রাহুল চক্রবর্তী: ‘প্রেসটিজিয়াস ফাইট’!
তাই মালদহ উত্তরে ভাগনিকে হারাতে মামার বক্তব্যকেই হাতিয়ার করেছে প্রদেশ কংগ্রেস। বরকত গনি খান চৌধুরির ছবি দেওয়া বক্তব্য তুলে ধরে মৌসম বেনজির নুরকে রাজনৈতিকভাবে আক্রমণের কৌশল নিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব।
আগামী ২৩ এপ্রিল মালদহ উত্তর ও দক্ষিণ লোকসভা কেন্দ্রের নির্বাচন। দু’টি আসনই দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেস নিজেদের হাতে রেখেছে। কিন্তু প্রশ্নটা উঠেছে এবারই। মালদহ উত্তর কংগ্রেস জিততে পারবে তো? প্রশ্নের কেন্দ্রবিন্দুতে অবশ্যই মৌসম বেনজির নুর। দু’বারের সাংসদ কিছুদিন আগে কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দিয়েছেন তৃণমূলে। এবার ঘাসফুল চিহ্নে লড়ছেন একই কেন্দ্র থেকে। মৌসমের তৃণমূলে যাওয়া কংগ্রেসের কাছে বড় ধাক্কা, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মৌসমের ক্ষেত্রে অ্যাডভানটেজ তিনটি– রাজ্যের শাসক দলের প্রার্থী, গনি পরিবারের সদস্য ও নিজস্ব রাজনৈতিক ক্যারিশমা। এই অবস্থায় মৌসমকে হারাতে তাঁরই মামাতো ভাই ইশা খান চৌধুরিকে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস। ইশা আবু হাসেম খান চৌধুরি অর্থাৎ ডালুবাবুর ছেলে। মৌসমকে নির্বাচনে হারাতে তাঁরই বড় মামা বরকত গনি খান চৌধুরির বক্তব্য নিয়ে প্রচারে নেমেছে কংগ্রেস।
[আরও পড়ুন: জানেন, কোন লোকসভা কেন্দ্রে নির্বাচনী বিধিভঙ্গের অভিযোগ সবচেয়ে বেশি?]
প্রদেশ কংগ্রেসের প্রচার বিভাগ থেকে ফ্লেক্স তৈরি করা হয়েছে। যে ফ্লেক্সে গনি খান চৌধুরিকে হাত জোড় করা অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। গনি খান চৌধুরির একটি বক্তব্যকেও তুলে ধরা হয়েছে। লেখা হয়েছে, “দলত্যাগ করা পাপ। মৃত্যুর দিন পর্যন্ত কংগ্রেসের পতাকা আমার বুকে থাকবে।” জেলা কংগ্রেস সভাপতি মোস্তাক আলম জানিয়েছেন, “গনি খান চৌধুরির ছবিকে ব্যবহার করে মৌসম রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছেন। কিন্তু গনি খান চৌধুরি কোনও দিন কংগ্রেস ছাড়েননি। তাই কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও বরকত সাহেবের বক্তব্য সম্বলিত ওই ফ্লেক্স তৈরি করা হয়েছে। যা মালদহ উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।” কংগ্রেস প্রার্থী ইশা খান চৌধুরি বলেন, “বরকত সাহেব আমৃত্যু কংগ্রেসে ছিলেন। কখনও মন্ত্রী ছিলেন। কখনও ছিলেন না। কিন্তু কোনও দিন তিনি কংগ্রেস ছেড়ে চলে যাননি। তাই বরকত সাহেবের বক্তব্যকেই আমরা তুলে ধরছি।”
যদিও তৃণমূল এসব বিষয় নিয়ে ভাবছে না। নাম ঘোষণার আগে থেকে এলাকাজুড়ে প্রচার চালাচ্ছেন তৃণমূল প্রার্থী মৌসম বেনজির নুর। প্রতিটি প্রচার কর্মসূচিতেই তাঁর বক্তব্য, “আমি মানুষের সঙ্গে আগেও ছিলাম। এখনও আছি। আর ভবিষ্যতেও থাকব। মানুষের জন্য উন্নয়ন করাটাই আমার লক্ষ্য। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে রাজ্যজুড়ে উন্নয়ন করছেন, তাতে বাংলার মানুষ তৃণমূলের পাশেই আছেন।” কোতোয়ালি ভবনের পারিবারিক দ্বন্দ্বটা এবারের ভোটে একেবারে সামনে চলে এসেছে। গনি পরিবার থেকে মৌসমের আগেও অনেকে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন। কিন্তু এবার গনি খান চৌধুরির ছবিকে সামনে রেখে মৌসম, না ইশা’কে জিততে পারেন, তার উত্তর জানা যাবে ২৩ মে।
[আরও পড়ুন: কংগ্রেসে যোগ দিলেন লক্ষ্মণ শেঠ, লড়বেন তমলুক আসন থেকে]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.