জ্যোতির্ময় কর্মকার, নয়াদিল্লি: চলতি বছরের ডিসেম্বরই চালু হয়ে যাবে বারাণসী থেকে হলদিয়া জলপথ পরিবহণ৷ স্বয়ং কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গড়করি এ কথা জানিয়ে বলেছেন, “বহু প্রতীক্ষিত এই প্রকল্পের কাজ একেবারে শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে৷” এলাহাবাদে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারের গত দু’বছরের সাফল্য নিয়ে আলোচনার সময়ই এলাহাবাদ থেকে হলদিয়া পর্যন্ত প্রস্তাবিত জলপথ পরিবহণের প্রসঙ্গ ওঠে৷
পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০১৭-র মধ্যেই এলাহাবাদ থেকে হলদিয়া পর্যন্ত ১৬২০ কিলোমিটারে জাতীয় জলপথ পরিবহণের পরিকাঠামো তৈরি হওয়ার কথা৷ প্রাথমিকভাবে ঠিক ছিল, বারাণসীকে কেন্দ্র করে যাবতীয় পরিকাঠামোগত কাজ ২০১৭-তে শেষ হবে৷ হলদিয়া এবং সাহেবগঞ্জ টার্মিনালের কাজ শেষ হবে ২০১৮-র ফেব্রুয়ারির মধ্যে৷ কিন্তু তার আগেই ২০১৬-র ডিসেম্বরের মধ্যে হলদিয়া থেকে বারাণসী পর্যন্ত কাজ শেষ হওয়ার এই ঘোষণা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মানছেন সকলে৷
পরিকল্পনা অনুযায়ী, বারাণসী থেকে হলদিয়া পর্যন্ত নির্বিঘ্নে জলপথ পরিবহণের কাজ চালাতে রীতিমতো বড়মাপের কর্মযজ্ঞ শেষ করতে হবে৷ প্রাথমিকভাবে বারাণসী থেকে পাটনার মধ্যবর্তী গঙ্গার পলি সরানোর কাজ ব্যাপকভাবে করতে হবে৷ যদিও এই কাজ ইতিমধ্যেই অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে৷ এ ছাড়াও প্রস্তাব অনুযায়ী, ফরাক্কা বাঁধের আধুনিকীকরণের কাজও সময়মতো শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন গড়কড়ি৷
হলদিয়া থেকে বারাণসী পর্যন্ত পণ্য পরিবহণ চালু করতে হলে ফারাক্কা বাঁধের বর্তমান নেভিগেশন লককে আমূল বদলে ফেলতে হবে৷ এবং দুই দিক দিয়েই পণ্য পরিবহণ করতে একটি নতুন নেভিগেশন লকও তৈরি করতে হবে৷ প্রথমে জল্পনা ছড়িয়েছিল, বারাণসী থেকে পাটনার মধ্যে দু’টি বিশাল বাঁধ তৈরি করা হবে৷ কিন্তু পরে মন্ত্রকের তরফে এ হেন জল্পনা উড়িয়ে দিয়ে জানানো হয়, এ ধরনের কোনও পরিকল্পনা নেই৷ বরং প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগেই আমেরিকা, ব্রিটেন এবং জার্মানির তিনটি সংস্থাকে দিয়ে প্রকল্পের জন্য পরিবেশের উপর কতটা প্রভাব পড়বে তা খতিয়ে দেখা হয়েছে৷ যাচাই করা হয়েছে সামাজিক প্রভাবের সম্ভাবনার দিকগুলিও৷
ব্যবসায়িক দিক থেকেও এই প্রকল্প কতটা লাভজনক হবে তা অভিজ্ঞ সংস্থা দ্বারা আগাম খতিয়ে দেখেছে মন্ত্রক৷ সূত্রের খবর, গঙ্গার বিভিন্ন জায়গায় নাব্যতার সমস্যার কথা মাথায় রেখেই ইতিমধ্যেই পণ্য পরিবহণের জন্য ছোট জাহাজ চালাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে একাধিক সংস্থা৷ গড়করি জানিয়েছেন, প্রকল্পের কাজ পুরোপুরি শেষ হলে পণ্য পরিবহণের খরচ এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে যাবে৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.