Advertisement
Advertisement

Breaking News

Morbid Depression

বার বার মৃত্যুচিন্তা! অবসাদের এ কোন রূপ? জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ

অবসাদ পুষে রাখা খুব খারাপ।

Expert discussed about Morbid Depression

ছবি: সংগৃহীত

Published by: Suparna Majumder
  • Posted:July 5, 2024 7:20 pm
  • Updated:July 5, 2024 7:23 pm  

অবসাদ জোরাল হলে বেঁচে থাকার ইচ্ছে ফিকে হতে থাকে। কিছুই ভালো লাগে না, যেন মৃত্যু হলেই ভালো — এমন ভাব অবহেলার নয়। মনখারাপের সঙ্গে শরীর খারাপও হয়ে যায় এই চক্করে। সর্বোপরি মুক্তির ঠিকানা রিহ্যাব। সে ব্যাপারেই আস্থা দিলেন আস্থা পেন অ্যান্ড স্লিপ ক্লিনিকের পেন ম্যানেজমেন্ট বিশেষজ্ঞ ডা. সৈকত ঘোষ। লিখলেন জিনিয়া সরকার

“মরণ রে, তুঁহু মম শ্যাম সমান…”– মৃত্যুই শান্তির আশ্রয়। মন যখন আবসাদে মেঘাচ্ছন্ন, তখন পালানোর পথ একটাই। কিছু ভালো লাগে না, মনে হয় মৃত্যুতেই যেন সব সুখ আছে। কখনও চোখে জল, কখনও চোখে ঘুম নেই, কখনও অতি প্রিয় জিনিসও অপ্রিয় হয়ে ওঠে। ভালো লাগে না কিছুই। মনখারাপ বা অবসাদ জিনিসটাই এমন। আরও তীব্র হলে, অবসাদ জমতে জমতে শেষে গিয়ে খোঁজে পালানোর পথ।

Advertisement

ডিপ্রেশন থেকে মৃত্যুর আকাঙ্ক্ষা বেড়ে ওঠার পাশাপাশি আসে আত্মহননের একটা প্রবণতা। তবে সবাই যে এই পথই অবলম্বন করেন এমনটাও নয়। জীবনকে অপ্রাসঙ্গিক মনে হওয়া থেকেই সব কিছুর প্রতি একটা বিতৃষ্ণা জন্মায়। অন্য কোনও শারীরিক সমস্যা থাকলে সেগুলোর প্রতিও একটা অবহেলার প্রবণতা প্রকাশ পেতে শুরু করে। অবসাদের এই পর্যায়কে বলা হয় মর্বিড ডিপ্রেশন (Morbid Depression)। এমন হলে মুক্তির পথ শুধু অবসাদকে বাগে আনা নয়, দরকার সর্বোপরি চিকিৎসা।

Morbid-Depression-2
ছবি: সংগৃহীত

করণীয় কী?
অবসাদ, একটি অসুখ। অবসাদ পুষে রাখা খুব খারাপ। বর্তমানে নানা উন্নত ওষুধও বাজারে এসেছে। চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে সেগুলো খেলে সমস্যা গোড়াতেই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভুল করেন অনেকেই। রোগ ফেলে রাখেন। চিকিৎসকের কাছে যান না। সেটা করবেন না।

এর সঙ্গে পরিবার-পরিজনের সহায়তাও দরকার। প্রকৃত সঙ্গ দেওয়া প্রয়োজন, তাঁর কথা শোনা দরকার। দিনে ১৫ থেকে ৩০ মিনিট রোগীর সঙ্গে সময় কাটান। কথা বলুন, তিনি যা ভালোবাসেন সেটাকে প্রাধান্য দিন। অবসাদ হলেও রোগীর কিছু না কিছু ভালো লাগা থেকে যায়, সেটা তাঁর সামনে তুলে ধরুন। ধর্ম, আধ্যাত্মিকতার প্রতি টান থাকলে তাকে ধর্মস্থানে নিয়ে যান। এতে মন অনেকটাই ঘুরে দাঁড়ায়। এগুলো করুন।

জরুরি রিহ্যাবিলিটেশন
অবসাদের ক্ষেত্রে মনরোগ বিশেষজ্ঞ যেমন জরুরি তার পাশাপাশি অবসাদজনিত সমস্যা থেকে অন্যান্য শারীরিক অস্থিরতা থাকলে, জীবনের প্রতি অনীহা দেখা গেলে তা কাটিয়ে তুলতে রিহ্যাবিলিটেশন খুবই জরুরি একটি চিকিৎসা। বিশেষত দেখা যায় এই রোগীরা সব কিছু থেকে নিজেদের গুটিয়ে নিতে চায়। এদের আবার ডানা মেলতে শেখায় রিহ্যাব।
আবার ধরুন কারও অবসাদের সঙ্গে ব্যথা, নিউরোলজিক্যাল সমস্যা, পেটের অসুখ বা নির্দিষ্ট অন্যান্য সমস্যা থাকলে সেগুলো চিহ্নিত করে চিকিৎসা করাও দরকার। যাতে তাঁর এগুলো থেকে সমস্যা আরও কঠিন না হয়।

[আরও পড়ুন: এঁচোড়ে অনীহা? বানিয়ে ফেলুন চপ, পাতুরি থেকে বিরিয়ানি, রইল রকমারি রেসিপি ]

ব্যথা প্রসঙ্গে বলতে গেলে, যে কোনও ব্যথাই যদি তা হয় হাঁটু ব্যথা, মাথা ব্যথা, কোমর ব্যথা, যা-ই হোক, এগুলোও কিন্তু পরোক্ষভাবে অবসাদকে আরও বাড়ায়। তাই অবসাদ কাটিয়ে তুলতে মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শারীরিক অস্বস্তিকেও কাটিয়ে তোলা জরুরি। এখানেই জুড়ি নেই রিহ্যাবিলিটেশন পদ্ধতির।

বর্তমানে মডার্ন রিহ্যাবে একটি অন্যতম দিক হচ্ছে লাইফস্টাইল মডিফিকেশন করা। অর্থাৎ জীবনযাপনের পরিবর্তন ঘটিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা। এখানে বলা হয়, সকালে উঠে যোগ ব্যায়াম করা, শারীরিক শ্রম বজায় রাখা, মেডিটেশন করানো, উপযুক্ত ডায়েট মেনে খাওয়া-দাওয়া করা দরকার। কারণ, দেখা যায় উপযুক্ত প্রোটিন, ভিটামিনের অভাবেও মানসিক স্বাস্থ্য খারাপ হতে শুরু করে।

এই রিহ্যাবিলিটেশন পদ্ধতিতে মনের অসুখের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য সমস্ত সমস্যা সমাধানের পথ বাতলে দেওয়া হয়। একজনকে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ করতে তাই রিহ্যাবের গুরুত্ব অপরিসীম। রিহ্যাবের মাধ্যমে সুস্থ করতে ৩-৬ মাস সময় লাগে।

Morbid-Depression-3
ছবি: সংগৃহীত

এমন অবসাদ বয়ে আনে আরও কিছু
দীর্ঘ একাকীত্ব থেকে, মন খুলে কথা বলতে না পারলে ধীরে ধীরে মরবিড ডিপ্রেশন শুরু হয়। এই অবস্থায় থাকতে থাকতে দেখা যায় রোগীর অন্যান্য অসুখগুলোও বাড়তে থাকে। যে কোনও ব্যথা, অস্বস্তি, হার্টে অসুখ যাই থাক না এগুলির প্রতিও অবহেলা শুরু করেন রোগী। তখন অবসাদের সঙ্গে শারীরিক নানা অস্বস্তিও প্রকাশ পেতে থাকে। রোগী আরও জর্জরিত হতে থাকে। অসুখ থেকে মুক্তি চাইতে গিয়ে আরও অসুখের জাঁতাকলে পড়েন।

মৃত্যু আকাঙ্ক্ষার পাশাপাশি আর কী লক্ষণ থাকে
সারাক্ষণ মনখারাপ, ভালো কিছু ঘটলেও আনন্দ নেই, কথায় কথায় মরে গেলেই হবে ভালো, এই অভিব্যক্তির প্রকাশ দেখলে সাবধান হতে হবে। রোগীর কাছে জীবন অর্থহীন হয়ে উঠতে শুরু করে।

কাদের হয়
দেখা যায় মহিলাদের এই ধরনের অবসাদ বেশি হয়। তাই একটা বয়সের পর মনে কোনও চাপা কষ্ট না রাখাই ভালো। পরিবারে কারও থাকলে অন্যদেরও এমন হওয়ার প্রবণতা বেশি।

সঠিক সময়ে রোগ ধরা দরকার
মনরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ, কাউন্সেলিং ও রিহ্যাব — সবই মনকষ্ট লাঘবের অন্যতম উপায়। তবে কার্যকর তখনই হবে যখন সময়ে চিকিৎসা শুরু হয়। তাই মনখারাপ হতেই পারে, সর্বপ্রথম মন খুলে তা শেয়ার করুন কাছের মানুষের সঙ্গে আর দ্রুত চিকিৎসা শুরু করুন। রিহ্যাব শুনে পিছিয়ে আসবেন না। এটাই হতে পারে মন হালকা করার সঠিক ঠিকানা, সঙ্গে শরীরও থাকে ঝরঝরে।

[আরও পড়ুন: ডিমের কুসুমেই ফিরবে জেল্লা, বাড়িতেই ট্রাই করুন এই ৪ ফেসপ্যাক ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement