মোহনবাগানের ভরসা কাউকো-পেত্রাতোস। শংকরলালের হাতে পাঞ্জাবের রিমোট কন্ট্রোল। ফাইল চিত্র
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অসুস্থ হাবাস (Antonio Habas), যে অসুস্থতা শুরু হয়েছিল চেন্নাইয়িন ম্যাচের আগের দিন থেকে। পাঞ্জাব এফসি ম্যাচের চব্বিশ ঘণ্টা আগেও সেই অসুস্থতা থেকে পুরোপুরি সুস্থ হতে পারলেন না মোহনবাগান (Mohun Bagan) কোচ। ফলস্বরূপ শুক্রবার মোহনবাগান অনুশীলনে তো এলেনই না তিনি। এমনকী, পূর্বঘোষণা অনুযায়ী সাংবাদিক সম্মেলনেও অনুপস্থিত। পরিস্থিতি এমনই, শনিবার সকালে হাবাস যদি সুস্থ বোধ করেন তাহলে তখনই তাঁকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে দিল্লি।
এদিকে কার্ড সমস্যায় নেই পাঞ্জাবের হেড কোচ স্টাইকোস ভার্গেটিস। শনিবার মোহনবাগানের বিরুদ্ধে পাঞ্জাব এফসি-র দায়িত্ব পালন করবেন সহকারী কোচ শংকরলাল চক্রবর্তী। আইএসএলে অতীতে কোনও বাঙালিই এভাবে হেড কোচের দায়িত্ব পালন করেননি। সেই নিরিখে বিচার করলে প্রথম বাঙালি হিসেবে কোচিংয়ে প্রো লাইসেন্স পাওয়া শংকরলালই নজির গড়তে চলেছেন। তবে সেসব নিয়ে ভাবছেন না শংকরলাল। তাঁর বক্তব্য, ”ম্যাচের দায়িত্ব পাওয়া প্রথম বাঙালির তকমা নিয়ে ভাবছি না। এই ম্যাচে আমাদের হেড কোচ থাকবেন না। তাই আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেটা ঠিকমতো পালন করাই এখন একমাত্র ভাবনা।” একসময়ে সবুজ-মেরুন শিবির থেকেই ভারতীয় ফুটবলে কোচ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলেন তিনি। নিজের পুরনো ক্লাবের বিরুদ্ধে নজিরের ম্যাচে নামা প্রসঙ্গে নিরুত্তাপ শংকরলাল। তিনি বলছেন, ”এটা একেবারেই কাকতালীয় বিষয়। আমি একসময়ে মোহনবাগানের কোচ ছিলাম। কিন্তু এখন আমি পাঞ্জাবের দায়িত্বে। তাই শুধু নিজের দলের কথাই ভাবছি।”
যদি হাবাস দিল্লি ম্যাচের ডাগ আউটে না থাকেন তাহলে কিন্তু ফের চাপে পড়ে যাবেন দিমিত্রি পোত্রাতোসরা। আগের ম্যাচেই দেখা গিয়েছে, অল্পের জন্য ঘরের মাঠে চেন্নাইয়িন এফসির কাছে হারতে হয়েছে জনি কাউকোদের। ম্যাচটিতে একেবারে শেষ মুহূর্তে ২-২ গোলে মোহনবাগান সমতায় ফিরলেও, শেষ বাঁশি বাজার আগে অতি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে গোল খেয়ে ২-৩ গোলে ম্যাচ হেরেছেন শুভাশিস বসুরা। সেই ম্যাচে ডাগ আউটে ছিলেন না হাবাস। মোহনবাগান কোচ থাকলে এই ম্যাচ থেকে অন্তত খালি হাতে ফিরতে হত না কামিংসদের। যদিও চেন্নাইয়িন ম্যাচ এখন আর মাথায় রাখতে চাইছে না সবুজ-মেরুন ব্রিগেড।
সাংবাদিক সম্মেলনে আসা হাবাসের সহকারী কোচ ম্যানুয়েল পেরেজ সে কথাই জানিয়েছেন, “চেন্নাইয়িন ম্যাচ এখন আমাদের কাছে অতীত। ওই ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে পঞ্জাব ম্যাচ থেকে তিন পয়েন্ট তুলে নিতে হবে।”
অবশ্য দিল্লি যাওয়ার আগে সহকারী কোচ ম্যানুয়াল পেরেজের সঙ্গে বৈঠকে গেমপ্ল্যান বুঝিয়ে দিয়েছেন মোহনবাগান কোচ। একান্তই তিনি যেতে না পারলে ডাগ আউটে থেকে হাবাসের পরিকল্পনামতোই দল পরিচালনা করবেন ম্যানুয়েল।
ম্যানুয়েল বলেন, “কোচের অভাব পূরণ করা সম্ভব নয়। কিন্তু সবাই পেশাদার। এমন পরিস্থিতিতে কোচকে ছাড়াই খেলতে হলে ঘাবড়ে যাব না। কোচের পরামর্শ সবার মাথায় থাকবে।” দলের জন্য ভালো খবর জনি কাউকো ফিট হয়ে ওঠা। কাউকো প্রসঙ্গে ম্যানুয়েল আরও বলেন, “জনি খেললে আমাদের মাঝমাঠের শক্তি বাড়বে। আমাদের সামনে এখন তিনটে ম্যাচই তিনটে ফাইনালের সমান। তবে প্রতিটা ম্যাচ ধরে ধরে এগোব। আপাতত সামনে পঞ্জাব ম্যাচ জেতাটাই মূল লক্ষ্য।”
শুক্রবার দলের সঙ্গে অনুশীলন করেননি সাহাল আব্দুল সামাদ। তিনিও নেই এই ম্যাচে। অনুশীলনে আসেননি কিয়ান নাসিরিও। তিনিও দলের সঙ্গে দিল্লি গেলেন না। তার উপর দিল্লির প্রচণ্ড গরমে সন্ধ্যা ৫টায় খেলতে হবে শুভাশিসদের। যদিও দিল্লির গরমের সঙ্গে মানিয়ে নিতেই গত কয়েকদিন সকাল বেলা অনুশীলন করেছেন মোহনবাগান ফুটবলাররা। পাঞ্জাব ম্যাচটি আবার দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে খেলা হবে।
দিল্লির গরম সম্পর্কে বলতে গিয়ে মোহনবাগান অধিনায়ক শুভাশিস বসু বলেন, “এখন গরম বাড়ছে। এমন পরিস্থিতির সঙ্গে আমাদের মানিয়ে নিতে হবে। এই কারণেই আমরা সকালবেলা অনুশীলন করেছি। গরম মাথায় রেখেই পুরো পরিকল্পনা করা হয়েছে।” আপাতত লিগ শিল্ড জিততে হলে মোহনবাগানের বাকি তিনটে ম্যাচই জিততে হবে। এই প্রসঙ্গে শুভাশিস বলেন, “লিগ শিল্ড জেতার জন্য তিনটে ম্যাচই জিততে হবে। সেই মানসিকতা ফুটবলারদের মধ্যে রয়েছে। পরবর্তী ম্যাচে আরও কম্প্যাক্ট ফুটবল খেলব।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.