সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শাসকদল বিজেপি ও সিপিএমের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র ত্রিপুরার চড়িলাম। ঘটনায় জখম অন্তত ২৫ জন। তাদের মধ্যে একজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। আহতদের মধ্যে পুলিশ এবং সাংবাদিকও রয়েছে।
বুধবারচড়িলাম আরডি ব্লকে বিভিন্ন দাবিতে ডেপুটেশন কর্মসূচি ছিল সিপিএমের। দলীয় কার্যালয়ের সামনে কর্মী-সমর্থকরা জড়ো হয়েছিলেন। সেখানে বক্তব্য রাখেন সিপিএমের নেতা তথা প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ভানুলাল সাহা, মহকুমা সম্পাদক পার্থপ্রতিম মজুমদার-সহ অন্যান্যরা। জমায়েত শেষে ব্লকে গিয়ে ডেপুটেশন দেওয়ার কথা ছিল বামেদের। এদিকে সুতারমুড়ায় জনজাতি মোর্চার জনসভায় যাওয়ার জন্য বিজেপির কার্যালয়ের সামনে কিছু সমর্থক জড়ো হয়েছিল। অভিযোগ, সেই সময় জমায়েত করা সিপিএম সমর্থকদের একাংশ বিজেপির কার্যালয় লক্ষ্য করে ইট, কাঁচের বোতল ছুঁড়তে থাকে। এরপর সরাসরি বিজেপি কার্যালয়ে হামলা চালায় তারা। এই ঘটনায় কয়েকজন বিজেপির কর্মী-সমর্থক আহত হন। এই খবর পেয়ে বিজেপির আরও সদস্য চড়িলামে জড়ো হয়। এরপর উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার খবর পেয়ে বিশালগড় মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রাহুল দাস, বিশালগড় থানার ওসি বাদল সাহা, বিশাল পুলিশবাহিনী, টিএসআর সিআরপিএফ নিয়ে চড়িলাম ছুটে যান। রক্তাক্তদের উদ্ধার করে দমকলের গাড়ি করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। এরপর আরেক দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ। সিপিএম বিধায়ক ভানুলাল সাহা-সহ কয়েকজন নেতা আশ্রয় নেন একটি এটিএম বুথে। গন্ডগোলের মধ্যে পড়ে আহত হযন মহকুমার এক কর্মরত সাংবাদিক। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে আহত হয়েছেন পুলিশ আধিকারিক রাহুল দাস-সহ কয়েকজন কনস্টেবল।
সিপিএম সমর্থক শহীদ মিয়াকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় বিশালগড় হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয় আগরতলায়। সেখানে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত দফায়-দফায় চলে সংঘর্ষ। পুলিশ প্রশাসনের সক্রিয়তায় দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। অতিরিক্ত পুলিশ টিএসআর সিআরপিএফ মোতায়ন করা হয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোটা চড়িলাম এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিজেপির চড়িলাম মণ্ডল সভাপতি রাজকুমার দেবনাথ জানান, বিজেপির সদস্য সুতারমুড়ায় জনসভায় যাওয়ার জন্য এখানে এসেছিলেন। কিন্তু সিপিএমের সমর্থকরা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অশান্তি সৃষ্টি করে বিজেপির পার্টি অফিসে হামলা চালায়। এতে বিজেপির ৯ জন সমর্থক মারাত্মকভাবে জখম হয়েছেন। আহতদের বিশ্রামগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। কয়েকজনকে আগরতলায় রেফার করা হয়েছে। তাঁর আরও অভিযোগ, পুলিশ না থাকলে বিজেপির কর্মীদের খুন করে ফেলত সিপিএমের ক্যাডাররা। সিপিএমের ক্যাডাররা বোমা ফাটিয়েছে এবং কয়েকজন ক্যাডারের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। সন্ধ্যায় বিজেপি দলের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়ে। চড়িলামের বিধায়ক তথা উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মন এই অশান্তির জন্য সিপিএমের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং স্থানীয় সিপিএমের নেতাদের দায়ী করেন। দোষীদের অবিলম্বে শাস্তির দাবি জানান তিনি।
অপরদিকে বিধায়ক ভানুলাল সাহা অভিযোগ করেন, বিজেপির সমর্থকরা হামলা করেছে। ইট, বোতল, ঢিল ছুঁড়েছে। ১২ জন সিপিএম সমর্থক মারাত্মকভাবে জখম হয়েছেন। এর মধ্যে এক সিপিএম সমর্থক শহীদ মিয়ার মৃত্যুর খবর জানিয়েছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.