ছবি: সংগৃহীত
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্কুলের গণ্ডি পার হতে এখনও ঢের দেরি। এদিকে ধোঁয়া উড়িয়ে সিগারেট খেতে শিখে গেছে। মাঝেমধ্যে আবার নাকি বিড়িও চলে। শুধু কি তাই? কমবয়সিদের মধ্যে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ছে তামাকের নেশা। যা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। তাইতো চলতি বছরের World No Tobacco Day-র থিম তামাক ইন্ডাস্ট্রি থেকে কম বয়সের ছেলে-মেয়ে, বিশেষ করে শিশুদের বাঁচানো। বর্তমান প্রজন্মের এই তামাকের আসক্তি থেকে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা তৈরি হতে পারে। সেই সম্পর্কে সতর্ক করলেন হাওড়ার আইএলএস হাসপাতালের কনসালট্যান্ট পালমোনোলজিস্ট ডা: প্রতীক বিশ্বাস।
তাৎক্ষণিক শারীরিক সমস্যা –
ধূমপান ফুসফুস এবং শ্বাসতন্ত্রের সাংঘাতিক ক্ষতি করতে পারে। তরুণ ধূমপায়ীরা শ্বাসকষ্ট, দীর্ঘস্থায়ী কাশি এবং অতিরিক্ত শ্লেষ্মার সমস্যায় ভুগতে পারে।
যারা কৈশোর বয়স থেকে ধূমপান শুরু করে তাদের ফুসফুসের বিকাশে ব্যাঘাত ঘটে, যা ফুসফুসের কার্যকারিতা এবং ক্ষমতা হ্রাস করে।
ধূমপান রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে দেয়। এর ফলে তরুণ ধূমপায়ীরা ব্রঙ্কাইটিস এবং নিউমোনিয়ার মতো শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণের শিকার হতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক সমস্যা-
তামাক ব্যবহার হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের সঙ্গে সম্পর্কিত, যা ধমনীতে প্লাক জমার (অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস) কারণে হয়।
ধূমপান যে ক্যানসারের অন্যতম কারণ তা অনেকেরই জানা। অল্প বয়সে ধূমপান শুরু করলে শরীরে কার্সিনোজেনের প্রভাব বেড়ে যায়।
যাঁরা কৈশোরে ধূমপান শুরু করে দেন, তাঁদের মধ্যে ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (COPD) হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
আসক্তি-
নিকোটিনের নেশা চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে যেতে পারে। কারণ কিশোরদের মস্তিষ্ক আসক্তির প্রতি বেশি সংবেদনশীল। কম বয়সেই এটি একটি দীর্ঘমেয়াদি অভ্যাসে পরিণত হতে পারে যা ভাঙা কঠিন হয়ে যায়।
তরুণ ধূমপায়ীদের মধ্যে আচরণগত সমস্যাও তৈরি হয়। ধূমপানকে চাপ বা সামাজিক পরিস্থিতির জন্য একটি মোকাবিলা করার কৌশল হিসাবে ব্যবহার করে থাকে অনেকেই।
মানসিক স্বাস্থ্য-
নিকোটিন শুরুতে শান্তি আনতে পারে, কিন্তু এর প্রতি নির্ভরতা সময়ের সাথে সাথে উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতা বাড়িয়ে দিতে পারে।
নিকোটিন মস্তিষ্কের বিকাশকে প্রভাবিত করে। এর জেরে মনোযোগ, স্মৃতি ধরে রাখা এবং জ্ঞান অর্জনে বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
সামাজিক এবং আচরণগত প্রভাব-
নিকোটিনের ব্যবহার মনোযোগ, স্মৃতি এবং সামগ্রিক শিক্ষাগত পারফরম্যান্সের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
ধূমপানের সঙ্গে সম্পর্কিত স্বাস্থ্য সমস্যা শিক্ষাক্ষেত্রে অনুপস্থিতি বাড়িয়ে দেয়।
ধূমপান থেকে অন্যান্য মাদক, যেমন অ্যালকোহল, মারিজুয়ানা এবং অন্যান্য ড্রাগের প্রতি আসক্তি তৈরি হতে পারে।
কমবয়সিদের তামাক সেবনের এই আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সাহায্যের প্রয়োজন। এই সাহায্য সবচেয়ে বেশি করতে পারেন বাবা-মা বা আপনজন। আর তামাক ব্যবহারের ফলে কোনও শারীরিক সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়া প্রয়োজন। ছোট থেকেই তামাকের কুপ্রভাব সম্পর্কে শিশুদের অবহিত করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.