সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাকিস্তানে গৃহবন্দি দশা। জামাত উদ দাওয়ার প্রাক্তন প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ক্রমাগত পাক সরকারকে চাপ দিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এবার হাফিজ সইদকে কোনঠাসা করতে উদ্যোগী হল ভারতের মুসলিম সমাজ। ২৬/১১ হামলার অন্যতম চক্রীর বিরুদ্ধে প্রস্তাব এনেছে দেশের সহস্রাধিক মুসলিম ধর্মীয় নেতা এবং ইমাম। মুম্বইয়ের একটি মাদ্রাসায় যা পাস হয়েছে। হাফিজকে একঘরে করতে রাষ্ট্রসংঘের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে। প্রস্তাবের কপি পাঠানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে।
মুম্বই হামলার দুঃস্বপ্ন এখনও ভোলেনি গোটা দেশ। পাক ভূখণ্ড থেকে আসা সন্ত্রাসীরা নির্বিচারে নরমেধ যজ্ঞ চালিয়েছিল। ৯ বছর আগের এই ঘটনার অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ছিল হাফিজ সইদ। দেশের সংখ্যালঘুদের একটা বড় অংশ আজও মাফ করেনি জামাত উদ দাওয়ার প্রধানকে। হাফিজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তারা উঠেপড়ে লেগেছে। এই নিয়ে সম্প্রতি মুম্বইয়ের দারুল উলুম আলি হাসান আহলে সুন্নাত-এ এক সমাবেশ হয়েছিল। যেখানে অংশ নিয়েছিলেন দেশের নানা প্রান্ত থেকে এক হাজারেরও বেশি মুসলিম ধর্মীয় নেতা এবং ইমাম। সমাবেশে তারা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দেন, হাফিজ আসলে ইসলামের শত্রু। এই নিয়ে একটা প্রস্তাব পেশ হয়। যা তুলেছিলেন মুম্বইয়ের এনজিও ইসলামিক ডিফেন্স সাইবার সেলের প্রধান আবদুর রহমান আনজারিয়া। তাঁর বক্তব্য, হাফিজ সইদ এবং তার সংগঠন বিশ্বশান্তির পক্ষে বড় হুমকি। হাফিজ ভারতকে এক নম্বর শত্রু বলেছে। আসলে জামাত নেতাই ইসলাম ও মানবতার শত্রু।
হাফিজের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ পরিচালনা করছে প্রায় ৬০টি সংগঠন। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রসংঘের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। সংগঠকদের বক্তব্য, ইসলামের নামে নিরপরাধ মানুষকে হত্যা সমর্থন বা খুনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে নীতিগতভাবে বাধ্য ধর্মীয় নেতারা। হাফিজ সইদ যে তরুণ প্রজন্মর মধ্যে হিংসা উসকে দিচ্ছেন তাতে কোনও সন্দেহ নেই। এজন্য হাফিজের বিরুদ্ধে এই অবস্থান নেওয়া হয়েছে। ১৩ পাতার ওই প্রস্তাবে কাশ্মীর প্রসঙ্গও আনা হয়েছে। বলা হয়েছে, কাশ্মীর হল ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ নিয়ে হাফিজ মাথা গলানোর কে? হাফিজকে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী বলে আগেই তাকে নিষিদ্ধ করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। তাকে ধরিয়ে দিলে ১ কোটি ডলার পুরস্কারের কথা ঘোষণা করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এত কাণ্ডের পরও পাকিস্তানে কার্যত বহাল তবিয়তে আছে হাফিজ। গৃহবন্দি থাকলেও তলে তলে সে তার সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। ভারতীয় মুসলিম সংগঠনগুলির এই তৎপরতা রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং প্রতিবেশী দেশের ওপর কতটা চাপ বাড়ায় তা নিয়ে রয়েছে কৌতুহল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.