যাচাই করিয়ে নেননি তিনি। এতেই তৈরি হয় বিড়ম্বনা। নিজের নাগরিকত্ব আর প্রমাণ করতে পারেননি তিনি।
চন্দ্রধর দাস ‘বিদেশি’ হওয়ায় তাঁর তিন সন্তান ও নাতিনাতনিরাও গত বছরের এনআরসি তালিকা থেকে বাদ পড়ে যান। কিন্তু আশা জাগিয়েছিল সিএএ। এই আইনে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে ধর্মীয় সন্ত্রাসের শিকার অ-মুসলিমদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই আইনকে ভরসা করেই বুক বেঁধেছিলেন বৃদ্ধ। তাঁর মেয়ে নিয়তি জানিয়েছেন, তাঁর বাবার একমাত্র আকাঙ্ক্ষা ছিল এদেশের নাগরিক ঘোষিত হওয়া। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হল না। চন্দ্রধর দাস পাড়ি দিলেন সেই দেশে, যেখানে কোনও নাগরিকত্ব প্রমাণের দরকার পড়ে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.