'ভারত গৌরব' সম্মানে ভূষিত সৌরভ। মঞ্চে তখন চাঁদের হাট।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইস্টবেঙ্গলের জার্সির রংয়ের মধ্যে একটা ব্যাপার আছে। জার্সির লাল-হলুদ রংটাই ইস্টবেঙ্গলের আসল শক্তির জায়গা। রংটাই দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ইস্টবেঙ্গলের ‘ভারত গৌরব’ সম্মানে ভূষিত হয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় যখন কথাগুলো বলছিলেন, তখন ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে উপস্থিত দর্শকদের করতালিতে কান পাতা দায়।
লাল-হলুদ রং লড়াইয়ের প্রতীক। প্রতীক অদম্য জেদের। লাল-হলুদের প্রতিষ্ঠা দিবসে চাঁদের হাট বসেছিল বৃহস্পতিবার। দেশের তারকা পেসার মহম্মদ শামি, সানিয়া মির্জার বাবা ইমরান মির্জা, টলিউডের নায়ক প্রসেনজিৎ, সাংবাদিক রাজদীপ সারদেশাই, প্রাক্তন ফুটবলার এবং বর্তমান ফুটবল দলের উপস্থিতিতে রীতিমতো জমজমাট ছিল অনুষ্ঠান।
[আরও পড়ুন: ‘ইস্টবেঙ্গলে খেলবে?’, লাল-হলুদের প্রতিষ্ঠা দিবসে দেশের তারকা পেসার শামিকে প্রস্তাব]
চিরকালের টিমম্যান সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর হাত ধরেই নতুন ভারতের সূচনা। সেই সৌরভ পুরস্কার নেওয়ার সময়ে মঞ্চে ডেকে নেন প্রাক্তন ফুটবলারদের। তাঁর সঙ্গে মঞ্চ শেয়ার করেন প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যাম থাপা, মহম্মদ শামি, রঞ্জিৎ মুখোপাধ্যায়, বিকাশ পাঁজি-সহ আরও অনেকে। সৌরভ বলেন, ”আমি সবাইকে মঞ্চে আসতে বললাম কারণ জীবনে সাফল্য পেতে হলে দলের সতীর্থদের দরকার। সবার অবদান না থাকলে সাফল্য পাওয়া যায় না। ছোটবেলায় বাবার সঙ্গে যখন ময়দানে আসতাম তখন এঁদের সবাইকে দেখতাম সামনে থেকে। মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য, শ্যাম থাপা, কৃশানু দে, এরা সবাই একেকজন প্রতিষ্ঠান।”
সমর্থকরাই ক্লাবের হৃদস্পন্দন। এদিন ইস্টবেঙ্গলের প্রতিষ্ঠা দিবসে সেরা সমর্থক মুকুল গঙ্গোপাধ্যায়কে সম্মানিত করা হয়। নবতিপর মুকুলবাবুকে সুদূর সুইজারল্যান্ড থেকে এনেছেন তাঁর কন্যা। আমেদ খানের সময় থেকে তিনি লাল-হলুদের খেলা দেখছেন। সেরা সমর্থকের পুরস্কার পেয়েছেন গণেশ দাস। ট্রাইসাইকেল করে প্রিয় দলের খেলা দেখতে যান। যেখানে ট্রাইসাইকেল ঢুকতে পারে না, সেখানে হামাগুড়ি দিয়ে খেলা দেখতে যান তিনি। তাঁকে ২৫ হাজার টাকা পুরস্কারমূল্য দেওয়া হয় ক্লাবের তরফ থেকে। এই সমর্থনের কথাই সৌরভ বলে গেলেন। বলছিলেন, ”আমি ক্রিকেটের থেকে বেশি ফুটবল দেখি। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের খেলা দেখি স্ট্যান্ডে বসে। যখন সেন্টার সার্কেল থেকে ম্যাঞ্চেস্টারের গোলমুখে প্রতিপক্ষ বল নিয়ে যায়, তখন আশি হাজার সমর্থক সমস্বরে বলে ওঠে ব্রিং ইট ফরোয়ার্ড। ফলে সমর্থকদেরও একটা দায়িত্ব রয়েছে। প্রিয় ক্লাব জিতলে খুশি হলে চলবে না, দেখতে হবে স্ট্যান্ডার্ড যেন না কমে।”
সৌরভ আরও বলেন, ”আমি ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের খেলা দেখেছি। তবে আমি কলকাতার ফুটবলকে কেবল ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখি না। কলকাতার ফুটবল একটা প্রতিষ্ঠান। মাঠের বাইরে তিন প্রধানের একটা দায়িত্ব রয়েছে। তাদের দায়িত্বশীল হতে হবে।” সৌরভ ক্লাবের শীর্ষকর্তার সঙ্গে রসিকতা করে বলেন, ”নীতুদাকে (দেবব্রত সরকার) বলব, প্লিজ স্টে অ্যাওয়ে ফ্রম কোচ। লেট দেম প্লে। নীতুদা ইস্টবেঙ্গল ছাড়া কিছু বোঝেন না। আগেও আমাকে পুরস্কার দেওয়ার জন্য ডেকেছেন। আমি আসতে পারব না শুনে বলেছেন, তুমি বিট্রে করছ।” সৌরভের কথায় হাসির রোল উঠেছে তখন।
লাল-হলুদের প্রতিষ্ঠা দিবসে আশার কথা শুনিয়ে গেলেন দেশের প্রাক্তন অধিনায়ক। বললেন, ”কার্লোস আলকারাজ যদি নোভাক জকোভিচকে হারাতে পারে, তাহলে ভারতের ফুটবলও একদিন ভালো জায়গায় পৌঁছবে। আজকের দুনিয়ায় সাধারণ হয়ে থেকে লাভ নেই। বেস্ট হতে হবে। সেরা হতে হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.