অরিঞ্জয় বোস: মোহনবাগানের মেয়ে…। মুখে বলা আর কাজে করে দেখানো তো এক বিষয় নয়। এর জন্য চাই অদম্য ভালোবাসা। মাঠে যখন স্বামী শুভাশিস বসু দলকে ফাইনালে পৌঁছনোর জন্য নিজের সেরাটা উজাড় করে দিচ্ছেন, তখন প্রকৃত সবুজ-মেরুন ভক্ত হিসেবেই গ্যালারিতে নিজেকে মেলে ধরলেন তাঁর স্ত্রী কস্তুরী ছেত্রী।
বিরাট কোহলির সঙ্গে যেন পাল্লা দিচ্ছে কলকাতার গরম। অতীত রেকর্ড ভেঙে রোজ তৈরি করছে নয়া নজির। চড়চড় করে পারদ চড়ছে। আর ভ্যাপসা গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত শহরবাসীর। কিন্তু সেই গরমকে উপেক্ষা করেই আইএসএলের সেমিফাইনালের দ্বিতীয় লেগে মোহনবাগানের জন্য গলা ফাটাতে যুবভারতীতে পৌঁছে গিয়েছিলেন সমর্থকরা। ব্যতিক্রমী নন কস্তুরীও। স্টেডিয়ামের ভিভিআইপি গ্যালারিতে বসেই প্রতিটি ম্যাচ উপভোগ করেন। বিশ্বাস করেন, ওই গ্যালারিতে বসলেই ভালো ফল করে মোহনবাগান। সঙ্গী হিসেবে পেয়ে যায় দলের অন্য ফুটবলারদের স্ত্রী, বান্ধবীদেরও।
অমুক জায়গায় অমুক ভঙ্গিতে বসলে দল ভালো খেলে। হাত কিংবা পায়ের পজিশন অমুক রকম থাকলে প্রিয় দল জিতে যায়। এমন কুসংস্কারের শিকার বহু সমর্থক। শুধু সমর্থক বললেও তো ভুল হয়, শচীন তেণ্ডুলকর থেকে মহেন্দ্র সিং ধোনি পর্যন্ত এমন কুসংস্কারে ভর করে ২২ গজে নামতে ভালোবাসতেন। কস্তুরীও মানেন। তাই স্টেডিয়ামের এসি ঘরে বসার সুযোগ থাকলেও ভিভিআইপি গ্যালারি থেকে এক পা-ও নড়লেন না তিনি। বীভৎস গরমে যখন এক এক করে অন্যদের স্ত্রী, বান্ধবীরা ওই গ্যালারি ছেড়ে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে ঠাঁই নিচ্ছেন, তখন মোহনবাগান পতাকা হাতে সেই গ্যালারিতে বসেই মনবীর, পেত্রাতোসদের খেলা দেখলেন কস্তুরী। বাকিটা তো ইতিহাস। আরও একবার আইএসএল ফাইনালে মোহনবাগান।
কোনও সমর্থকের কাছে তার দলের জয়টা ঠিক কতখানি তৃপ্তির, সে অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। আবেগঘন কস্তুরীও তাই দলকে জেতাতে নিজের মনের কথাই শুনেছেন। তাই বলতেই হয়, মাঠে যদি শুভাশিস হন প্রকৃত অধিনায়ক, তাহলে নিঃসন্দেহে স্ত্রী কস্তুরী আক্ষরিক অর্থেই হয়ে উঠলেন মোহনবাগানের মেয়ে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.